স্পোর্টস ডেস্ক: ম্যারাডোনার সাথে তার সম্পর্ক চার থেকে পাঁচ বছর স্থায়ী হয়। হাভানায় নিজেদের বাড়িতে একটি অনুষ্ঠানে ম্যারডোনা তাকে ‘ধর্ষণ’করেন বলেও দাবি করেন এই নারী।
প্রয়াত আর্জেন্টাইন আইডল ম্যারাডোনা ও তার দলের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতার অভিযোগ আনলেন ৩৭ বছর বয়সী মাভিস আলভারেজ রেগো। সোমবার (২২ নভেম্বর) এই অভিযোগ আনেন তিনি। দুই দশক আগে ম্যারাডোনার সাথে সম্পর্ক ছিল কিউবান এই নারীর।
বর্তমানে মিয়ামিতে বসবাসরত আলভারেজ রেগো সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ১৬ বছর বয়সে ম্যারডোনার সাথে দেখা হয় তার। বয়স চল্লিশের কোঠায় থাকা ম্যারাডোনা সেসময় মাদকের জন্য চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তিনি বলেন, "আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। শুরুতেই আমার মন জয় করে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দুই মাস পরই সবকিছু বদলে যেতে শুরু করে।" ম্যারাডোনা তাকে কোকেনের নেশার দিকে ঠেলে দেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
"আমি তাকে ভালবাসতাম কিন্তু আমি তাকে ঘৃণাও করতাম। এমনকি আমি আত্মহত্যার চিন্তাও করেছিলাম," বলেন আলভারেজ রেগো।
ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবলারদের একজন হিসাবে বিবেচনা করা হয় ম্যারাডোনাকে। আর্জেন্টিনাকে ১৯৮৬-র বিশ্বকাপে অনুপ্রাণিত করেছিলেন তিনি।
কয়েক দশক ধরে কোকেন ও অ্যালকোহল আসক্তির সঙ্গে লড়াই করেন এই ফুটবলার। এমনকি মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধে তার। এরপর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পর গত বছর মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
বর্তমানে দুই সন্তানের মা আলভারেজ রেগো বলেন, ম্যারাডোনার সাথে তার সম্পর্ক চার থেকে পাঁচ বছর স্থায়ী হয়। কিন্তু সম্পর্কে থাকা অবস্থায় নির্যাতনের শিকার হন তিনি।
তার দাবি অনুযায়ী, ২০০১ সালে ম্যারাডোনার সাথে বুয়েনস আইরেসে ভ্রমণের সময় এই ফুটবলারের দল তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কয়েক সপ্তাহ ধরে একটি হোটেলে আটকে রাখে। তাকে একা বাইরে যেতে দেয়নি তারা। এমনকি তাকে জোরপুর্বক একটি অস্ত্রোপচারের জন্যেও বাধ্য করা হয়।
তিনি আরও দাবি করেন, হাভানায় নিজেদের বাড়িতে একটি অনুষ্ঠানে তাকে 'ধর্ষণ' করেন ম্যারাডোনা।
তবে, এই বিষয়ে আলভারেজ রেগো নিজে কোনো অভিযোগ দায়ের করেননি। তার এসব স্বীকারোক্তির পর 'ফাউন্ডেশন ফর পিস' নামক একটি সংস্থা বুয়েনস আইরেসে আর্জেন্টিনার প্রসিকিউটরের কাছে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগটি বিশেষত মানব পাচার, স্বাধীনতা হরণ, জোরপূর্বক দাসত্ব রাখা- ইত্যাদি বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত।
আলভারেজ রেগো বলেন, "আমার যা করার ছিল তা আমি করেছি, বাকিটা আমি আদালতের হাতে ছেড়ে দিচ্ছি। আমার সাথে যা ঘটেছে তা অন্যদের সাথে যাতে না ঘটে সেজন্যেই এই পদক্ষেপ নিয়েছি আমি। অন্য মেয়েরা যাতে কথা বলার শক্তি ও সাহস পায় সেটিই আমার লক্ষ্য।"
ম্যারাডোনা ছাড়াও দলের যেই পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তারা সকলেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অভিযোগকারী এনজিওর বিরুদ্ধে পাল্টা একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন তাদের মধ্যে একজন। সূত্র: বাসস/এএফপি
সাননিউজ/ডি