নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে বর্তমানে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, টেকসই অবকাঠামো খ্যাত প্রর্যাপ্ত পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দেশে শক্তিশালী আর্থিক অবস্থাসহ নানা ইতিবাচক দিক রয়েছে বিনিয়োগ করার । বাংলাদেশে এখন খুব সহজেই বিদেশি বিনিয়োগ করা যায়।
বৃহস্পতিবার ( ১১ ফেব্রুয়ারি) সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ আয়োজিত রোড শোর তৃতীয় দিনের এক সেমিনারে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এসব কথা বলেন।
৪ দিনব্যাপী রোড শোর তৃতীয় দিনে বৃহস্পতিবার ‘স্কোপ অব প্রাইভেট ইকুইটি এন্ড ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন দুবাই ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অথরিটির প্রধান নির্বাহী ব্রায়ান স্টায়ারওয়াল্ট। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এন্ড প্রাইভেট ইকুইটি এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ভিসিপিইএবি) সভাপতি শামীম আহসান।
উপস্থিত সবাইকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার বিনিয়োগ বান্ধব। তারা বিনিয়োগের নিরাপত্তা দিতে বদ্ধপরিকর। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে অনেক স্টার্টআপ কোম্পানি গড়ে উঠেছে, যেগুলো এখন মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুবাই ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অথরিটির প্রধান নির্বাহী ব্রায়ান স্টায়ারওয়াল্ট বলেন, করোনা মহামারী বিশ্বকে বিপর্যস্ত করেছে। তবে এর সুফলও রয়েছে। বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তির ব্যবহার অনেক বেড়েছে। আরব আমিরাত ও বাংলাদেশ বন্ধুরাষ্ট্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশেরই চলতি বছর সুবর্ণজয়ন্তী সামনে। বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক সম্ভাবনাময়। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রযুক্তিতে বিশেষ নজর দিতে হবে।
ইউসিবি ক্যাপিটালের সিইও এসএম রাশিদুল হাসানের সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শেয়ারবাজারের বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের শুভেচ্ছা দূত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। তিনি তার বক্তব্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য দুবাইবাসীকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির অনেক উন্নতি হয়েছে এবং আগামীতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
এছাড়া অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বে দেশের শেয়ারবাজার ভালো অবস্থানে রয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এসব কারণে বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের উত্তম জায়গায় পরিণত হয়েছে।
মূল প্রবন্ধে ভিসিপিইএবির সভাপতি শামীম আহসান বলেন, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও প্রাইভেট ইকুইটি নতুন অর্থনৈতিক সুযোগ নিয়ে আসছে এবং উদ্ভাবনী উদ্যোক্তাদের বড় ধরনের রিটার্নের সুযোগ দিচ্ছে। বাংলাদেশের ই-কমার্স মার্কেট প্রতিদিনই বড় হচ্ছে। বর্তমান মার্কেট ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের। অনলাইন ভিত্তিক প্লাটফর্মে নতুন নতুন ক্রেতা তৈরি হচ্ছে। আসছে নতুন বিনিয়োগ। করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো জোর দিচ্ছে অনলাইন কেনাকাটার ওপর।
চলমান করোনা মহামারীতে অনলাইনে কেনাকাটার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। তাই ২০২৩ সালের মধ্যে ই-কমার্স মার্কেট ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে। আর তাই ভেঞ্চার ক্যাপিটালে বিদেশিদের বিনিয়োগের বড় সুযোগ রয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার কামালুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নাহিদ হোসাইন, সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার, এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. মাহতাবুর রহমান, এনআরবিসি ব্যাংকের পরিচালক আদনান ইমাম, বিএমবিএ সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান, এলআর গ্লোবাল এ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার রিয়াজ ইসলাম, আইল্যান্ড সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, ইউসিবি স্টক এন্ড ব্রোকারেজের সিইও রহমত পাশা, শাহজালাল এ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান পরামর্শক মোহাম্মদ ইউনুস প্রমুখ।
সান নিউজ/এসএ