স্পোর্টস ডেস্ক: বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা- বাংলাদেশের শীর্ষ ফুটবল ক্লাব বসুন্ধরা কিংসের নিজস্ব স্টেডিয়াম। সেখানেই শুরু হলো বসুন্ধরা ও বাংলাদেশ পুলিশ এসসির ম্যাচ দিয়ে ফুটবলের যাত্রা।
দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ক্লাব হিসেবে তো নিজস্ব স্টেডিয়ামে নামল এবং ঐতিহাসিক ম্যাচটি স্মরণীয় করল ৩-০ গোলের দুর্দান্ত জয়ে।
দারুণ এই ইতিহাসের সূচনালগ্নে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনার উদ্বোধন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। চমৎকার জয় দিয়ে নিজেদের মাঠে ২ বারের চ্যাম্পিয়নদের যাত্রা শুরু।
ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রবিনিয়ো জোড়া গোল করেন এবং অপরটি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া এলিটা কিংসলে।
বসুন্ধরা বড় জয় পেলেও প্রথমার্ধে গোলমুখ খুলতে পারেনি। অবশ্য ৪০ মিনিটে সুযোগ পেয়েছিল তারা। রবিনিয়োর ডান পায়ের শট ক্রসবারে আঘাত করে।
বিরতির পর দুটি পরিবর্তনে ম্যাচ ঘুরে যায় বসুন্ধরার। ৬৬ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় মাহাদী হাসান খানের পাস থেকে রবিনিয়ো বল জালে জড়ান।
১০ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ হয়। মাহাদী পুলিশের বক্সে পড়ে গেলে পেনাল্টি পায় বসুন্ধরা। স্পট কিক থেকে গোল করেন রবিনিয়ো।
খেলা শেষ হওয়ার ৩ মিনিট আগে কিংসলে করেন তৃতীয় গোল। মাহাদীর পাস থেকে বক্সে ঢুকে ফের বল জালে জড়ান তিনি।
৪ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ টেবিলের শীর্ষে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা। পুলিশ সমান ম্যাচ খেলে ২ পয়েন্ট নিয়ে ৯ নম্বরে।
প্রসঙ্গত, পেশাদার লিগের যে শর্তগুলো আছে, তার অন্যতম হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে খেলা। যার অর্থ ক্লাবের নিজস্ব মাঠ থাকতে হবে।
কিন্তু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার শুরুর পর থেকে গত ১৩ বছরেও এই শর্তটি পূরণ করতে পারেনি কোনো ক্লাব। কারণ, কারোরই ছিলো না নিজস্ব মাঠ।
‘ছিলো না’ কথাটি এ কারণে বলা যে, এখন আছে। দেশের ঐতিহাসিক দুই ক্লাব মোহামেডান ও আবাহনী যেখানে পারেনি নিজেদের একটা ভেন্যু করতে, সেখানে পেরেছে নতুন ক্লাব বসুন্ধরা কিংস।
বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন ক্লাব বসুন্ধরা কিংস। দেশের অন্যতম সেরা কর্পোরেট হাউজটি তাদের ক্লাবকে গড়ে দিয়েছে নিজস্ব ভেন্যু। যার নাম বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা।
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২। দিনটি একদিকে বসুন্ধরা কিংসের ঐতিহাসিক, অন্যদিকে বাংলাদেশের ফুটবলেরও। এই দিন ইতিহাস গড়ে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ক্লাব হিসেবে খেলেছে নিজেদের মাঠে।
যা পারেনি মোহামেডান-আবাহনী কিংবা ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান তা করে দেখিয়েছে বসুন্ধরা কিংস। প্রতিষ্ঠার মাত্র ৯ বছরের মধ্যে এই অসাধ্যকে সাধন করেছে বসুন্ধরা কিংস।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মধ্যে গড়ে তোলা হয়েছে স্পোর্টস কমপ্লেক্স। যেখানে ফুটবল ও ক্রিকেট মাঠসহ আছে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা।
এখনো পুরোপুরি কাজ শেষ হয়নি। কেবল ফুটবল স্টেডিয়ামকে তৈরি করা হয়েছে খেলার উপযোগী।
ফুটবল স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়েছে ইউরোপিয়ান স্টেডিয়ামগুলোর অনুকরণে। খেলার মাঠটি এখনো সম্পূর্ণ সবুজে না ঢাকলেও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা চোখে পড়ার মতো।
দুই পাশে গ্যালারি। প্রেসবক্স নির্মাণ না হওয়ায় এক পাশে তৈরি অস্থায়ীভাবে। ড্রেসিংরুমগুলোয় আধুনিকতার ছোঁয়া। এক কথায় আন্তর্জতিক ফুটবলের জন্য পরিপূর্ণ ভেন্যু হচ্ছে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা।
আন্তর্জাতিক ভেন্যুর অন্যতম প্রধান শর্ত মেনে আদর্শ মাপে মাঠের দৈর্ঘ্য ১০৫ মিটার ও প্রস্থ ৬৮ মিটার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা-বরিশালের শিরোপার লড়াই বিকেলে
উদ্বোধনী ম্যাচ উপলক্ষ্যে ভেন্যুটি সাজানো হয়েছে লালের প্রাধান্য দিয়ে, বসুন্ধরা কিংসের জার্সির রঙের সঙ্গে মিল রেখে।
স্টেডিয়ামের প্রবেশের মুখে অনেক দূর থেকে সারি সারি বিলবোর্ড। যে বিলবোর্ডে দলের খেলোয়াড়, কোচ, বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও গ্রুপের কর্মকর্তাদের ছবি শোভা পাচ্ছে।
সান নিউজ/ এইচএন