নিজস্ব প্রতিবেদক: মোবাইল অপারেটরগুলোর ট্যাক্স ও রাজস্ব ফাঁকি ঠেকাতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ৭৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকায় যন্ত্র কেনা হচ্ছে, এর মাধ্যমে ডিজিটালি মনিটরিং করা হবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় আশা করছে, এ যন্ত্র বসানো হলে এক বছরেই আগের চেয়ে ১০ গুণ বেশি রাজস্ব আদায় হবে।
মোবাইল গ্রাহকদের সংগঠন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, যন্ত্রটি বসানোর পর সেটা যথাযথ ব্যবহারে নজর দিতে হবে। টেম্পারিং বা হ্যাকিং ঠেকাতে না পারলে যন্ত্রটি বসানোর ফল পাওয়া যাবে না।
জানা গেছে, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) মোবাইল অপারেটরগুলোর কার্যক্রম তদারকি করতে যন্ত্রপাতি কেনা সংক্রান্ত এক চুক্তি করেছে। কানাডাভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান টিকেসি টেলিকমের সঙ্গে চুক্তি করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটিকে চুক্তি স্বাক্ষরের ১৮০ দিনের মধ্যে টেলিকম মনিটরিং সিস্টেম স্থাপনের কাজ শেষ করতে হবে। সিস্টেমটি বাস্তবায়িত হলে মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ এবং রিপোর্টিং প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয় হবে। একইসঙ্গে প্রয়োজনীয় সব তথ্য বাস্তব সময়ে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে। এতে ভয়েস ও ডাটা ট্যারিফ, নেটওয়ার্ক ব্যবহার এবং মান সম্পর্কিত তথ্য সর্বোপরি বিটিআরসির প্রাপ্য রাজস্ব সম্পর্কে নিয়মিত ও নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রাপ্তি নিশ্চিত হবে। আর সরকারের কাছে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পেশ ব্যবস্থা আরও দক্ষ এবং দ্রুত হবে।
এর ফলে শহর এলাকার পাশাপাশি গ্রামাঞ্চল, দ্বীপ, হাওর-বাঁওড়, উপকূলীয় অঞ্চল ও দুর্গম এলাকার টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের প্রকৃত অবস্থা তাৎক্ষণিক যাচাই করা সম্ভব হবে। অপারেটরদের নেটওয়ার্কের লাইভ মনিটরিংয়ের মাধ্যমে নেটওয়ার্কের সেবার মান আরও সুচারুভাবে যাচাই করা যাবে এবং গ্রাহক সেবার প্রকৃত অবস্থাও জানা যাবে।
অপারেটররা যেসব ট্যারিফ বাস্তবায়ন করছে এবং এসব ট্যারিফ প্যাকেজ বিটিআরসির অনুমোদিত কি-না অথবা গ্রাহকরা অন্যায্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কি-না তা যাচাই করা সম্ভব হবে এবং এ বিষয়ক অভিযোগসমূহের নিষ্পত্তি কার্যকরভাবে করা সম্ভব হবে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে নেটওয়ার্ক ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। সরকারের বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তগ্রহণ এবং নানাবিধ অবকাঠামোগত ব্যবস্থা ও সেবার সঠিক মানোন্নয়নে সিস্টেমটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, এই যন্ত্র বসানোর সুবিধা হলো, এটার মাধ্যমে সবকিছু মনিটরিং করা যাবে। মোবাইল কোম্পানিগুলো আমাদেরকে ট্যাক্স দেয়, রেভিনিউ (রাজস্ব) শেয়ার দেয়। সেটা সরকারের তহবিলে আমরা জমা দিই। এটা তো ওদের মতো করে, ওদের ইচ্ছা অনুযায়ী দেয়। আমরা তো এ ব্যাপারে কিছু জানি না। তারা কিসের ওপর ভিত্তি করে দিচ্ছে- এটা সত্য না মিথ্যা জানি না। তাই এই যন্ত্র বসানোর ফলে হয়তো দেখা যাবে প্রথম বছরেই আগের বছরের ১০ গুণ রেভিনিউ আদায় করেছি। এখন অনেক ফাঁকি চলে। এই ফাঁকিটা বন্ধ হওয়ার পর আউটপুট দেখতে পাবেন।
সাননিউজ/এমআর