সান নিউজ ডেস্ক: এবার ভিনগ্রহে পানির সন্ধান পেয়েছে মহাকাশে নাসার পাঠানো জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র, গ্রহটির ছবিও প্রকাশ করেছে। প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় কারফিউ জারি
সন্ধান পাওয়া এই গ্রহটির নাম রাখা হয়েছে ডব্লিউএসপি-৯৬। মিল্কি ওয়ে নামের যে ছায়াপথে পৃথিবীর অবস্থান, ডব্লিউএসপি-৯৬ নামের এই গ্রহটিও সেই একই ছায়াপথের। এখন পর্যন্ত মিল্কি ওয়ে ছায়াপথের ৫ হাজারটি গ্রহের সন্ধান পেয়েছে নাসা।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী এই গ্রহটির আকাশে পানিভর্তি মেঘ ও কুয়াশা রয়েছে। এই প্রথম পৃথিবীর বাইরের কোনো গ্রহে পানির সন্ধান পাওয়া গেল।
একই ছায়াপথে অবস্থান হলেও পৃথিবী থেকে বেশ দূরে ডব্লিউএসপি-৯৬। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের হিসেব অনুযায়ী, পৃথিবী থেকে ১ হাজার ১৫০ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে এই গ্রহটি। অর্থাৎ, পৃথিবী থেকে আলোর গতিবেগে ছুটলে ডব্লিউএসপি-৯৬ তে পৌঁছাতে সময় লাগবে ১ হাজার ১৫০ বছর। আলোর গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে ১ লাখ ৮৬ হাজার ২৮৫ কিলোমিটার।
আরও বলা হয়েছে, ডব্লিউএসপি-৯৬ গ্রহ হলেও এটিতে মাটি, পাথর বা কোনো কঠিন বস্তুর অস্তিত্ব নেই। সৌরজগতের গ্রহ শনি, বৃহস্পতি ও ইউরেনাসের মতো এটিও বিশাল, উত্তপ্ত ও স্ফীত একটি গ্যাসের গোলাক। গ্রহটির তাপমাত্রা ৫৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতির চেয়েও ১ দশমিক ২ গুণ বড় এই ডব্লিউএসপি-৯৬। তবে গ্রহটির ভর বৃহস্পতির ভরের থেকে অর্ধেকেরও কম। সূর্যের মতো দেখতে একটি নক্ষত্রকে ঘিরে ঘুরছে এই গ্রহটি। ওই নক্ষত্রটি থেকে ডব্লিউএসপি-৯৬ গ্রহটির দূরত্বও বেশ কম।
আরও পড়ুন: বিশ্বজুড়ে মৃত্যু বেড়েছে
আমাদের সৌরজগতে সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ বুধ। যে নক্ষত্রটিকে কেন্দ্র কেন্দ্র করে ডব্লিউএসপি-৯৬ ঘুরছে, সেটির থেকে গ্রহটির দূরত্ব সূর্য থেকে বুধের দূরত্বের নয়ভাগের একভাগ। পৃথিবীর হিসেবে নক্ষত্রটির চারদিকে একবার ঘুরে আসতে ডব্লিউএসপি-৯৬’র সময় লাগে সাড়ে ৩ দিন।
নাসার বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিশাল আকৃতি, সংক্ষিপ্ত কক্ষপথ, স্ফীত বায়ুমণ্ডল ও মহাজাগতিক দূষণ থেকে মুক্ত ডব্লিউএসপি-৯৬’ বায়ুমন্ডল বিষয়ক পর্যবেক্ষণের জন্য একটি আদর্শ গ্রহ।’
এ পর্যন্ত মহাবিশ্বে যত টেলিস্কোপ পাঠানো হয়েছে, সেসবের মধ্যে নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ সবচেয়ে শক্তিশালী। টেলিস্কোপটি তৈরি ও মহাবিশ্বে পাঠাতে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার কোটি ডলার। গত বছর ২৫ ডিসেম্বর পাঠানো হয় এই টেলিস্কোপ।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান
অতি সম্প্রতি মহাবিশ্বের সবচেয়ে পুরনো কিছু ছবি পাঠিয়েছে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। সোমবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করা হয়েছে সেসব ছবি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজে উপস্থিত ছিলেন সেই সংবাদ সম্মেলনে।
নাসার সেসব ছবি প্রকাশের পর রীতিমতো শোরগোল পড়ে গেছে বিশ্বের বৈজ্ঞানিক মহলে।
সান নিউজ/এনকে