স্পোর্টস ডেস্ক : সাফ জয়ী অধিনায়ক সাবিনা খাতুন সংবাদ সম্মেলন কক্ষে চেয়ার ছেড়ে দিলেন নারী জাতীয় ফুটবল দলের কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটনকে। এমন সময় হঠাৎ করেই এলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, এমপি। ফলে আসন ছেড়ে দিতে বাধ্য হলেন ছোটন।
আরও পড়ুন : টিভিতে আজকের খেলা
দুজনকে পেছনে দাঁড়াতে বললেন পাশ থেকে একজন। অবশেষে মঞ্চের পেছনে দুজনের জায়গা হয়। সংবাদ সম্মেলনের বাকিটা সময় তারা সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকেন।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাফ জয়ীদের বরণ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনের চিত্র এটি।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই ছিল লেজে-গোবড়ে অবস্থা। এরই মাঝে রেগে গিয়ে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন সম্মেলনস্থল দু’বার ছেড়ে যেতে চান। পরিস্থিত শান্ত হলে অবস্থান করেন তিনি।
বাফুফের সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সহ-সভাপতিদের দখলে ছিল মঞ্চ। পরে অবশ্য যোগ দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব।
আরও পড়ুন : যুদ্ধ অবসানে প্রধানমন্ত্রীর ছয় দফা
সম্মেলন কক্ষে সবাই বসার আসন পেলেও নেপাল থেকে ঢাকা আসার পর টানা প্রায় ৫ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছাদখোলা বাসে বাফুফে ভবনে আসা সদ্য সাফ বিজয়ী সাবিনাদের জন্য ছিল না কোনো আসন।
সাফ বিজয় পরবর্তী এমন উৎসবের দিনেও বাফুফের আয়োজনে ছিল ঘাটতি। বাড়তি কোনো আলোর ব্যবস্থা পর্যন্ত করা হয়নি নিজেদের আঙিনায়।
অথচ গত দু’দিন দেশের গণমাধ্যমের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল সাফ জয়ী নারী ফুটবল দল। তাহলে বাফুফে কি জানতেন না এদিন জনসমাগম হবে? তবুও ছিল না কোনো ব্যবস্থা!
আরও পড়ুন : বিক্ষোভে উত্তাল ইরান, নিহত ৯
বাফুফে কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। যা ছিলো দেশের সব গণমাধ্যমের কর্মীদের জন্য অপ্রতুল। যদিও ছাদখোলা বাসের ব্যবস্থা করা হয়। তবুও অব্যবস্থাপনার চিত্রই ফুটে সবার চোখে ফুটে উঠেছে।
তবে দায়সারা উত্তর দিয়েই সমাধান খুঁজে নিলেন বাফুফে কর্তা ব্যক্তিরা।
বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদী ছোট জায়গায় সংবাদ সম্মেলন নিয়ে বলেন, ‘আমরা আরও বড় জায়গায় সংবাদ সম্মেলন করব, সংবর্ধনা দেব। এখন তাদের বরণের সময়।’
তিনি অন্ধকরাচ্ছন্ন বাফুফে ভবন নিয়ে সোজাসাপ্টা বলে দিলেন, ‘আজকের দিনটি হলো আমাদের গর্বের দিন, আনন্দের দিন। এই আনন্দের মধ্যে আলো আছে। তারা যে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এটাইতো আলো।’
আরও পড়ুন : ঢাকা আসছেন প্রণয় কুমার ভার্মা
সাফ বিজয়ী অধিনায়ক সাবিনা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘অবশেষে আমরা স্বপ্নটা পূরণ করতে পেরেছি। আপনারা সব সময় পাশে ছিলেন, সমর্থন দিয়েছেন। সেজন্য আপনাদের ধন্যবাদ। আশা করি সামনেও সমর্থন দেবেন এবং আমরা দেশকে আরও ভালো ভালো শিরোপা উপহার দেবো।’
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে নেপাল থেকে ঢাকায় পৌঁছায় ফুটবল দল। সেখানে তাদের অভ্যার্থনা জানান যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। এরপর ছাদ খোলা বাসে করে প্রায় ৫ ঘণ্টার যাত্রা শেষে বাফুফেতে আসেন। এখানে তাদের বরণ করে নেন বাফুফে সভাপতি সভাপতি সালাউদ্দিন। এরপর শুরু হয় সংবাদ সম্মেলন!
আরও পড়ুন : এসপি হলেন ৪৭ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
বাফুফে সভাপতি সালাউদ্দিন সংবাদ সম্মেলনে এই ফুটবল দলকে পরবর্তী পর্যায়ে নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে বলেন, দক্ষিণ এশিয়াতো জয় হলো; এবার সাবিনারা এশিয়ার বিপক্ষে লড়বে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এশিয়া জয় করে দেশে ফিরলে বিজয়ী ফুটবলার-কোচদের মঞ্চে জায়গা হবেতো?
কারণ, যাদের কারণে এবং যাদের জন্য এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন তারাই কেন জায়গা পান না। কেন তাদেরকে চেয়ার ছেড়ে দিতে হয়।
প্রসঙ্গত, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন নেপাল যাননি, মেয়েদেরকে আনতে যাননি বিমানবন্দরে। কারণ, মেয়েরা যেন ঠিক লাইম লাইট পায়!
কিন্তু নিজেদের ঘরেইতো মেয়েরা সঠিক আলো পায়নি। এ যেন বাতির নিচে অন্ধকার!
সান নিউজ/এইচএন