রাসেল মাহমুদ : করোনা মহামারি দেশের অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা দিলেও প্রবাসীদের পাঠানো অর্থে অনেকাংশে তা কাটিয়ে উঠেছে।
লকডাউন ও লকডাউন পরবর্তী সময়ে দেশে এসেছে রেকর্ড সংখ্যক রেমিটেন্স। আর রেমিটেন্সের উপর ভর করে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভও বেড়েছে। যাকে রীতিমতো রেকর্ড বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। গত বছরের একই সময়ে রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ গত এক বছরে রিজার্ভ বেড়েছে ১০ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার।
সূত্র জানিয়েছে, বর্তমান যে রিজার্ভ রয়েছে তা দিয়ে প্রতি মাসে চার বিলিয়ন ডলার হিসেবে ১০ মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ থেকে বাংলাদেশ যে সব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পর পর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়।
গত ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের রিজার্ভ প্রথমবারের মত ৪৩ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নভেম্বর-ডিসেম্বর মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধের পর তা ৪২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের উপর ভর করে এক মাস না যেতেই রিজার্ভ আবার ৪৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করল।
আকুর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধ করতে হবে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে। তার আগে রিজার্ভ ৪৪ বিলিয়ন ডলার পেরিয়ে যাবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে,মহামারীর মধ্যে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল। যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ১৯৬ কোটি ২৬ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছে, যা গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি।
সবমিলিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ১৪ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
সাননিউজ/আরএম/আরআই