স্পোর্টস ডেস্ক : আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রতিটি ম্যাচেই যেন রেকর্ড ভাঙতে আর নতুন করে রেকর্ড গড়তে মাঠে নেমেছিল লাল সবুজেরা। তারই ধারাবাহিকতায় পেসারদের অগ্নিঝড়া বোলিং আর দুই ওপেনারের সাবলীল ব্যাটিংয়ে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে দশ উইকেটের বিশাল জয় পেল বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহসে এই প্রথম কোনো উইকেট না হারিয়েই ম্যাচ জিতল টাইগাররা।
আরও পড়ুন : তাপমাত্রা বাড়ার পূর্বাভাস
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২৮ ওভার ১ বল খেলে ১০১ রানে অলআউট আয়ারল্যান্ড।
যেখানে সর্বোচ্চ ৩৬ রান এসেছে ক্যাম্পারের ব্যাট থেকে। রানে দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পেরেছেন মাত্র দুই ব্যাটার। আর রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নিয়েছেন তিনি ব্যাটার। বাংলাদেশের হয়ে ৩২ রানে ৫ উইকেট শিকার করে দিনের সেরা বোলার তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ। এটি তার ক্যারিয়ারেরও সেরা বোলিং ফিগার।
জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৩.১ ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় বাংলাদেশ। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল করেন ৪১ আর লিটন দাস হাঁকান অর্ধশতক।
এদিন ব্যাটিংয়ে শুরু থেকেই সাবলীল ছিল বাংলাদেশ। সিরিজজুড়ে রান খরায় ভুগতে থাকা তামিম ইকবাল এদিন ইনিংসের প্রথম ওভারেই বলকে বাউন্ডারি ছাড়া করে দেন ইতিবাচক শুরুর বার্তা। অপর প্রান্তে লিটন দাসও পান দুর্দান্ত শুরু। এই ওপেনারও চার হাঁকিয়ে রানের খাতা খোলেন।
আরও পড়ুন : রাহুল গান্ধীর ২ বছরের কারাদণ্ড
দুই ওপেনারের ব্যাটে ৭ ওভারের আগেই দলীয় অর্ধশতক পূর্ণ করে বাংলাদেশ। একই গতিতে শতকও পেরোয় টাইগাররা। এমন দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন অধিনায়ক তামিম।
এরআগে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই বাংলাদেশি পেসারদের তোপের মুখে পড়ে দুই আইরিশ ওপেনার স্টিফেন ডোহেনি ও পল স্টার্লিং। শুরু থেকেই আইরিশদের রানের চাকা আটকে রাখলেও উইকেটের দেখা পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় পঞ্চম ওভার পর্যন্ত। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে প্রথম আঘাত হানেন টাইগার পেসার হাসান মাহমুদ। মাত্র ৮ রানে ওপেনার স্টিফেন ডোহেনিকে ক্যাচ আউটের ফাঁদে ফেলেছেন তিনি।
হাসানের সঙ্গে একই স্পেলে বল করা পেসার তাসকিন আহমেদও চেপে ধরেছেন আইরিশ ব্যাটারদের। তার প্রথম তিন ওভারে এসেছে মাত্র ৬ রান। এরপর নবম ওভারে এসে নিজের ও দলের দ্বিতীয় উইকেট নিয়েছেন হাসান। আরেক ওপেনার পল স্টার্লিংকে এবার তিনি এলবিলব্লিউর ফাঁদে ফেলেছেন। ১২ বলে মাত্র সাত রানে করেন স্টার্লিং।
এরপর অষ্টম ওভারে এসে আইরিশ দূর্গে আবারো আঘাত হনেন হাসান। এবার শূন্য রানেই বিদায় করেন হ্যরি ট্যাকটরকে। এই ব্যাটারকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলে সাজঘরে ফেরান তিনি। হাসান মাহমুদের পর উইকেট শিকারে যোগ দেন তাসকিন আহমেদ। ইনিংসের নবম ওভারে আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নিকে বিদায় করেন এই টাইগার পেসার।
আরও পড়ুন : এলএনজি কিনছে সরকার
দলীয় রান ত্রিশ পেরোনোর আগেই টপ অর্ডার ব্যাটারদের হারিয়ে যখন ধুঁকছিল আয়ারল্যান্ড, তখন টাকারকে সঙ্গে দলের হাল ধরেন কুর্টিসব ক্যাম্পার। তাদের দৃঢ়তায় আইরিশরা আর কোনো উইকেট না হয়ারিয়ে অর্ধশতক পূর্ণ করে।
তবে এই জুটিকে খুব বেশি দূর এগোতে দেননি এবাদত হোসেন। ১৯তম ওভারের আক্রমণে এসে তাসকিন-হাসানদের সঙ্গে উইকেট শিকারে যোগ দেন এই পেসার। ওভারের পঞ্চম বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে টাকারকে কে সাজঘরে পাঠান ইবাদত। ২৮ রান করে এই ব্যাটার ফিরলে ভাঙ্গে ৪২ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি।
টাকারের আউটের পর ক্রিজে নামেন জজ ডকরেল। ওভারের ষষ্ট বলে স্বপ্নের মতো এক ডেলিভারী করলেন এবাদত। অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে হালকা ইনসুইয়ে পরাস্ত ডকরেল। এঁটেই তার অফ স্টাম্প কয়েকটা ডিগবাজি খেয়ে কয়েক হাত ধূরে গিয়ে পড়লো। ফলে নামের পাশে রান যোগ করার আগেই বিদায় ডকরেলের।
এরপর ২২তম ওভারে আক্রমণে ফিরে জোড়া শিকার ধরেন তাসকিন। ওভারের প্রথম বলে নাসুমের হাতে ধরা পড়েন অ্যান্ডু ১ রান করা ম্যাকব্রাইন। এক বল পর সাজঘরে ফেরেন মার্ক অ্যাডায়ারও। ফলে ইনিংসের ২২ ওভারে ৭৯ রান তুলতেই ৮ উইকেট হারায় আইরিশরা।
আরও পড়ুন : দুর্নীতিকে ঘৃণা করতে হবে
এরপর আইরিশদের পক্ষে একাই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন ক্যাম্পার। এই অলরাউন্ডার এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করেছেন। কিন্তু সঙ্গীর অভাবে খুব একটা পথ হাটতে পারেননি। তাকেও থামতে হয় ৩৬ রানে। এরপর ব্যাক্তিগত ৩ রানে দলের শেষ ব্যাটার হিসেবে বিদায় নেন গ্রাহাম হুম। ফলে ২৮ ওভার ১ বল খেলে ১০১ রানে অলআউট হয় আয়ারল্যান্ড।
আয়ারল্যান্ড - ১০১ /১০ (২৮.১ ওভার), বাংলাদেশ - ১০২/০ (১৩.১ ওভার)
বাংলাদেশ ১০ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা - হাসান মাহমুদ।
সিরিজ সেরা - মুশফিকুর রহিম
বাংলাদেশের ২-০ তে সিরিজ জয়।
সান নিউজ/জেএইচ