নিজস্ব প্রতিবেদক : ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির এজেন্ট ব্যাংকিং গ্রাহক সংখ্যা ৫০ লক্ষ অতিক্রম করে দেশের এজেন্ট ব্যাংকিং সেক্টরে নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করেছে। সরাসরি ব্যাংকিং সেবা থেকে বঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে এজেন্টের মাধ্যমে সহজে ব্যাংকিং সেবায় অন্তর্ভুক্তি করে আসছে ইসলামী ব্যাংক। ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই কার্যক্রম শুরু থেকে ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং গ্রাহকদের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতায় খুব দ্রুত প্রসার লাভ করেছে। এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরুর মাত্র সাত বছরের মধ্যে অর্ধকোটি গ্রাহক ব্যাংকিং চ্যানেলে যুক্ত করে বৃহৎ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি সৃষ্টির মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং সফলতার ইতিবাচক ধারা উম্মোচন করেছে। ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে এ পর্যন্ত ডিপোজিটের পরিমাণ ১৬ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এর সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো, গ্রাহকদের প্রায় অর্ধেকই নারী। আবার গ্রাহকদের সিংহভাগই গ্রাম এলাকার।
আরও পড়ুন : হাসিনাকে ফেরাতে চিঠি দেওয়া হয়েছে
বর্তমানে সারা দেশে ৪৭২টি উপজেলায় মোট ২৭৭৮ টি এজেন্ট আউটলেট রয়েছে ইসলামী ব্যাংকের। বেশীরভাগ আউটলেট দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। প্রতিটি এজেন্ট আউটলেটে শাখা থেকে সরাসরি তত্বাবধানের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় সর্বোচ্চ গ্রাহক সেবার মান, তৈরি করা হয় গ্রাহকের আস্থা ও আর্থিক সুরক্ষার নিশ্চয়তা। ফলে ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট আউটলেট ব্যাংকের অন্যান্য সেক্টরের ন্যায় তৃণমূলে আর্থিক পরিষেবা পৌছে দিতে সক্ষম হয়েছে।
এযাবৎ অর্ধকোটি গ্রাহক যেমন আমানত হিসাব খুলেছেন তেমনি গ্রাহকরা নির্বিঘ্নে আমানত জমা ও উত্তোলন করছেন। বর্তমানে আউটলেটগুলোতে দৈনিক লেনদেন প্রায় ১২০০ কোটি টাকা। ইসলামী ব্যাংকের বহুল জনপ্রিয় পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের (আরডিএস) মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ বিতরণ করায় চাঙা হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি। বর্তমানে ১৩৫টি এজেন্ট আউলেট এ প্রকল্পের আওতায় বিনিয়োগ বিতরণ করছে। মোট ১০৫৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ বিতরণ করা হয়েছে ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।
আরও পড়ুন : পান্থকুঞ্জ-আনোয়ারা পার্ক নিয়ে ভাবা হচ্ছে
এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের মাধ্যমে প্রবাসী আয় বিতরণেও অসামান্য সফলতা অর্জন করেছে। ব্যাংকের বিশাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিট্যান্স সহজেই উত্তোলন করতে পারছেন প্রবাসীদের স্বজনরা। এজেন্ট আউটলেটের মাধ্যমে প্রবাসী আয় সংগ্রহ ও বিতরণেও ইসলামী ব্যাংক দেশের শীর্ষ অবস্থানে। বিগত বছরে দেশের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আহরিত ৫৪ শতাংশেরও বেশি রেমিট্যান্স এককভাবে বিতরণ করেছে ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট আউটলেটগুলো। ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১৫ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা প্রবাসী আয় বিতরণ করা হয়। কোন কোন দিন দৈনিক রেমিট্যান্স বিতরণ করা হয় প্রায় ১২০ কোটি টাকার উপরে। এসব রেমিট্যান্স সরাসরি গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে জমা হওয় অথবা স্পট ক্যাশের মাধ্যমে দ্রুত নগদায়ন করার সুযোগ থাকায় গ্রাহক হুন্ডি বর্জনে উৎসাহিত হচ্ছেন।
আমানতদারিতা, শরীআহ পরিপালনে একনিষ্ঠতা ও পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে গুরুত্ব প্রদান ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে সফলতার কারণসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি যেমন ডিজিটাল অ্যাপ- সেলফিন, আই-ব্যাংকিং ও পয়েন্ট অব সেলসের (পিওএস) মত আধুনিক পরিষেবা ছাড়াও এজেন্ট আউটলেটে কিউআর কোড দিয়ে টাকা উত্তোলনের মত সহজ সেবা ব্যবহার গ্রাহকদের মাঝে জনপ্রিয় হয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘরের পাশে ব্যাংকের সকল সুবিধা নিয়ে ব্যয় সাশ্রয়ী ব্যাংকিং সেবাও অন্যতম কারণ।
আরও পড়ুন : যুক্তরাজ্যে টিউলিপকে জিজ্ঞাসাবাদ
এজেন্ট আউটলেটের স্বত্বাধিকারীগণ স্থানীয়ভাবে পরিচিত মুখ হওয়ায় গ্রাহক ব্যাংকিং লেনদেনে সাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। জরুরি প্রয়োজনে বিশেষ ক্ষেত্রে আউটলেটে অক্ষম অসুস্থ কিংবা বয়োবৃদ্ধদের ট্যাবে ফিঙ্গার নিয়ে বহনযোগ্য ব্লুটুথ ডিভাইসে প্রিন্টেড কপিতে স্বাক্ষরের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বিতরণ করার মত হোম সার্ভিস থাকায় জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এছাড়া শুধু ফিঙ্গার প্রিন্ট ব্যবহার করে গ্রাহক টাকা উত্তোলন করার সুযোগকে এখন ঝামেলামুক্ত ও নিরাপদ ব্যাংকিং বলে মনে করছেন।
সান নিউজ/এমআর