আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বিশ্ব পরিস্থিতিতে ধারণার চেয়েও দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯)।
শুক্রবার সকাল পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৪। মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। বিশ্বের ১৭৯টি দেশ ও অঞ্চলে এ ভাইরাসটি এরইমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এর প্রভাব বাড়ছে ক্ষণে ক্ষণে।
ফলে এই মহামারির ক্ষতিকর প্রভাব এবং দেশগুলোর কঠোর অবস্থান দুটোর প্রভাবেই বিশ্ব অর্থনীতি ধাক্কা খাচ্ছে। এরই মধ্যে মন্দার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এজন্য নাটকীয় পরিবর্তন হচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতির।
মার্কিন বহুজাতিক ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস গ্রুপ ও মরগান স্ট্যানলির অর্থনীতিবিদরা নতুন করে হিসাব কষছেন অর্থনীতি নিয়ে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এ মন্দার দীর্ঘস্থায়িত্ব ও গভীরতা কতটুকু। জেপিমর্গান বলছেন, এবছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার সাড়ে ৩ শতাংশ থেকে বেড়ে শোয়া ৬ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রিতে এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড়ো পতন দেখা গেছে। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে মার্কিন অর্থনীতির ক্ষতি ৩৬০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ মহামারির কেন্দ্রভূমি ইউরোপে। ২০০৮-০৯ সালের আর্থিক সংকটের পর বিশ্ব হয়তো প্রথম মন্দা এড়াতে পারবে, এতদিন পর্যন্ত এমন পূর্বাভাস দিলেও বিশ্লেষকরা এবার বিপরীত মন্তব্য করেছেন।
২০১৯ এ বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ছিল ২ দশমিক ৩ শতাংশ। বিশ্ব ব্যাংক ও জাতিসংঘের ভবিষ্যৎ বানী ছিল ২০১০ সালে এর প্রবৃদ্ধি দাড়াবে ২ দশমিক ৫ শতাংশে, কিন্তু করোনা ভাইরাসের মতো বৈশ্বিক দুর্যোগের কারণে এবার তা ১ শাতাংশেরও নিচে নেমে আসতে পারে বলে আশংকা অর্থনীতি বিশ্লেষকদের।
মরগান স্ট্যানলির অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, বিশ্বব্যাপী মন্দা এখন ‘বেজ কেস’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থাত অর্থনীতির মূল দৃষ্টি এখন মন্দার দিকে। চলতি বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমে দশমিক ৯ শতাংশে দাঁড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা স্বীকার করে নিয়েছেন ২০০১ সালের বিশ্ব পরিস্থিতির চেয়েও বর্তমান অবস্থা খারাপ যাচ্ছে। আগামী সপ্তাহগুলোতে এ হার উত্তরোত্তর বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তাদের এই পূর্বাভাস আরো প্রণোদনা কর্মসূচি গ্রহণের জন্য নীতিনির্ধারকদের ওপর চাপ বাড়াবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
ব্লুমবার্গের অর্থনীতিবিদরা জানান, তারা চলতি বছরের জন্য চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস কমাচ্ছেন। এর আগে ৫ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস করা হলেও চলতি বছর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্ অর্থনীতির দেশ চীন মাত্র ১ দশমিক ৪ শতাংশ সম্প্রসারিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে করোনা ভাইরাসের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় ৮২০ বিলিয়ন ডলার বা ৮২ হাজার কোটি ডলারের জরুরি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি)।
সান নিউজ/সালি