নিজস্ব প্রতিবেদক:
চলতি মার্চ মাসে দেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে রেকর্ড দরপতন হয়েছে। করোনা ভাইরাসের অভিঘাতের দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বাজার মূলধন হারিয়েছে ৩০ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা, সূচক হারিয়েছে ৩৭২ পয়েন্ট। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটির তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি মাসে এখানে লেনদেন হয়েছে ১৮ দিন। এর ১২ দিনই পতন ঘটেছে সূচকের। এই সময়ের মধ্যে বড় ধরনের দরপতনে বাজার মূলধন ও সূচক পতনে রেকর্ড গড়ে ডিএসই।
করোনা আতঙ্কের কারণেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পুঁজিবাজারে বড় ধরনের ধস নেমেছে বলে মন্তব্য বিশ্লেষকদের। এর নেতিবাচক প্রভার পড়েছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারেও। তবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল দরপতন। বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত ছিলেন আগে থেকেই। আর এর সঙ্গে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক পতনের মাত্রা ভয়ানকভাবে বেড়ে যাওয়ায় বড় ধরনের লোকসানের কবলে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা । প্রায় প্রতিদিনই নিঃস্ব থেকে নিঃস্বতর হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এই অবস্থা থেকে কিছুটা উত্তরণ পেতে হলে আতঙ্কিত হয়ে কম দামে শেয়ার বিক্রি না করারে পরামর্শ দিচ্ছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
গত ৮ই মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সনাক্তের ঘোষণা আসে সরকারের পক্ষ থেকে। ডিএসই সূত্র জানা গেছে, ওই দিনের পর থেকে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হয় পুঁজিবাজারে। ৯ মার্চ থেকে ১৮ মার্চ মাত্র ৭ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বাজার মূলধন হ্রাস পায় ৪৪ হাজার ১২৮ কোটি টাকা। ওিই একই সময়ে ডিএসই’র সূচক কমে ৬৮৩ পয়েন্ট।
এমন অবস্থায় গত ১৯ মার্চ পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি তার কিছু কারিগরি নির্দেশনায় পুঁজিবাজারে স্বাভাবিক পতনের পথ বন্ধ করে দেয়। কারিগরি ওই নির্দেশনা অনুযায়ী, পূর্ববর্তী ৫ দিনের সূচক ও বিভিন্ন শেয়ারের পতনের মোট পরিমাণকে ৫ দিয়ে ভাগ করে গড় করা হয়। প্রাপ্ত গড়ের নিচে শেয়ারের দাম আর কমানো যাবে না। এই নির্দেশনা লক্ষ্য করে গত ১৯শে মার্চ ডিএসইর প্রধান সূচক ৩৭১ পয়েন্ট বেড়ে যায। ফলে মাসের শেষে এসে ডিএসইর পতনের মাত্রাটা কিছু রয়েছে।
উল্লেখ্য, মাসের শুরুতে ১ মার্চ ডিএসইর বাজার মুলধন ছিল ৩ লাখ ৪২ হাজার ৯৮৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আর মার্চের শেষ কার্যু দিবস ২৫ তারিখে ডিএসইর বাজার মূলধন নেমে আসে ৩ লাখ ১২ হাজার ২৩৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকায়। অর্থাৎ মাত্র ১৮ কার্যদিবসেই ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকা।