ক্রীড়া প্রতিবেদক
অনেকদিন পর দেশের ক্রিকেট দেখল আরেকটি ট্রিপল সেঞ্চুরি। দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ (বিসিএল) খেলতে নেমেই ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে নিজেকে আবারও জানান দিলেন দেশসেরা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। দ্বিতীয় কোন বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে এ কীর্তি গড়লেন তামিম।
বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তামিমের আগে একমাত্র ট্রিপল সেঞ্চুরি ছিলো রকিবুল হাসানের। ২০০৭ সালে জাতীয় লিগের ম্যাচে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে বরিশালের হয়ে সিলেটের বিপক্ষে ৩১৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন ডানহাতি রকিবুল।৬৬০ মিনিট ৬০৯ বলে ৩৩ বাউন্ডারিতে সাজানো ছিল তার ঐ ট্রিপল সেঞ্চুরি।
রকিবুলের প্রায় ১৩ বছর পর, ২০২০ সালে এসে দেশের পক্ষে দ্বিতীয় ট্রিপল সেঞ্চুরি করলেন তামিম ইকবাল। প্রায় সাড়ে নয় ঘণ্টা ব্যাটিং করে ৪০৭ বলে ৪০ চারের মারে তিনশ রান পূরণ করেন তামিম। তার পুরো ইনিংসে নেই একটিও ছয়ের মার।
আজকের খেলায় মাঠে নেমে পূর্বাঞ্চলের ইনিংসের ১৩৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আলতো করে কবজির মোচড়ে শর্ট মিড উইকেটের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েই ট্রিপল সেঞ্চুরি ক্লাবে প্রবেশ করেন তামিম।
৫৬০ মিনিটের এ ইনিংস এ ১০৯টি সিঙ্গেল, ১৪টি ডাবল, ১টি ট্রিপল ও ৪০টি বাউন্ডারি ছিল।
আজ রোববার তৃতীয় দিনের শুরুতে ২৮১ বল খেলে ২২২ রানে অপরাজিত ছিলেন তামিম। খানিক রয়েসয়ে খেলে ১২৬ বল মোকাবেলা করে বাকি ৭৮ রান করেন তিনি। তবু আড়াইশ থেকে তিনশতে যেতে ৯২টি বল লেগেছে তামিমের। যা কি না তার এ ইনিংসের প্রথম পাঁচ ফিফটির চেয়ে ধীরতম।
আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করতে থাকা তামিম ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরিকে ট্রিপলে পরিণত করতে খুব একটা সময় নেননি। মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের ষোড়শ শতক পূর্ণ করতে তামিম খেলেন ১২৬ বল। ১৪ চারে মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। ১০০ থেকে ব্যক্তিগত সংগ্রহকে ২০০তে পরিণত করতে এরপর খেলেন আরও ১১৬ বল। মোট ২৪২ বল মোকাবেলায় ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ২১৩ রানে অল-আউট হয় মধ্যাঞ্চল। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৮ রান আসে সাইফ হাসানের ব্যাট থেকে।
পূর্বাঞ্চলের বোলারদের মধ্যে তাইজুল ইসলাম নেন সর্বোচ্চ পাঁচ উইকেট। ২২ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৮ মেডেনের বিপরীতে ৫৮ রান দিয়ে এ সাফল্যর দেখা পান তিনি।
তাছাড়া আবু জায়েদ রাহী ও নাঈম হাসান লাভ করেন দুটি করে উইকেট। বাকি উইকেটটি নিজের নামের পাশে যোগ করেন হাসান মাহমুদ।
একনজরে তামিম ইকবালের ৩০০
পঞ্চাশ রান - ৭৬ বল, ১০৫ মিনিট, ৭ চার
একশ রান - ১২৬ বল, ১৭১ মিনিট ১৪ চার
দেড়শ রান - ১৮০ বল, ২৪৫ মিনিট, ২১ চার
দুইশ রান - ২৪২ বল, ৩০২ মিনিট, ২৯ চার
আড়াইশ রান - ৩১৫ বল, ৪৪৯ মিনিট, ৩৪ চার
তিনশ রান - ৪০৭ বল, ৫৬০ মিনিট, ৪০ চার
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ইনিংস
রকিবুল হাসান - ৩১৩* রান (২০০৬-০৭)
তামিম ইকবাল - ৩০০* রান (২০১৯-২০)
নাসির হোসেন - ২৯৫ রান (২০১৭-১৮)
মার্শাল আইয়্যুব - ২৮৯ রান (২০১২-১৩)
মোসাদ্দেক হোসেন - ২৮২ রান (২০১৪-১৫)
সান নিউজ/সালি