সান নিউজ ডেস্ক: বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার নেইমার ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ব্রাজিলের জার্সি পরার গর্ব এবং ভালোবাসা বোঝানো সম্ভব নয়। আমাকে যদি ঈশ্বর জিজ্ঞেস করেন কোন দেশে জন্ম নিতে চাই, আমি বলব ব্রাজিল। আমি জীবনে কিছু সহজে পেয়ে গিয়েছি, এমনটা নয়।
আরও পড়ুন: তিউনিশিয়াকে হারিয়ে টিকে রইল অস্ট্রেলিয়া
তিনি আরও বলেন, আমাকে সব সময় নিজের স্বপ্ন এবং লক্ষ্যের দিকে দৌড়তে হয়েছে। কখন কারো খারাপ চাইনি। সকলকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। আমার জীবনের আরও একটা কঠিন সময় চলে এল। আবার একটা বিশ্বকাপেই চোট পেলাম। হ্যাঁ, চোট রয়েছে আমার। কষ্ট হচ্ছে। তবে ফিরে আসার সুযোগও রয়েছে। সেই চেষ্টা আমি করব। দেশ, সতীর্থ এবং নিজের জন্য ফিরে আসতেই হবে। আমাকে এইভাবে মারার জন্য শত্রুদের খুব বেশি অপেক্ষা করতে হবে না। আমি ঈশ্বরের পুত্র, তার উপর বিশ্বাস আছে আমার।
আরও পড়ুন: শর্ত সাপেক্ষে অনুমতি দেওয়া হবে
ফিফা বিশ্বকাপের ২২তম আসরে নিজেদেরে প্রথম ম্যাচে দারুণ ছন্দে ছিলেন ব্রাজিলের ‘পোষ্টার বয়’ নেইমার। সার্বিয়ার বিপক্ষে গোল না করলেও দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচ পরিচালনা করে যাচ্ছিলেন। আক্রমণ থেকে রক্ষণভাগে নেইমারের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। কিন্ত সেই সুখ নেইমারের কপালে খুব বেশি সময় রইল না। ২-০ গোলে জেতা সেই ম্যাচে জয় এনে দেন রিচার্লিসন। তবে ছায়ার মত লেগে থাকা চোট আবার ফিরে এসেছে নেইমারের জীবনে। ফলে গ্রুপপর্বের ম্যাচ থেকে ছিটকে গেলেন তিনি, তার সার্ভিস পাবেন না তিতে।
ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার দেশের হয়ে খেলতে না পেরে স্বভাবতই ভেঙে পড়েছেন। সেটা তার লেখায় প্রকাশ পেয়েছে। ইনস্টাগ্রামে নিজের যন্ত্রণা ও ফিরে আসার বার্তা দিয়েছেন পিএসজি তারকা।
আরও পড়ুন: দেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে
কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে সার্বিয়ার রক্ষণে ছিল দীর্ঘকায় ফুটবলার। পাওয়ার ফুটবলের উপর ভর করে বারবার নেইমারকে আটকে দিচ্ছিল হেড কোচ ড্রাগন স্টোকোভিচের শীর্ষরা। শারীরিক সক্ষমতা দিয়ে নেইমারের খেলা নষ্ট করে দেওয়ার সঙ্গে তাকে চার্জ করতেও দেখা গিয়েছিল। প্রথমার্ধেই পাঁচবার ফাউল করা হয়েছিল নেইমারকে।
পুরো ম্যাচ জুড়ে নেইমারের বিরুদ্ধে মোট ফাউলের সংখ্যা ১২। যদিও ৮০ মিনিট পর্যন্ত নিজের ঝলক দেখিয়েছিলেন। ম্যাচে কয়েকবার চোরা স্প্রিন্ট টেনে বল পায়ে বিপক্ষের বক্সে পৌঁছেও গিয়েছিলেন।
কিন্তু বল জালে রাখতে পারেননি। পিএসজি তারকাকে ভয়ংকর ট্যাকেল করেন সার্বিয়ার সেন্টার ব্যাক নিকোলা মিলেনকোভিচ। সেইজন্য ৮০ মিনিটের মাথায় নেইমারকে চলে আসতে হয় সাইডলাইনে। ম্যাচের বাকি সময়ে নেইমারের গোড়ালিতে ছিল আইস প্যাক। খেলার শেষের পর খুঁড়িয়েই নেইমার ফেরেন লকার রুমে।
আরও পড়ুন: মহিলা লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা
২০১৪ সালের বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে খেলার সময় চোট পেয়েছিলেন নেইমার। ভার্টিব্রাতে গুরুতর চোট লাগার জন্য তাঁকে স্ট্রেচারে শুয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল। এরপর নিজের দেশে সেমি ফাইনালে জার্মানির বিরুদ্ধে ১-৭ গোলে হারের লজ্জা হজম করেছিল ব্রাজিল। সেই হারের যন্ত্রণা এখনও ভোলেননি কোনও সেলেকাও সমর্থক।
উল্লেখ্য, ব্রাজিল গ্রুপ পর্যায়ে পরের ম্যাচ খেলবে সুইজারল্যান্ডের সাথে ২৮ নভেম্বর। আর গ্রুপের শেষ ম্যাচ ৩ ডিসেম্বর ক্যামেরুনের বিপক্ষে। এই দুই ম্যাচে নেইমারহীন ব্রাজিল খেলবে।
প্রসঙ্গত, নেইমার ১৯ বছর বয়সে ২০১১ এবং ২০১২ সালে দক্ষিণ আমেরিকার বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হন। ২০১১ সালে নেইমার ফিফা ব্যালন ডি'অরের জন্য মনোনয়ন পান। তবে ১০ম স্থানে আসেন। তিনি ফিফা পুরস্কারও অর্জন করেন। তিনি সর্বাধিক পরিচিত তার ত্বরণ, গতি, বল কাটানো, সম্পূর্ণতা এবং উভয় পায়ের ক্ষমতার জন্য। তার খেলার ধরনের কারণে সমালোচকদের প্রশংসা ও মিডিয়া কাভারেজ পেয়েছেন এবং তাকে সাবেক ব্রাজিলীয় ফুটবলার পেলের সঙ্গে তুলনা করা হয়।
সান নিউজ/এনকে