বাণিজ্য

নারায়ণগঞ্জ কারাবন্দিদের রপ্তানিযোগ্য পোশাক তৈরি

নিজস্ব প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ : ২০১৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর বন্দিদের সংশোধন ও পুনর্বাসনের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে রিজিলিয়ান্স পোশাক কারখানা উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তৎকালীন জেলা প্রশাসক রাব্বী মিঞা এই উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এছাড়া সমাজসেবা অধিদপ্তর, বিকেএমইএসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় পোশাক কারখানাটি স্থাপন করা হয়।

দেশে নিট পোশাক কারখানার সঙ্গে যোগ হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার। সেখানে সাব কন্ট্রাক্টে মানহা গার্মেন্টস, কটন হার্বেস গার্মেন্টস, বেজলিং গার্মেন্টস ও এইচ আর ট্রেডার্স গার্মেন্টস ও এ আর ফ্যাশন ওয়্যার কাজ করিয়ে নেয়। বর্তমানে এ আর ফ্যাশন ওয়্যার কারখানার অর্ডারের কাজ চলছে কারাগারে।

এই বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার শাহ্ রফিকুল ইসলাম বলেন, এই পর্যন্ত বন্দিরা এই কারা-গার্মেন্টসে ১ লাখ ৫ হাজার ৪৪০পিস টি-শার্ট, ৪০ হাজার মাস্ক, প্রায় ৫শ শিশুদের শীতের পোশাক উৎপাদন করেছেন। এসব পোশাক রপ্তানিকারী গার্মেন্টসের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।

বন্দর থানার হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী নারায়ণ সরকার ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি কারাগারে আছেন। কারা-গার্মেন্টসে তিনি মেশিন অপারেটর হিসেবে কাজ করছেন। প্রতি মাসে সেখান থেকে আয় করছেন ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা।

বন্দর থানার আরেকটি হত্যা মামলায় ৩০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি মোহাম্মদ লিটন। গত ১১ বছর যাবত এই কারাগারে বন্দি আছেন। এর আগে তিনি হোসিয়ারী কারখানায় কাজ করতেন। এখন কারাগারে পোশাক উৎপাদনের দায়িত্বে আছেন।

তিনি বলেন, প্রতি মাসে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা আয় হয়। সেই টাকা থেকে নিজের খরচের জন্য কিছু টাকা রেখে বাকিটা পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেন। তার বাড়িতে মা ও বোন রয়েছেন।

ফতুল্লা থানার একটি হত্যা মামলায় দুই বছর যাবত কারাগারে আছেন মো. আশাদুল। কারাগারে মেশিন অপারেটরের কাজ করেন তিনি। তিনি বলেন, প্রতি মাসে টি-শার্ট তৈরি করে তিন থেকে চার হাজার টাকা আয় করেন। নিজের মামলার খরচের টাকা রেখে অল্প কিছু পরিবারের কাছে পাঠাতে পারেন।

কারাগার কর্তৃপক্ষ জানায়, কারাগারের ভেতরে ৫ হাজার বর্গফুটের টিনশেডের তৈরি রিজিলিয়ান্স পোশাক কারখানা। এই কারখানায় ৫৬টি সুইং মেশিন রয়েছে। কয়েদী ও হাজতি দুই শিফটে সেখানে তিন শতাধিক বন্দি কাজ করেন। তারা টি-শার্ট তৈরি করেন। বন্দিদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এই কারাগারের বন্দিদের প্রায় ৪ ভাগের ১ ভাগ পোশাক শ্রমিক।

এই ব্যাপারে জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক মো. মাহবুবুল আলম বলেন, কয়েকটি পোশাক কারখানা থেকে সাব কন্ট্রাক্টে কাজ এনে বন্দিদের দিয়ে পোশাক তৈরি করা হয়। বন্দিরা মানসম্পন্ন পোশাক তৈরি করছেন। সেই পোশাক গার্মেন্টসের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।

এই বিষয়ে বিকেএমইএ জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, কারাগারে গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠা একটি ভালো উদ্যোগ। কারাগার থেকে কাজ শিখে বাইরে বেরিয়ে এসে অপরাধে না জড়িয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সহায়তা হচ্ছে এই কাজের মাধ্যমে। দেশের অন্য কারাগারগুলোতে এই ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। এতে বন্দিরা নিজেদের সংশোধন করতে পারবে।

সান নিউজ/এসএ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ঈদের পরে পর্যটন কেন্দ্রের হালহাকিকাত

বিনোদন প্রতিবেদক: রমজান মাসে দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ছিল প্রায় সুনসান নীরব...

বিমসটেক সম্মেলনের পথে প্রধান উপদেষ্টা

সান ডেস্ক: এশিয়ার শীর্ষ নেতাদের অংশগ্রহণে বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ...

সমাজে এখনও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা যায়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল এ...

শপথ নিলেন আপিল বিভাগের দুই বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসে...

স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দিলেন ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অ...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা