সান নিউজ ডেস্ক : কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় হোস্ট কমিউনিটির বিদ্যুৎ, পানি, স্যানিটেশন ও দুর্যোগ সহনশীল অবকাঠামো সুবিধা বাড়াতে আরো ১০ কোটি ডলারের অনুদান দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক।
জানা গেছে, ‘ইমার্জেন্সি মাল্টি-সেক্টর রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স’ প্রকল্পের আওতায় এ অনুদান দেয়া হবে। প্রতি ডলার সমান ৮৫ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অনুদান প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা। বিশ্বব্যাংকের এ অনুদানে স্থানীয়সহ প্রায় ৮ লাখ মানুষ উপকৃত হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বব্যাংক এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি বুধবার সই হয়েছে।
চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব সাহাবুদ্দিন পাটোয়ারী এবং বিশ্বব্যাংকের পক্ষে বাংলাদেশ ও ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেম্বন সই করেন।
নতুন এ অর্থ এই প্রকল্পের আওতায় সুবিধাভোগী হবে ৭ লাখ ৮০ হাজার ৮০০ জন। এর মধ্যে এক লাখ ৪০ হাজার ৮০০ জন স্থানীয় জনগণের আবাসিক এলাকার অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে। এছাড়া তিন লাখ ৬৫ হাজার ৮০০ জন মানুষের জন্য সুপেয় পানির উন্নয়ন এবং এক লাখ ৭১ হাজার ৮০০ জনের স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নত করা হবে।
একইসঙ্গে এই অর্থায়নের মাধ্যমে ৮১ হাজার মানুষের জন্য ৪০টি বহুমুখী আশ্রয়কেন্দ্র, জলবায়ু সহনশীল রাস্তা, ৪ হাজার সৌর বিদ্যুৎচালিত সড়ক বাতি লাগানো, ৯৭৫টি নিরাপদ বাতির ব্যবস্থা তৈরিসহ বেশকিছু কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। এ অর্থায়ন সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধি, পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা ও সমন্বয়, জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রেও সহায়তা করবে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ও ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেম্বন বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের শুরু থেকে তাদের চাহিদা পূরণে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে আসছি। পাশাপাশি সেখানকার স্থানীয় বাংলাদেশিদেরও সহযোগিতা করছি। আমরা লক্ষ্য করছি, রোহিঙ্গারা আসার পর থেকে কক্সবাজারের অবকাঠামোসহ মৌলিক যেসব চাহিদা রয়েছে, সেসব ক্ষেত্রে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এই অনুদান সেই চাপ কিছুটা হলেও কমাতে সহযোগিতা করবে।
বিশ্বব্যাংকের ‘ইমার্জেন্সি মাল্টি-সেক্টর রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স’ প্রকল্পের আওতায় সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ, সড়ক উন্নয়ন, সেতু নির্মাণ, কালভার্ট, মাল্টিপারপাস কমিউনিটি সেন্টার, সড়ক প্রশস্ত ও মজবুতকরণ হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি, পরিচালন ও মিনি পাইপে পানি সরবরাহ, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ, কমিউনিটি ল্যাট্রিন, রক্ষণাবেক্ষণসহ বায়োগ্যাস ল্যাট্রিন, ওয়াটার অপশন স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণসহ পয়ঃনিষ্কাশন ও কঠিন ময়লা নিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন হবে।
এছাড়া প্রকল্পের আওতায় বিদ্যমান টয়লেট সংস্কারসহ বাসা-বাড়িতে বায়োফিল টয়লেট স্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার ৩২টি ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য পাইপড এবং নন-পাইপড পানির উৎসের মাধ্যমে নিরাপদ ও সুপেয় পানি সরবরাহ করা যাবে। পাশাপাশি এ ক্যাম্পগুলোতে ফিক্যাল স্ল্যাজ ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে।
সান নিউজ/এসএম