রাসেল মাহমুদ : পতন থেকে বের হতে পারছে না পুঁজিবাজার। ধারাবাহিক পতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তীব্র হতাশা বাড়ছে। প্রতিদিনই পুঁজি হারাচ্ছেন তারা। গত কয়েক সপ্তাহ এমন ভাবেই চলছে। সদ্য সমাপ্ত সপ্তাহেও সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। এই সপ্তাহে দেশের পুঁজিবাজার থেকে উধাও হয়েছে চার হাজার কোটি টাকা। তার আগের সপ্তাহেও ১০ হাজার কোটি টাকা হারিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
তবে সামনের কার্যদিবস থেকে বাজার স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
এদিকে স্টেক হোল্ডাররা বলছেন, ধারাবাহিকভাবে বাজার নিম্মমুখি হলে বিনিয়োগকারীরা আর আস্থা পাবে না।
জানা গেছে, বিএসইসি'র বর্তমান বডি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বাজার ইতিবাচক ধারায় ফেরে। মূলত ২০১০ সালের মহাধসের পর বিনিয়োগকারীদের বেশি আগ্রহ তৈরি হয় এই কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর। কিন্তু চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ থেকে অব্যাহত পতন বিনিয়োগকারীদের ফের চাপের মুখে ফেলেছে।
বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির ১২ তারিখ পর্যন্ত উত্থান-পতন হলেও ১২ জানুয়ারি লেনদেন নেমে আসে সর্বনিম্ন ৬৮৩ কোটি টাকায়। এরপর বাজার কিছুটা বাড়া-কমার মধ্যে ছিলো। কিন্তু গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে লেনদেন নামে ৬৯৪ কোটি টাকায়।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজার যখন ভালো হচ্ছিলো তখন অনেকেই বিনিয়োগ করেছে। এখন বাজারে পতন হওযায় বিনিয়োগকারীদের টাকা আটকে গেছে।
আতাউর রহমান নামের একজন বিনিয়োগকারী বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বেশ কিছু ভালো পদক্ষেপ নিয়েছে। তাদের দ্রুত সিদ্ধান্তের ফলে বাজার বেশ ভালো হচ্ছিলো। কিন্তু কারসাজিদের চক্রান্তে বাজার নেতিবাচক হয়েছে।
প্রায় একই কথা বলেন একটি ব্রোকার হাউজের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, এই একটি জায়গায় কমিশন ব্যর্থ। তাদের সমস্ত ভালো পদক্ষেপ ম্রিয়মান হয়েছে কারসাজির কাছে।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমানও কারসাজিকারীদের দিকে আঙুল তুলেছেন। তার ভাষায়, বিএসইসি যেসব সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সবগুলোই পুঁজিবাজারে বিনিযোগ বাড়ানোর জন্য। কিন্তু কারসাজিকারীরা সেব সিদ্ধান্তকে পুঁজি করে মুনাফা নিয়ে যাচ্ছে।
তবে কারসাজির সাথে কারা জড়িত তা নির্দিষ্ট করে বলছে না কেউ। বিএসইসি'র কাছেও সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে সংস্থাটি বাজারের এই অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. রেজাউল করিম।
সাননিউজকে তিনি বলেন, বাজারে আপস অ্যান্ড ডাউন হবেই। তবে এখন যে ট্রেন্ড চলছে তা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। সাম্প্রতি পতন নিয়ে আমরা স্টক এক্সচেঞ্জকে বলেছি তারা আমাদের রিপোর্ট করবে। আমাদের নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কিছু একশন নেয়া আছে। 'ফাউল প্লে' নিয়ে তদন্তে তেন কিছু পাওয়া না গেলেও পর্যবেক্ষণ চলছে। সেল পেশারগুলোও আমরা দেখছি। এছাড়া সেল করে কেউ টাকা উইড্রো করছে কিনা তাও দেখা হচ্ছে।
আগামী কার্যদিবস থেকে বাজার স্বাভাবিক হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন বিএসইসির এই কর্মকর্তা।
সাননিউজ/আরএম/এসএম