নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস মহামারিতে নাকাল দেশ। সংক্রমণ কমাতে সরকার এর মধ্যে লকডাউন ঘোষণা করছে। পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ হলেও করোনার চোখ রাঙানিতে থামছে না তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন-বিজিএমইএ নির্বাচন। আগামীকাল রোববার (৪ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই নির্বাচন।
বিজিএমই সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল সকাল ৯টায় রাজধানীর হোটেল রেডিসনে নির্বাচন শুরু হবে। ভোটগ্রহণ করা হবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
এদিকে, গত কয়েকদিনে করোনার ব্যাপক বিস্তারে ভোটারদের মধ্যে সংক্রমণের আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে। একাধিক ভোটার জানিয়েছেন, তারা করোনার বর্তমান অবস্থা নিয়ে ভয়ে রয়েছেন।
বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে হান্নান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম শামসুদ্দিন মিয়ার নেতৃত্বাধীন 'ফোরাম' ও বিজিএমইএর সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন 'সম্মিলিত পরিষদ' আলাদা প্যানেলে নির্বাচন করছে। এতে মোট ৩৫টি পরিচালক পদের জন্য মোট ৭০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বর্তমানে সংগঠনটির সাধারণ সদস্যের সংখ্যা ৪ হাজার ৩৬৮ জন।
চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় ঢাকা অঞ্চলে ১ হাজার ৮৫৩ ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৪৬১ জন ভোটার রয়েছেন। তবে প্রায় প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড বাড়তে থাকায় ভোটারদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। অনেক ভোটারই মনে করেন, করোনা সংক্রমণ আরো বেড়ে গেলে নির্বাচন আয়োজন করা কঠিন হবে। নির্বাচন হলেও ভোটার উপস্থিতি অনেকাংশেই কমে যাবে বলে তারা মনে করেন।
সম্মিলিত পরিষদ ফোরামের প্যানেল লিডার এ বি এম সামসুদ্দিন বলেন, দেশে করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। ইউরোপের অধিকাংশ দেশে লকডাউন চলছে। এপ্রিল মাসেও অনেক দেশ স্বাভাবিক হবে না। অন্যদিকে সামনে দুটি ঈদ। তখন শ্রমিকের বেতন-ভাতা দেয়ার বিষয় আছে। এখন নির্বাচন না হলে বর্তমান পর্ষদ মালিকদের স্বার্থে সরকারের কাছে কোনো প্রস্তাব দেয়ার প্রয়োজন হলে সেটিও করতে পারত। কিন্তু নির্বাচনের কারণে গত দুই মাস বিজিএমইএর পর্ষদ কোনো কাজ করতে পারছে না। যেহেতু একপক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে অনড়, সে কারণে ভোট হচ্ছে।
তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক হতে ভোটে লড়বেন নির্বাচনকেন্দ্রিক দুই জোট সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরামের ৭০ প্রার্থী। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মিলে সংগঠনের পরিচালক পদসংখ্যা ৩৫। ফলে প্রতিটি পদের জন্য লড়বেন দুজন। আর নির্বাচিত পরিচালকদের মধ্য থেকে একজন সভাপতি ও ৭ জন সহসভাপতি হবেন। সম্মিলিত পরিষদ ও স্বাধীনতা পরিষদ জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেয়ায় লড়াইয়ে থাকছে মূলত দুই দল বা জোট।
ঢাকার ২৭ পরিচালক পদের জন্য সম্মিলিত পরিষদের প্রার্থীরা হলেন ফারুক হাসান, শহিদুল হক, আবদুল্লাহ হিল রাকিব, শহীদউল্লাহ আজিম, নীরা হোসনে আরা, মহিউদ্দিন রুবেল, জাহাঙ্গীর আলম, খন্দকার রফিকুল ইসলাম, শিরিন সালাম, তানভীর আহমেদ, ইন্তেখাবুল হামিদ, কফিল উদ্দিন আহমেদ, ইমরানূর রহমান, আশিকুর রহমান, মিরান আলী, খসরু চৌধুরী, মশিউল আজম, নাছির উদ্দিন, এস এম মান্নান, শোভন ইসলাম, মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, হারুন অর রশীদ, আরশাদ জামাল, আসিফ আশরাফ, সাজ্জাদুর রহমান মৃধা ও রাজীভ চৌধুরী।
অন্যদিকে ঢাকায় ফোরামের প্রার্থীরা হলেন রুবানা হক, এ বি এম সামসুদ্দিন, আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, শিহাবুদৌজা চৌধুরী, এনামুল হক খান, ভিদিয়া অমৃত খান, কামাল উদ্দিন, মাশিদ রুম্মান আবদুল্লাহ, এম এ রহিম, শাহ রিয়াদ চৌধুরী, মিজানুর রহমান, খান মনিরুল আলম, এ এম মাহমুদুর রহমান, নাফিস উদ দৌলা, আসিফ ইব্রাহিম, মজুমদার আরিফুর রহমান, তাহসিন উদ্দিন খান, নাভিদুল হক, রশীদ আহমেদ হোসাইনী, ইকবাল হামিদ কোরাইশী, মাহমুদ হাসান খান, রেজওয়ান সেলিম, ফয়সাল সামাদ, রানা লায়লা হাফিজ, মেজবাহ উদ্দিন আলী ও নজরুল ইসলাম।
চট্টগ্রামে নয়টি পরিচালক পদের জন্য সম্মিলিত পরিষদের প্রার্থীরা হলেন এ এম শফিউল করিম, এম আহসানুল হক, মো. হাসান, রকিবুল আলম চৌধুরী, তানভীর হাবিব, মোহাম্মদ মেরাজ-ই-মোস্তফা, অঞ্জন শেখর দাশ, আবসার হোসেন ও সৈয়দ নজরুল ইসলাম। ফোরামের প্রার্থীরা হলেন মোহাম্মদ আবদুস সালাম, এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, এনামুল আজিজ চৌধুরী, শরীফ উল্লাহ, মির্জা মো. আকবর আলী চৌধুরী, মোহাম্মদ দিদারুল আলম, রিয়াজ ওয়েজ ও খন্দকার বেলায়েত হোসেন।
সাননিউজ/আরএম/এসএম