পদ্মাসেতুকে কেন্দ্র করে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলা জুড়ে চলছে রীতিমতো এক মহাযজ্ঞ। বড়বড় প্রকল্প হতে যাচ্ছে পদ্মা সেতুকে ঘিরে। দুইপাড়ের সড়ক করা হচ্ছে আরও প্রশস্ত। গড়ে উঠছে একের পর এক শিল্প কারখানা। কর্মসংস্থান হবে লাখো মানুষের। পণ্য পরিবহণে আসবে আমূল পরিবর্তন। সব মিলিয়ে দেশের অর্থনীতির নতুন গতিপথ হতে যাচ্ছে পদ্মা সেতু।
এরই মধ্যে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে মোংলা সমুদ্র বন্দরকে। পায়রা সমুদ্র বন্দরের আধুনিকায়নে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে চীন। পদ্মা সেতুর ফলে উন্নত হবে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্দর থেক পণ্য স্বল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে যাবে রাজধানীসহ দেশের বিভন্ন স্থানে। দক্ষিণাঞ্চল থেকে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে দূরত্ব কমে আসবে গড়ে একশ কিলোমিটার।
সমুদ্র বন্দরের আধুনিকায়ন, ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা মহাসড়ককে এক্সপ্রেসওয়েতে উন্নীতিকরণ, মুন্সীগঞ্জে ক্রীড়া কমপ্লেক্স, দক্ষিণাঞ্চলে নতুন নতুন শিল্প কারখানা স্থাপন এর সব কিছুই হতে যাচ্ছে পদ্মা সেতুকে ঘিরে।
পদ্মসেতুর কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্রুত উন্নত হওয়ায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর ব্যবহার আগ্রহী হয়ে উঠছে ভারত, নেপাল ও ভুটান। আরও গতিশীল হয়ে উঠবে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর। এর ফলে অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় হবে বাংলাদেশের। সব মিলিয়ে দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের কেন্দ্রবিন্দু হতে যাচ্ছে পদ্মা সেতু।
মুন্সীগঞ্জের হরেগঙ্গা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান খন্দকার সাদেকুর রহমান সান নিউজকে বলেন, দেশের বৃহত্তম পদ্মা সেতু চালু হলে পাল্টে যাবে দক্ষিণাঞ্চলের ভবিষ্যত। কমবে মানুষ ও পণ্য পরিবহনের সময় ও অর্থ। গতি আসবে অর্থনীতিতে। বিশ্বব্যাংকের এ-বিষয়ক এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, কমপক্ষে তিন কোটি মানুষ সরাসরি এ সেতুর মাধ্যমে উপকৃত হবে। শুধু দক্ষিণাঞ্চল নয়, স্বপ্নের পদ্মা সেতু বদলে দেবে পুরো বাংলাদেশের অর্থনীতির চিত্র। সেতু চালু হলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে দুই শতাংশের বেশি।
খন্দকার সাদেকুর রহমান বলেন, চট্টগ্রামের পর দেশের দক্ষিণাঞ্চল হবে আরও একটি শিল্প এলাকা। গতি আসবে দেশের অর্থনীতিতে। পাল্টে যাবে দেশের অর্থনীতির চিত্র। শুধু তাই নয়, পদ্মা সেতু দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার যোগাযোগ, বাণিজ্য, পর্যটনসহ অনেক ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মাওয়া-জাজিরায় ধীরে ধীরে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে গৌরবের পদ্মা সেতু। জানান দিচ্ছে বাংলাদেশের স্বকীয়তা, তুলে ধরছে স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও উন্নয়ন অবকাঠামোয় বাংলাদেশের সক্ষমতা। এরই মধ্যে দৃশ্য মান হয়েছে সেতুর তিন কিলোমিটার।