স্পোর্টস ডেস্ক : গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ পর্ব থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত এ ফরম্যাটে ১২টি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ দলের ঝুলিতে জয় মাত্র ১টি। পরাজয়ের বৃত্ত ভাঙতে জিম্বাবুয়ে সফরে অধিনায়কত্বে পরিবর্তন এনে নুরুল হাসান সোহানকে নতুন করে দায়িত্ব দেওয়া হয় । দুর্বল দলকে পেয়েও ৩ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে পরাজয় টাইগারদের।
আরও পড়ুন : বাংলাদেশ সফরে আসছেন সিসন
জিততে ভুলে যাওয়া বাংলাদেশ দলকে পেয়ে সিকান্দার রাজার বিধ্বংসী ফিফটিতে ৩ উইকেট হারিয়ে ২০৫ রানের পুঁজি স্বাগতিকদের। ২০৬ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতে সমান তালে পাল্লা দিয়ে ছুটলেও বাংলাদেশের ইনিংস থামে ৬ উইকেটে ১৮৮ রানে। এতে ১৭ রানে পরাজয় সফরকারীদের। ফলে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশ দল লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতেই ওপেনার মুনিম শাহরিয়ারকে হারিয়ে বসে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া এই তরুণ পয়েন্টে ক্যাচ দেন। ৮ বলে ৪ রান করেন তিনি। সেই ধাক্কা কাটিয়ে লিটন দাস আর এনামুল হক বিজয়ের ব্যাটে পাওয়ার-প্লের ৬ ওভারে ৬০ রান তোলে সফরকারীরা। তবে এই দুইজন তালগোল পাকিয়ে বসেন ইনিংসের সপ্তম ওভারে।
লিটন কুমার দাস উইলিয়ামসের বলে শর্ট ফাইন লেগে সহজ ক্যাচ দেন। কিন্তু উদযাপন করতে গিয়ে ফেলে দেন এনগারাভা। লিটন না বুঝে হাঁটা দেন ড্রেসিংরুমের দিকে। এদিকে নন স্ট্রাইক প্রান্তে উইলিয়ামসকে বল পাঠিয়ে দেন এনগারাভা। সঙ্গে সঙ্গে উইকেট ভেঙে দেন উইলিয়ামস। ৬ চারে ১৯ বলে ৩২ রান করে ফেরেন তিনি।
আরও পড়ুন : মনীষা পাকিস্তানের প্রথম হিন্দু নারী ডিএসপি
টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা বিজয় ২৭ বল খেলে ২৬ রান করে আউট হন। আফিফ হোসেন দ্রুত রান তুলতে গিতে ফেরেন ৮ বলে ১০ রানে।
তবে একপ্রান্ত আগলে খেলেন তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত, সোহানে সঙ্গে ২১ বলে ৪০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে খেলায় রাখেন তিনি। ইনিংসের ১৬তম ওভারে থামে শান্তর ব্যাট। ৩ চার, ১ ছয়ে ২৫ বলে করেন ৩৭ রান।
১৬ ওভারে ১৪৬ রানে ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশের তখন জয়ের জন্য ২৪ বলে প্রয়োজন ৬০ রান। সে মুহূর্তে দাঁড়িয়ে নিজ ব্যাটে ঝড় তুলে খানিক আশার সঞ্চার জোগান সোহান।
আরও পড়ুন : ফের বেড়েছে মৃত্যু ও শনাক্ত
তবে মোসাদ্দেক হোসেন ১০ বলে ১৩ রান করে আউট হলে কাজে আসেনি নতুন অধিনায়কের ২৬ বলে অপরাজিত ৪২ রানের ইনিংসটি। ১টি চার ও ৪টি ছয়ে সাজানোর সোহানের এই ইনিংস পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছে শুধু।
নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস থামে ১৮৮ রানে। এতে ১৭ রানের জয়ে সিরিজের এগিয়ে গেল জিম্বাবুয়ে।
হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নিজেদের ইনিংসের শুরুটা ভালো হয়নি জিম্বাবুয়ের। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ওপেনার রেগিস চাকাভাকে ফেরান বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। স্টাম্প বরাবর ফুলার ডেলিভারিতে উড়িয়ে মেরেছিলেন চাকাভা। কিন্তু সেটি মিড উইকেটে তালুবন্দি করেন নাজমুল হোসেন। ১১ বলে ৮ রান করেন চাকাভা।
আরও পড়ুন : শ্রীলঙ্কাকে ১৬ কোটি ডলার দিল বিশ্বব্যাংক
পাওয়ার-প্লেতে ৪৩ রান তোলা স্বাগতিকরা সপ্তম ওভারের প্রথম বলে হারায় আরেক ওপেনার ক্রেইগ আরভিনকে। মোসাদ্দেকের কুইকার ডেলিভারিতে ব্যাকফুটে গিয়ে অন সাইডে খেলতে চেয়েছিলেন আরভিন।
কিন্তু বল ব্যাট মিস করে ভেঙে দেয় উইকেট। ১৮ বলে ২১ রান করেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে ওয়েসলে মাধেভেরে ও শন উইলিয়ামস ৩৭ বলে গড়েন ৫৬ রানের পার্টনারশিপ।
ব্যাট হাতে ঝড় তোলা উইলিয়ামসকে থামান মুস্তাফিজ। ৪ চার ও ১ ছয়ে ১৯ বলে ৩৩ রান করেন এই তিনি। ৯৯ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর সিকান্দার রাজাকে নিয়ে ব্যাট চালিয়ে ঝড় অব্যাহত রাখেন মধেভেরে।
আরও পড়ুন : স্পেনে কর্মীদের টাই না পরার আহ্বান
তিনি ৬ চারে ৩৭ বলে অর্ধশতক তুলে নেন। কম যাননি রাজাও, আরো বেশি আগ্রাসী ভূমিকায় চার-ছয়ের ফুলঝুরি সাজিয়ে বসেন। ৫ চার ও ৩ ছয়ে মাত্র ২৩ বলে ফিফটির কোটা পূর্ণ করেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
শেষ ওভারে ৪৬ বলে ৬৭ রানের সময় চোট নিয়ে উঠে যান মাধেভেরে। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ২৬ বলে ৬৫ রানে অপরাজিত থাকেন রাজা। যেখানে ৭টি চার ও ৪টি ছয় মারেন তিনি। এতে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ২০৫ রানের পুঁজি পায় জিম্বাবুয়ে।
বাজে বোলিংয়ের দিনে বাংলাদেশের হয়ে ৫০ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন পেসার মুস্তাফিজ। সমান ৪ ওভারে ৪২ রান দিয়ে উইকেটশূন্য তাসকিন আহমেদ।
সান নিউজ/এইচএন