নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি অর্থবছরে জিডিপির তুলনায় করের অনুপাত ধরা হয়েছে ১১.৯ শতাংশ। যদিও ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা ছিল ১২.৪ শতাংশ। রাজস্ব উৎপাদনের খাতের ওপর করোনার প্রভাব পড়া সত্ত্বেও, সরকার এটি বাড়িয়ে ২০২২-২৩ সালে ১২.২ শতাংশ করার পূর্বাভাস দিয়েছে।
চলতি অর্থবছরে করোনা মহামারিরর কারণে দেশের রাজস্ব আদায় অত্যন্ত জটিলতার মধ্যে থাকলেও আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) করের আনুপাতিক হার বাড়ানোর পূর্বাভাস দিয়েছে।
কর-জিডিপির আনুপাতিক হার হলো দেশে একটি নির্দিষ্ট সময়ে আহরণ করা রাজস্ব আদায় এবং দেশের শিল্পখাতে উৎপাদিত পণ্য ও সেবার মূল্যের মধ্যকার সম্পর্ক। সরকার একটি দেশের অর্থনৈতিক সম্পদগুলোকে কতটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে তার নির্দেশকও হলো এ অনুপাতটি।
সরকারি তথ্য উপাত্ত থেকে জানা যায়, আগামী অর্থবছরের প্রাক্কলিত রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত ধরা হয়েছে ১২.২ শতাংশ। এর মধ্যে ১০.৬ শতাংশ আসবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকর্তৃক (এনবিআর) আদায়কৃত কর থেকে, ০.৬ শতাংশ আসবে এনবিআর বর্হিভূত উৎস থেকে এবং কর বহির্ভূত উৎস থেকে আসবে বাকি ১.১ শতাংশ।
একইভাবে, চলতি অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে ১০.৪ শতাংশ, এনবিআর বহির্ভূত উৎস থেকে ০.৫ শতাংশ এবং কর বহির্ভূত উৎস থেকে এক শতাংশ রাজস্ব আসবে বলে প্রত্যাশা সরকারের।
সরকার গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রাথমিকভাবে কর-জিডিপি আনুপাতিক হার ১৩.১ শতাংশে পৌঁছাতে পারে বলে প্রাক্কলন করেছিল। যার মধ্যে এনবিআর থেকে ১১.৩ শতাংশ, এনবিআর বহির্ভূত উৎস থেকে ০.৫ শতাংশ এবং কর বহির্ভূত উৎস থেকে ১.৩ শতাংশ ধরা হয়। তবে করোনার আঘাতের কারণে পরবর্তীতে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১২.৪ শতাংশে আনা হয়েছিল।
সরকারি তথ্য অনুসারে, নতুন মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আইন প্রয়োগের কারণে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে দেশের কর-জিডিপি অনুপাত প্রতিবেশী এবং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় অনেক কম।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকের অক্টোবর ২০১৯ প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫-২০১৯ সাল পর্যন্ত দেশের কর-জিডিপি অনুপাতের গড় হার ছিল ৯.৯ শতাংশ। একই সময়ে ভারতে তা ছিল ১৯.৮ শতাংশ, নেপালে ২৩.৯ শতাংশ, পাকিস্তানে ১৪.৭ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কায় ১৩.৫ শতাংশ।
আউটলুকের দেওয়া তথ্য মতে, এ অনুপাতটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য ২৫.৬ শতাংশ এবং উন্নত দেশের ক্ষেত্রে ৩৫.৯ শতাংশ হওয়ার কথা। সরকারি তথ্যে আরও বলা হয়েছে, সামগ্রিক রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য সরকার বিভিন্ন সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে।
বন্ডেড ওয়ার হাউজের পাশাপাশি ভ্যাট এবং অন্যান্য কর সংগ্রহের জন্য অটোমেটেড সিস্টেম চালু করা হয়েছে। নতুন শুল্ক আইনেও এটি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সংস্কার পদক্ষেপ ছাড়াও ট্যাক্স প্রশাসনের আধুনিকীকরণ, কর পরিধির সম্প্রসারণ এবং কর আইন মেনে চলা, আইন সংশোধন ও সহজীকরণে মাধ্যমে ভবিষ্যতে রাজস্ব আদায়ে উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে সরকারি তথ্য থেকে জানা গেছে।
সান নিউজ/এসএ