নিজস্ব প্রতিবেদক:
গত ১০ বছরে কেবলমাত্র ব্যাংক খাতের কেলেঙ্কারিতেই লোপাট হয়েছে ২২ হাজার ৫০২ কোটি টাকা। সোনালী ব্যাংকের হল-মার্ক গ্রুপ দিয়ে শুরু হলেও সবচেয়ে বেশি কেলেঙ্কারি ঘটেছে জনতা ব্যাংকে। এর সঙ্গে রয়েছে বেসিক, এনআরবি, ফারমার্স ব্যাংক এবং আরও কয়েকটি ব্যাংকসহ আর্থিক খাতের অন্যান্য লিজিং কোম্পানিগুলো অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা।
এ অবস্থায় দেশের পুঁজিবাজার ও ব্যাংকগুলোতে দেখা দেয় ব্যাপক তারল্য সংকট, যার প্রভাব পড়ছে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে। বিষয়টি নিয়ে ভাবনায় দেশের সর্বোচ্চ আদালতও।
তাই প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ মন্তব্য করলেন “ব্যাংকিং খাতসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম ও দুর্নীতি দেখে আদালত চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না।”
১৬ ফেব্রুয়ারি রোববার ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের আপিল আবেদনের এক শুনানিতে বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন আদালত।
লিজিং কোম্পানির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
শুনানিকালে মাহবুবে আলম বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে জনগণের আমানত রাখা হয়। কিন্তু সেই আমানত যেভাবে লুটপাট হচ্ছে, তাতে ব্যাংক সংশ্লিষ্ট আর্থিক খাত ভয়ঙ্কর পরিণতির দিকে যাচ্ছে। যারা লুটপাটের সঙ্গে জড়িত, তাদের ব্যাপারে আদালত কঠোর ভূমিকা রাখতে পারেন।
তিনি জানান, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের আর্থিক অবস্থার বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানটির স্বাধীন চেয়ারম্যান (হাইকোর্টের নির্দেশে নিয়োগপ্রাপ্ত) খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকের নিচে নয়, এমন একজন কর্মকর্তাকে আদালতে আসতে বলেছেন আপিল বিভাগ।
এ ব্যাপারে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি তাদের আপিল বিভাগে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন আদালত।
আইনজীবী আহসানুল করীম সাংবাদিকদের বলেন, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের বাস্তবিক অর্থনৈতিক অবস্থা কী রকম আছে, আর্থিক অনিয়ম হলে কোন পর্যায়ে রয়েছে, অর্থনৈতিক অবস্থার বিষয়ে সামগ্রিক অবস্থা তুলে ধরতেই তাদেরকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত ২১ জানুয়ারি এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পিকে হালদার) ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।