নিজস্ব প্রতিবেদক: সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজারের যে বেহাল অবস্থা দেখা যাচ্ছে তা নিরসন চান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ জন্য যেসব পলিসি দরকার সংশ্লিষ্টদের কাছে তা চেয়েছেন তিনি। বলেছেন, পুঁজিবাজারে উত্থান-পতন হবেই। আর এটা স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, গত বাজেটে কালো টাকা বিনিয়োগসহ পুঁজিবাজারে বেশ কিছু সুবিধা দেয়া হয়েছে। আগামী বাজেটেও যদি কোনো জায়গায় হাত দিতে হয়, তা দেয়া হবে। সেগুলো নিয়ে আসুন, করে দেব। তবে পুঁজিবাজার ভালো হবে এমন পলিসি নিয়ে আসবেন।
গত বাজেটে কালো টাকা বিনিয়োগসহ বেশ কিছু সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আগামী বাজেটেও যদি কোনো জায়গায় হাত দিতে হয়। সেগুলো নিয়ে আসুন, করে দেব। তবে পুঁজিবাজার ভালো হবে এমন পলিসি নিয়ে আসবেন।
মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আয়োজিত 'স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের আলোকে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের অর্জন ও সম্ভাবনা' শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে এখনও ব্যাপকতা আসেনি। তবে বর্তমান কমিশনের নেতৃত্বে ব্যাপকতা বৃদ্ধির কাজ চলছে। আস্তে আস্তে এই বাজার জনবান্ধব হিসেবে নিয়ে আসব।
ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনলাইন মাধ্যমে হওয়া এ আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ ও অধ্যাপক মিজানুর রহমান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, পুঁজিবাজারে এখন একটি শক্তিশালী ম্যানেজমেন্ট রয়েছে। পুঁজিবাজারের জন্য যেসব অবকাঠামো দরকার সেগুলো নিয়ে আসুন আমরা করে দিচ্ছি। গত বাজেটে কালো টাকা বিনিয়োগসহ বেশ কিছু সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আগামী বাজেটেও যদি কোনো জায়গায় হাত দিতে হয়। সেগুলো নিয়ে আসুন, করে দেব। তবে পুঁজিবাজার ভালো হবে এমন পলিসি নিয়ে আসবেন। এমন কিছু নিয়ে আসবেন না, যাতে আমারা রাখতে না পারি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারে গুজব ছড়িয়ে কম দামে শেয়ার হাতিয়ে নেয়ার পথ বন্ধ হয়ে যাবে। করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়ায় পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই বাজারে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ফলে পর পর দুদিন শবাজারে বড় দরপতন হয়।
এ ঘটনা প্রতি ইঙ্গিত করেই বিএসইসি চেয়ারম্যন বলেন, যারা গুজব ছড়িয়ে কম দামে শেয়ার হাতিয়ে নিতে চান, সেটা বন্ধ হয়ে যাবে।
এ সময় আইটির গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, করোনা আইটি খাতের গুরুত্ব বুঝিয়ে দিয়ে গেছে। আইটি ছাড়া ভবিষ্যতে চলাচল করা অসম্ভব। তাই দেশের পুঁজিবাজারকে পুরোপুরিভাবে আইটিতে রুপান্তর করতে হবে। এর মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়বে। পুঁজিবাজারের আইটি কাঠামো গঠনের জন্য বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। তারা এজন্য অনুদান দিতে সম্মত হয়েছে। হয়ত সেটা কয়েক মাসের মধ্যে পেয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সঠিক ভিশন ও মিশন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে শেয়ারবাজার। এই বাজারকে সবার সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী বাজারে পরিণত করা হবে।
বন্ডের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, শেয়ারবাজারকে এগিয়ে নিতে শুধুমাত্র ইক্যুইটি মার্কেট নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে কমিশন। আমরা অনেক বন্ডের অনুমোদন দিয়েছি। যে বন্ড ফল দিতে শুরু করেছে। আগামীতে বন্ডগুলো লেনদেনে আসতে যাচ্ছে। এছাড়া বিদেশীরা বন্ডে বিনিয়োগ শুরু করেছে।
সরকারি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) পূনগঠনের বিষয়ে ইঙ্গিত করে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, পুঁজিবাজারে আইসিবির অনেক গুরুত্ব। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানটি গঠন করা হয়েছে, সেখান থেকে প্রতিষ্ঠানটি অনেক দূরে। ইতিমধ্যে আইসিবিকে ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে।
ডিএসই'র পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে ভাল কোম্পানি লিস্টেড হলে আমরা বোম্বে এক্সচেঞ্জের কাছাকাছি যাব। তার জন্য প্রয়োজন অনেক লিস্টিড কোম্পানি।
তিনি বলেন, সোনার বাংলা গড়ার যে প্রত্যয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের দেখিয়েছিলেন, সেই স্বপ্নেই আমরা উজ্জিবিত আছি এখন । এবং উনি যে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন তা বাস্তবায়ন করে দেখিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা সোনার বংলার স্বপ্ন নয়, বাস্তবায়নের দিকে দেখতে পাচ্ছি।
ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুল মতিন পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ডিএসইর সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হাশেম এবং ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শরীফ আনোয়ার হোসেন।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান।
সাননিউজ/আরএম/এসএস