ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম মাবন নিয়ে এলো প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে অনুষ্ঠিত ‘কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স শো’তে (সিইএস) আত্মপ্রকাশ করেছে কৃত্রিম মানব ‘নিয়ন’।
এর প্রধান বৈশিষ্ট হলো এটি তার সঙ্গীর সঙ্গে আচরণ করবে একদম বন্ধু বা পরিবারের সদস্যের মতোই। কষ্টের সময় সান্তনা এবং আনন্দের সময় উৎযাপন করে পরিবারের সদস্যদের মতোই সঙ্গ দিতে পারবে নিয়ন। অনুভূতি প্রকাশ করবে একেবারে মানুষের গলায়। ভাষাও বাঁধা নয় তার কাছে। নিয়ন কথা বলতে পারবে একাধিক ভাষায়।
নিয়নকে ‘যন্ত্রমানব’ বলতে একদমই নারাজ স্যামসং। কারণ হিসেবে তারা বলছে অ্যালেক্সা, বিক্সবি বা সিরির মতো ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট বা যন্ত্রমানবের সঙ্গে কথা বলার মতো অনুভূতি হবে না নিয়নের সঙ্গে কথা বলার সময়। তাই একে ‘কৃত্রিম মানব’ বলেই সস্বোধন করতে চায় তারা।
সংস্থাটির দাবি, ‘নিউ হিউম্যান’ থেকে আসা শব্দ ‘নিয়ন’ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং মেশিন লার্নিংয়ের বলে বলীয়ান এমন এক হিউম্যানয়েড (মানুষের যান্ত্রিক প্রতিরূপ) অবতার, যে তার সঙ্গীর সঙ্গে ভাবের আদান-প্রদান করতে পারবে একেবারে মানুষের মতোই ন্যূনতম সময়ের প্রতিবর্ত ক্রিয়ায় (প্রাণীদেহে নির্দিষ্ট উত্তেজনার প্রভাবে যে তাৎক্ষণিক, স্বতঃস্ফুর্ত ও অনৈচ্ছিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়)।
নিওনকে নিয়ে কাজ চলছে স্যামসাংয়ের স্টার ল্যাবরেটরিতে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, কনজিউমার ইলেট্রনিক্স শো’তে যা হয়েছে তা কম্পিউটারে তৈরি করা প্রজ্ঞা ও অনুভূতির মিশেলে এক কৃত্রিম মানব, যাকে কর্তৃপক্ষ যেকোনো কাজ করানোর জন্য প্রোগ্রামিং করেছেন।
‘রিয়েলিটি, রিয়েল টাইম রেসপনসিভনেস’, থ্রি-আর মিশ্রণে আগামীদিনে যখন এই কৃত্রিম মানব বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসবে, তখন তাকে আরও গ্রাহকবান্ধব, মানবিক এবং চিন্তাশীল করে তোলার পাইলট প্রকল্প ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছে স্যামসাং। চলতি বছরের মাঝামাঝি অনুষ্ঠিতব্য ‘নিয়ন ওয়ার্ল্ড ২০২০’ প্রদর্শনীতে দেখানো হবে নিয়নের মূল চালিকাশক্তি স্পেকট্রা প্রযুক্তির খুঁটিনাটি। তখন দেখা যাবে নিয়নের আরও উন্নত সংস্করণ।
স্যামসাংয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, বিহেভিয়ারাল নিউরাল নেটওয়ার্ক, ইভোলিউশনারি জেনারেটিভ ইন্টেলিজেন্স এবং কম্পিউটেশনাল রিজনিং রিয়ালিটির মিশেলে তৈরি নিয়ন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে পৌঁছে দেবে আগামীদিনের বিজ্ঞানের সিঁড়িতে। যার ফলে এখন নিয়ন শুধু অপারেটিং প্ল্যাটফর্মনির্ভর হলেও আগামীদিনে স্পেকট্রার বলে বলীয়ান হয়ে হিউম্যান ইমোশন, ইন্টেলিজেন্স এবং এক্সপ্রেশনকে পৌঁছে দেবে অন্য স্তরে। যার ফলে কৃত্রিম মানবের সঙ্গে সত্যিকার মানুষের তফাত করা কঠিন হয়ে পড়বে।