স্পোর্টস ডেস্ক:
প্রাণঘাতী করোনা আমাদের জীবনের অনেক অভ্যাস পরিবর্তন করেছে। ক্রিকেটেও এর ভালোই প্রভাব পড়েছে। বোলারদের দীর্ঘদিনের অভ্যাসও এবার বদলাতে হবে।
কারণ ইতিমধ্যেই থুতু দিয়ে বল শাইনিং করায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। কেউ এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন, আবার অনেকের মতে, এতে ব্যাটসম্যানরা অন্যায্য সুবিধা পাবেন। তবে আইসিসির নিয়ম মেনে ক্রিকেট কোচ এবং বলের নির্মাতারাও পরিবর্তনেরই পক্ষে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের হাই পারফরম্যান্স ইউনিট কোচ চাম্পাকা রামানায়েকে সান নিউজকে জানান, যেহেতু বলে থুতু ব্যবহার করা যাবে না সেক্ষেত্রে ডিউক বলে ক্রিকেট খেলা হতে পারে। ডিউক বলে ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলাটি হয়। এবং বোলাররাও তাদের সুইং যাদু সেই ডিউক বলে বেশ ভালই দেখাতে পারেন। বলের প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করে ক্রিকেটের আকর্ষণ সমান রাখা যায় কিনা সে ব্যাপারে আইসিসি এমন চিন্তা করতে পারে বলে মতামত দেন চাম্পাকা। আর কোচের এই কথার সমর্থন পাওয়া যায় বল নির্মাতা কোম্পানীর কাছ থেকেও।
অস্ট্রেলিয়ার কোম্পানি কোকাবুরা জানিয়েছিল, কৃত্রিম মোমের আস্তরণ দিয়ে বল তৈরি করছে তারা। কিন্তু অনিল কুম্বলের নেতৃত্বাধীন ক্রিকেট কমিটি জানিয়েছে, কৃত্রিম কোনও পদার্থ ব্যবহার করা চলবে না।
ডিউক বলের নির্মাতা ব্রিটিশ ক্রিকেট বলস লিমিটেডের মালিক দিলীপ জাজোদিয়া এক ওয়েবসাইটে বলেছেন, ‘ডিউক বল হাতে সেলাই হয় এবং এতে গ্রিজ থাকে। তাই ইংল্যান্ডে সুইং হতে কোনও সমস্যা হবে না। বল সুইং করানোর জন্য ঘামই যথেষ্ট। পাশাপাশি, বোলারদের দক্ষতার ওপরেই বলের ক্ষমতা নির্ভর করে।’
তার সংযোজন, ‘হাতে সেলাই করা বলের সুতো অনেক বেশি স্পষ্ট এবং অনেকক্ষণ টিকে থাকে। ফলে বোলারদের পক্ষে সুইং করানো সোজা। কোকাবুরা বলের সেলাই হয় মেশিনে। বানানো হয়তো সহজ। কিন্তু সহজেই এর ঔজ্জ্বল্য চলে যায় এবং আকার বদলে যায়। তাছাড়া কোকাবুরার সিম মাটিতে লেপ্টে যায়। ফলে কিছুক্ষণ পরে আর সুইং পাওয়া যায় না।’
ভারতের এসজি বলের নির্মাতা সংস্থার মালিক পরশ আনন্দ বলেছেন, ‘বলে রিভার্স সুইং পেতে থুতু পালিশের ভূমিকা যে রয়েছে একথা কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না। ৭০–৮০ ওভার পর্যন্ত বল টিকে থাকে। তবে আমরা কিছু পরিবর্তন করতে চলেছি। বলের পালিশে এবার থেকে একটু বেশি পোঁচ দেওয়া হবে, যাতে বলের ঔজ্জ্বল্য অনেকক্ষণ টিকে থাকে। এখন যতক্ষণ থাকে, তার থেকেও ১০–১৫ ওভার বেশিক্ষণ থাকার কথা ভেবেছি আমরা।’
আনন্দ জানিয়েছেন, বলের সুতোও আরও শক্তিশালী হবে যা থেকে সুবিধা পাবে বোলাররা। পাশাপাশি তারা চাইছেন বলের ভেতরকার অংশ আরও মজবুত করতে। আনন্দের কথায়, ‘যদি বলের ভেতরকার অংশ ৭০–৮০ ওভার পর্যন্ত শক্ত থাকে, তাহলে অনেকটাই সাহায্য হবে বোলারদের।’
সান নিউজ/ আরএইচ