নিজস্ব প্রতিবেদক:
খূলনা: চূড়ান্ত পাওনা পরিশোধের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেও খুলনা বিভাগীয় শ্রম পরিচালকের আশ্বাসে ফিরে এসেছেন শিরোমণি শিল্পাঞ্চলের ব্যক্তিমালিকানাধীন মহসেন জুটমিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় মহসেন জুট মিলের প্রধান ফটকের সামনে থেকে পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করেন তারা। এরপর সোনালি জুটমিলের সামনে পথসভা করে খুলনা-যশোর মহাসড়কের ফুলবাড়িগেটের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জনতা মার্কেটের সামনে পথসভা করেন।
পথসভা চলাকালে খুলনা বিভাগীয় শ্রম পরিচালক মিজানুর রহমান শ্রমিকনেতাদের মোবাইল ফোনে আন্দোলনরত বয়োবৃদ্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারণ শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে বাড়ি ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান।
তিনি শ্রমিকদের বলেন, ‘পাওনা পরিশোধের বিষয়ে ইতোমধ্যে মহসেন জুটমিলের মালিকের বিরুদ্ধে আমি বাদী হয়ে শ্রম আদালতে মামলা করেছি। মিলের শ্রমিক কলোনির তিন একর জমি মিলমালিক বিক্রি করে শ্রমিকের পাওনা পরিশোধের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সে বিষয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে জেলা প্রশাসক বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেছেন। সে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে অতিদ্রুত শ্রমিকেরা তাদের নায্য পাওনা বুঝে পাবেন।’
শ্রম পরিচালকের এ আশ্বাসে শ্রমিকরা সংক্ষিপ্ত করে বেলা একটার দিকে তাদের কর্মসূচি শেষ করেন।
ব্যক্তিমালিকানাধীন পাট, সুতা, বস্ত্রকল শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি ও সোনালি জুটমিল সিবিএ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক পরিবারের সন্তান সাইফুল্লাহ তারেকের পরিচালনায় পথসভায় বক্তব্য দেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও মহসেন জুটমিল সিবিএ’র র সাবেক সাধারণ সম্পাদক খান গোলাম রসুল, ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ও অ্যাজাক্স জুটমিল সিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, শ্রমিকলীগ নেতা ও ফেডারেশনের সহ সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত মুন্সি, ওয়াহিদ মুরাদ, আ. সালাম গাজী, মো. কাবিল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইন্জিল কাজী, আশহাফ উদ্দিন, মো. বক্তিয়ার, শেখ এমরান, তোফাজ্জেল হোসেন, আ. ওয়াদুদ, ওবায়দুর রহমান, আ. ওহাব, আমির মুন্সি, এরশাদ আলী, সাংবাদিক মিহির রঞ্জন বিশ্বাস প্রমুখ ।
শ্রমিক নেতা গোলাম রসুল খান বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মহসেন জুটমিলের শ্রমিকদের চূড়ান্ত পাওনা পরিশোধের বিষয়ে বিভাগীয় শ্রম পরিচালকের দপ্তর থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা আসতে হবে। তা না হলে লাগাতার রাজপথ-রেলপথ অবরোধসহ কঠিন কর্মসূচি ঘোষনা করা হবে। শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে মহসেন জুটমিল শ্রমিক কলোনিতে শ্রমিক জনসভায় পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও তিনি জানান।
২০১৪ সালে মিলটি স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়। এর আগে, ২০১৩ সালের ১৯ জুলাই দাপ্তরিক আদেশে মিলটি লে-অফ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। মহসেন জুটমিলের ৩৪৭ জন শ্রমিক ও ৫০ জন কর্মচারীর মোট পাওনা ১০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। শ্রম আইন অনুসারে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে শ্রমিক-কর্মচারীকে ক্ষতিপূরণ, লে-অফ বেনিফিট, গ্র্যাচুইটির পাওনাদি পরিশোধের কথা থাকলেও সাত বছরেও তা করা হয়নি।
সান নিউজ/ এআর