নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেয়ে বিদেশে অর্থ পাচার করছে দেশের মানুষ। বিদেশে এসব সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কারণেই অর্থপাচার কমছে না বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এটা বন্ধ করতে পারলে ঋণ নিতে হতো না বলে মনে করেন তিনি।
বুধবার (৪ মার্চ) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স এন্ড ম্যানেজমেন্ট কর্তৃক আয়োজিত অর্থনীতি ও প্ল্যানিং নিয়ে এক সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যদি টাকা পাচার কম হতো তাহলে যে টাকা চুরি হচ্ছে সেটা আমাদের উন্নয়নের কাজে লাগতো। ঋণ আমরা কম নিতাম। এবছর যেমন আমরা অনেক বেশি টাকা ঋণ নিয়ে নিয়েছি। এ টাকা থাকলে আমাদেরকে এতটা হয়তো নিতে হতো না। দেশে ইনভেস্টমেন্ট হত, কি না হতো; নিজের দেশের টাকা বাইরে চলে যাচ্ছে। এটা অবশ্যই দেশের জন্য ক্ষতির দিক।
উন্নত দেশগুলো টাকা পাচার করতে সহযোগিতা করছে উল্লেখ করে এম এ মান্নান বলেন, উন্নত দেশগুলোকে আমরা সম্মান করি। তাদের মধ্যে কোন কোন দেশ আছে যারা কম টাকা নিয়ে গেলে ভিসা দেয় না, এয়ারপোর্ট থেকে ফিরিয়ে দেয়। আর বেশি টাকা নিয়ে গেলে তারা ওয়েলকাম করে। তোমরা আসো, এত টাকা নিয়ে তোমাদেরকে নাগরিকত্ব দেব। তোমরা ব্যবসা করো, এ দেশে থাক- খোলামেলাভাবে তারা এই আহ্বান জানাই। আমি তাদের নাম বলতে চাই না।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট গড়ে তোলা হয়েছে এটা দেখভাল করার জন্য। ব্যাংকের ওপরে আমাদের কিছু রেস্ট্রিকশন আছে। টাকার মূলধন যদি কোন ব্যাংকের ম্যানেজার বা কর্তৃপক্ষ দেখে অস্বাভাবিক তাহলে তা আমাদেরকে জানাতে হবে। আবার দেখা যায় হঠাৎ করে কোন একাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেন হচ্ছে। আমাদেরকে তা জানাবে। এছাড়া আমরা নানাভাবে চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, কোম্পানিগুলো এলসি কি করে বেশি করে ফেলছে। আন্ডার ভ্যালুয়েশন, ওভার ভ্যালুয়েশন রুখবার জন্য আমরা চেম্বারগুলোর সাথে কথা বলছি। আমার ব্যাংকগুলোকে বলি যখন নেগোসিয়েশন করবেন তখন ফাঁকফোকর দিয়ে যাতে না বেরিয়ে যায়। আমরা চেষ্টা করছি, কিন্তু আমরা এটাও জানি যে আমাদের সকল চেষ্টা সত্ত্বেও বেশ টাকা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে।
এম এ মান্নান বলেন, এখন বিষয় হচ্ছে টাকা পাচার রুখবার জন্য আমাদের কি কি ব্যবস্থা রয়েছে। ২০ থেকে ৩০ বছর আগেও কিন্তু এই টাকা পাচার হত। তবে তখন আমলে আসে নি। জঙ্গিবাদ বিষয়টা সামনে আসার পরে বিদেশি দেশগুলো জঙ্গিদের টাকা রুখবার উদ্দেশ্যে এ বিষয়ে আগ্রহ দেখানো শুরু করেছে। তারা টাকা পাচারের বিপক্ষে একটা অবস্থান নিয়েছে। আমরাও তাদের সাথে একমত হয়েছি। আমাদের দেশ থেকে টাকা গেলে আমাদের ক্ষতি হয়।