নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে দেশের তৈরি পোশাক রফতানিতে আবারও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। পোশাক রফতানি আয় নির্ভর করছে দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় পশ্চিমা দেশগুলোর ব্যবসায়িক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় তার ওপর।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত পোশাক রফতানি ত্রৈমাসিক পর্যালোচনা শীর্ষক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাকালীন লকডাউনের ফলে পোশাক রফতানি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। লকডাউন প্রত্যাহারের ফলে পোশাক উৎপাদন ও রফতানি গতিশীল হতে শুরু করে।এর মধ্যে নভেম্বর থেকে শুরু হয় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। এর ধাক্কায় ইউরোপ আমেরিকার দেশসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে আবার সীমিত আকারে লকডাউন আরোপ করা হয়।
এতে যোগাযোগ ব্যবস্থাও বাধাগ্রস্ত হতে শুরু করেছে। একই সঙ্গে ব্যাহত হচ্ছে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, করোনার প্রথম ধাক্কায় পোশাক খাত বসে গিয়েছিল। পরে আবার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেও এখন আবার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা লেগেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। ফলে দোকানপাট যেমন কম খুলছে, তেমনি মানুষের আয় কমায় পোশাক কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে ব্যাহত হচ্ছে পোশাক রফতানি। তিনি বলেন, পোশাক রফতানির বড় অংশই হয় শীতের সময়। কিন্তু এবার শীতের বাজার জমেনি। ফলে চাহিদা কমেছে। এর প্রভাব আগামীতে আরও পড়বে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পোশাক রফতানির প্রায় ২০ শতাংশ হচ্ছে আমেরিকাতে। ৫৪ শতাংশ হচ্ছে ইউরোপের দেশগুলোতে। বাকি বাকি ২৬ শতাংশ হচ্ছে অন্যান্য দেশে। মোট রফতানির মধ্যে ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোতে ৭৪ শতাংশ পোশাক রফতানি এখন হুমকির মুখে। এদিকে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সূত্র জানায়, পোশাক রফতানির উৎপাদন সক্ষমতা এখন ৬০ শতাংশের বেশি কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
আগে এ সময়ে শতভাগ লাগানো যেত। এতে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান উৎস তৈরি পোশাক রপ্তানি। মোট রপ্তানি আয়ের ৮৩ শতাংশ আসে এ খাত থেকে। জুলাই-সেপ্টেম্বরে মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৬ শতাংশ এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনার নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় পোশাক খাতকে সহায়তা করতে সরকার বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এগুলো বাস্তবায়নের পাশাপাশি সরকার থেকে অন্যান্য সহযোগিতাও দেয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে, পোশাক খাত ধীরে ধীরে এর উৎপাদন সক্ষমতা পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারবে। তবে এটি নির্ভর করছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে পশ্চিমা দেশগুলোর ব্যবসায়িক পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তার ওপর।
গত অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে ওভেন পোশাক রফতানি কমেছে ৭ দশমিক২ ৭৬ শতাংশ এবং নিটওয়্যার রফতানি বেড়েছে ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
সান নিউজ/এসএ