বাণিজ্য

‘বাজেটে স্বাস্থ্য বীমায় গুরুত্ব দেয়া হোক’

এস এম নুরুজ্জামান। জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশে ইসলামিক ইন্স্যুরেন্স শিল্প নিয়ে যারা খুব দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করে আসছেন এবং এই শিল্পকে একটি উন্নয়নশীল অবস্থানে অধিষ্ঠিত করেছেন, এস এম নুরুজ্জামান তাদের মধ্যে অন্যতম। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এই শিল্পে নিয়োজিত আছেন এবং দৃঢ়তার সঙ্গে তার কর্মদক্ষতার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছেন। মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সে যোগদানের মাধ্যমে তিনি বীমা শিল্পে ক্যারিয়ার শুরু করেন। করোনা পরিস্থিতিতে অন্যান্য খাতের মতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বীমা খাতও। করোনাকালীন সময়ে কীভাবে ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা যায় বা এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কী করণীয় তা নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন সাননিউজের সাথে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক রাসেল মাহমুদ

সাননিউজ : করোনা শুরুর পর থেকে অন্যান্য খাতের মতো বীমা খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশে ফের লকডাউন শুরু হচ্ছে। ক্ষতিটা কীভাবে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব?

এস এম নুরুজ্জামান: করোনা শুরুর পর অন্যান্য খাতের সঙ্গে বীমা খাতও বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত বছরে লকডাউনের পর আমরা ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। কিছুটা রিকভারি করা গেলেও নতুন করে লকডাউন ঘোষণায় আমরা বেশ চিন্তিত। এই লকডাউনটা কতোদিন চলবে তাও তো বলা যাচ্ছে না। অবশ্য আমার কোম্পানির জন্য বিকল্প কিছু ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে।

সাননিউজ: বিকল্প ব্যবস্থাটা কী:

এস এম নুরুজ্জামান: পরিস্থিতির কারণে যেহেতু সবকিছু ফিজিক্যালি করা সম্ভব নয়; এ জন্য আমরা অনলাইনে কাজ এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি। অর্থাৎ ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের গ্রাহকরা অনলাইনে বীমার প্রিমিয়াম জমা দিতে পারবে। অনলাইনে পলিসি করা যাবে। টাকা জমার রশিদও অনলাইনে পাবে। এ জন্য অফিসে আসতে হবে না। আমাদের কর্মীরা অনলাইনে সকল সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।

সাননিউজ: অনলাইনে সেবার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক সময়ের মতো রেসপন্স পাওয়া সম্ভব কিনা?

এস এম নুরুজ্জামান: স্বাভাবিক সময়ের মতো রেসপন্স অবশ্য পাওয়া যাবে না। ইন্স্যুরেন্স মূলত স্পোর্টস পলিসি। ইন্স্যুরেন্স তো রিকোয়েস্ট করে করাতে হয়। ব্যাংকে একাউন্ট করতে হলে গ্রাহক ব্যাংকের কাছে যায়। ইন্স্যুরেন্সের ক্ষেত্রে বিষয়টি বিপরিত। ইন্স্যরেন্স কোম্পানিকে যেতে হয় গ্রাহকের কাছে। এখানে যারা মার্কেটিংয়ে আছেন তারা গ্রাহকের কাছে গিয়ে মোটিভেশন করে পলিসি করান। বর্তমান পরিস্থিতিতে তো অনেক গ্রাহকের কাছে যাওয়াই সম্ভব হবে না। অফিস বন্ধ থাকবে। অনেকে বাসায় ঢুকতে দেবে না। এতে শুধু কোম্পানিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা নয়; সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে ফিন্যান্সশিয়াল অ্যাসোসিয়েট বা আর্থিক সহযোগীরা। যারা মূলত কমিশনে কাজ করেন।

সাননিউজ: এই ক্ষতি পূরণে কী ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।

এস এম নুরুজ্জামান: যেহেতু কমিশন এজেন্টরা লকডাউনে কাজ করতে পারবেন না; তাই তাদের আয় বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ বীমা খাতের আইনটাই এমন। কোম্পানি থেকে এজেন্টদের আর্থিক সুবিধা দেয়া হয় না। তারা কমিশনের ভিত্তিতে কাজ করেন। তবে যারা সিনিয়র তারা কিছুটা সুবিধা পাবেন। তাদের কিছু নবায়ন কালেকশন হবে। তবে নবায়ন কালেকশন হওয়াও কঠিন। কারণ এ সময়ে অনেকেই নবায়নের টাকা দিতে চাইবে না। অনেকে চিন্তা করবে আমরা জব চলে যাচ্ছে কিনা, ব্যবসা বন্ধ থাকবে কিনা। এ জন্য তারা টাকা হাত ছাড়া করবে না। তবে এই ক্ষতিটা কিছুটা পুরণ করা সম্ভব প্রণোদনার মাধ্যমে। সরকার করোনা শুরুর পর বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা দিয়েছে। বীমা খাতে প্রণোদনা দেয়া হয় নাই।

প্রণোদনা দেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এবং বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের (বিআইএ) যৌথ প্রচেষ্টায় কমিশন এজেন্টদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। স্বল্প সুদে ঋণ দিয়েও সরকার কমিশন এজেন্টদের পাশে থাকতে পারে। এটাওতো এক ধরনের প্রণোদনা।

সাননিউজ: কোম্পানি কমিশন এজেন্টদের জন্য কী করতে পারে।

এস এম নুরুজ্জামান: আমরা চিন্তা করছি যারা এক্টিভ তাদের জন্য কিছু অগ্রিম টাকা দিতে। পরে অবস্থা স্বাভাবিক হলে এডজাস্ট করে দেয়া যেতে পারে। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি।

সাননিউজ: আসন্ন বাজেটে বীমা খাতের জন্য কী চান?

এস এম নুরুজ্জামান: কমিশনে আমাদের ৫ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হয়। কমপক্ষে আসন্ন বাজেটে এই ট্যাক্স রহিত করা হোক। ট্যাক্সটা রহিত করা হলেও তা প্রণোদনার অংশ হবে। স্বাস্থ্য বীমাটা বেশ দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। এটা শক্তিশালী করা দরকার। তাই বাজেটে স্বাস্থ্য বীমা খাতে একটু বেশি গুরুত্ব দেয়া দরকার বলে আমি মনে করি।

এছাড়া সরকার সম্প্রতি দুইটা স্কিম চালু করেছে। একটা বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা আর একটা বিদেশে গেলে বাধ্যতামূলক বীমা। এ দুটো জীবন বীমাকে দেয়া হয়েছে। শুধু জীবন বীমাকে না দিয়ে সকল বেসরকারি বীমা কোম্পানিকে আনুপাতিক হারে দেয়া দরকার। তাহলে বেসরকারি কোম্পানিগুলোর হাতে যাবে। আর বেসরকারি কোম্পানিগুলো যে ইন্স্যুরেন্স বিদেশে করে তা প্রয়োজনে জীবন বীমার সাথে দেয়া যেতে পারে। তাহলে আমরা বিদেশমুখি হলাম না আবার বিদেশ গেলে আমি বীমাটা করাতে পারলাম। বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমাটা আমি করাতে পারলাম। এতে আমার কোম্পানির ব্র্যান্ডিং হলো। আবার এই বাধ্যতামূলক বীমাটা করতে গিয়ে আমি অন্য একটা পলিসি করতে পারবো।

সাননিউজ: আমাদের সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

এস এম নুরুজ্জামান: সাননিউজকেও ধন্যবাদ।

সাননিউজ/আরএম/বিএস

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সংহতি জানালো মুক্তিজোট

গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে সোমবার (৭ এপ্রিল) বিশ্বব্যাপী হরতাল পালনের আহ্বান জ...

কুমিল্লায় গোমতী নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন: ৬ ট্রাক জব্দ, ১ জনের জেল

কুমিল্লার গোমতী নদীর চরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে ০৬...

সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল নেতাসহ আহত চার

বগুড়ার রেলওয়ে এলাকায় ছাত্রদল নেতার ওপর সন্ত্রাসী হ...

ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে লক্ষ্মীপুরে হরতাল অবরোধ

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান ধ্বংসযজ্ঞ...

ইসরায়েল নিশ্চিহ্নে হামাস ইরানের কাছে ৫০০ মিলিয়ন ডলার চেয়েছিল!

ইরান ও হামাস নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন ইসরায়েলে...

ঈদে কে কোন আসনে সক্রিয় ছিলেন এনসিপি নেতারা

পবিত্র ঈদুল ফিতরে অন্তত ৪০টি নির্বাচনী আসনে জনসংযো...

খুলনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

‘জন্ম হোক সুরক্ষিত, ভবিষ্যৎ হোক আলোকিত&rsquo...

ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে লক্ষ্মীপুরে হরতাল অবরোধ

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান ধ্বংসযজ্ঞ...

গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা; ওসি-এসআইসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সুনির্দিষ্ট কোন মামলা ছাড়াই এক গৃহবধূকে (২৫) আটক করে ধর্ষণচেষ্টা ও চাঁদাবাজির...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা