টেকলাইফ ডেস্ক:
কোনো ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত অপর কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে প্রথম ব্যক্তিকে সতর্ক বার্তা দিবে অ্যাপ। এমনই এক প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছে তথ্য প্রযুক্তির দুই বিশ্ব জায়ান্ট অ্যাপল ও গুগল।
করোনার বিস্তার মোকাবিলায় নিজেদের প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বব্যাপী করোনার বিস্তার রোধ করতে চায় এই দুই টেক জায়ান্ট।
সম্প্রতি এক যৌথ বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠান দু’টি এমনটাই ঘোষণা দেয়।
ইরিমধ্যে সে প্রযুক্তি তৈরিও করে ফেলেছে প্রতিষ্ঠান দু’টি। যখন দু’জন ব্যক্তি একে অপরের কাছাকাছি আসবেন এবং কিছু সময় অবস্থান করবেন বা কথা বিনিময় করবেন তখন ব্লু-টুথ প্রযুক্তির সাহায্যে দুই ব্যক্তির মোবাইল ফোনে একটি ‘কি-কোড’ আদান-প্রদান হবে। এদের মধ্যে একজন পরবর্তী সময়ে কোভিড-১৯ পজিটিভ হলে তার অনুমতিসাপেক্ষে সেই তথ্য একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেজে চলে যাবে। অন্যদিকে সেই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তির স্মার্টফোনও যদি ওই ডাটাবেজের সঙ্গে যুক্ত থাকে তাহলে তাদের কাছে একটি সতর্ক বার্তা চলে যাবে।
এদিকে করোনা বিষয়ে ইউনিফর্ম প্ল্যাটফর্ম তৈরিতেও কাজ করবে অ্যাপল ও গুগল। অর্থাৎ এ বিষয়ে যে অ্যাপ তৈরি করবেন ডেভেলপাররা তা কাজ করবে অ্যাপলের আইওএস ও গুগলের অ্যান্ড্রয়েড- এই দুই অপারেটিং সিস্টেমেই।
তবে প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন থার্ড পার্টি অ্যাপ যারা করোনা নিয়ে কাজ করছে সেগুলো যেন ঠিকঠাক কাজ করে সে বিষয়ে কাজ করবে তারা।
তবে তারা চাইছে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা যেন কোনো অ্যাপ ইন্সটল না করেই করোনা সতর্কতা বার্তা পান। এর কারণ হিসেবে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিভিন্ন থার্ড পার্টি অ্যাপসে ব্যবহারকারীকে অনেক ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়া লাগতে পারে। আর এটি পছন্দ নয় অনেক ব্যবহারকারীর। সেক্ষেত্রে অনেকেই এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত হবেন না। আর তাই অ্যাপল-গুগল চাইছে এমন একটি প্রযুক্তি যার মাধ্যমে অ্যাপ ইন্সটল ছাড়াই এবং নাম-পরিচয়ের মতো ব্যক্তিগত তথ্য না দিয়েই যেন সবাইকে করোনা সম্পর্কে সতর্ক করা যায়।
এদিকে অ্যাপল-গুগলের এই প্রযুক্তিগত উদ্যোগ নিয়ে বেশ আগ্রহী আন্তর্জাতিক মহল। তবে উদ্যোগটির বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখতে কিছু সময় চাইছেন তারা।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, এই নতুন উদ্যোগটি বিবেচনার জন্য তার প্রশাসনের কিছু সময় দরকার। এটা বেশ আগ্রহী হওয়ার মতো একটা বিষয়, কিন্তু বহু মানুষের উদ্বেগ আছে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ব্যাপার নিয়ে। আমাদের এই ব্যাপারটা ভালোভাবে পরীক্ষা করে দেখতে হবে এবং তারপর আমরা এ বিষয়ে আপনাদের জানাবো।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডাটা প্রোটেকশন সুপারভাইজার এক বিবৃতিতে বলেন, এই উদ্যোগটির ব্যাপারে আরও পর্যালোচনার দরকার। তবে প্রাথমকিভাবে মনে হচ্ছে এরকম একটি প্রযুক্তিতে যা যা থাকা দরকার, এটিতে তা আছে। যেমন ব্যবহারকারীর অধিকার, ডাটা প্রোটেকশন ও পুরো ইউরোপজুড়ে যাতে এটি কাজ করতে পারে, সেই বিষয়টি।
তবে অনেকে বলছেন, এই উদ্যোগের সাফল্য নির্ভর করবে যথেষ্ট মানুষকে ভাইরাসের জন্য পরীক্ষা করা হচ্ছে কিনা তার ওপর।
সান নিউজ/সালি