স্পোর্টস ডেস্ক: প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলবে নিউজিল্যান্ড। ওপেনার ড্যারিল মিচেলের দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে বুধবার (১০ নভেম্বর) টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড।
আবু ধাবির জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে চার উইকেটে ১৬৬ রান করে ইংলিশরা। জবাবে মিচেলের অপরাজিত ৭২ রানের কল্যাণে ২০ ওভারে পাঁচ উইকেটে ১৬৭ রান করে নিউজিল্যান্ড।
নিউজিল্যান্ড টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করতে নামে। নিউজিল্যান্ড জয়ের জন্য ১৬৭ রানের লক্ষ্যে শুরুতেই মহাচাপে পড়ে। ইংল্যান্ডের পেসার ক্রিস ওকসের প্রথম বলেই চার মারেন ওপেনার মার্টিন গাপটিল। কিন্তু তৃতীয় বলে ৪ রান করা গাপটিলকে লেগ বিফোর আউট করেন ওকস।
তৃতীয় ওভারে ইংল্যান্ডকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন ওকস। অবশ্য নিজের মূল্যবান উইকেটটি ওকসকে উপহারই দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। স্কুপ শট খেলতে গিয়ে আদিল রশিদকে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়া কিউই অধিনায়ক ১১ বলে ৫ রান করেন। এমন অবস ন্থায় ১৩ রানে ২ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড।
মহাচাপে পড়া নিউজিল্যান্ডকে এরপর রক্ষা করেন আরেক ওপেনার ড্যারিল মিচেল ও ডেভন কনওয়ে। শুরুতে উইকেট হারানোয় পাওয়ার প্লেতে ৩৬ ও ১০ ওভার শেষে ৫৮ রানের বেশি তুলতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। তবে মিচেল ও কনওয়ের দৃঢ়তায় ১৩ ওভারে ৯২ রান পেয়ে যায় কিউইরা। জমে যাওয়া মিচেল-কনওয়ে জুটিতে ভাঙ্গন ধরিয়ে ইংল্যান্ডকে ম্যাচে ফেরার পথ দেখান অকেশনাল স্পিনার লিভিংস্টোন। ৩৮ বলে ৪৬ রান করা কনওয়েকে শিকার করেন তিনি। কনওয়ের ইনিংসে ৫টি চার ও ১টি ছক্কা ছিলো। মিচেলের সাথে তৃতীয় উইকেটে ৬৭ বলে ৮২ রান দলকে এনে দেন কনওয়ে।
কনওয়ের বিদায়ে উইকেটে আসেন গ্লেন ফিলিপস। ২ রানে ফিলিপসকে আটকে দেন লিভিংস্টোন। ১২ রানের ব্যবধানে নিউজিল্যান্ডের ২ উইকেট তুলে নিয়ে দারুনভাবে ইংল্যান্ডকে খেলায় ফেরান লিভিংস্টোন। এতে জয়ের জন্য শেষ ৪ ওভারে ৫৭ রানের প্রয়োজন পড়ে নিউজিল্যান্ডের। আস্কিং রেট ১৪ পার হয়। এ অবস্থায় মারমুখী হয়ে উঠেন ফিলিপসের বিদায়ের ক্রিজে আসা নিশাম।
১৭তম ওভারে ২৩ রান নেন নিশাম। পেসার ক্রিস জর্ডানের করা ঐ ওভারে ২টি ছক্কা ও ১টি চার মারেন নিশাম। এতে ১৮ বলে জয়ের সমীকরন দাঁড়ায় ৩৪ রানে।
রশিদের করা ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে নিশাম ও চতুর্থ বলে ছক্কা মারেন মিচেল। কিন্তু ঐ ওভারের শেষ বলে নিশামকে থামান রশিদ। ১০ বলে ৩টি ছক্কা ও ১টি চারে ২৬ রানের সময়পযোগী ইনিংস খেলেন নিশাম। তাতে জয় পেতে শেষ ১২ বলে ২০ রানের দরকার পড়ে নিউজিল্যান্ডের।
১৯তম ওভারে বল হাতে আক্রমনে ছিলেন শুরুতেই ২ উইকেট তুলে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাকুফটে ঠেলে দেয়া ওকস। ওই ওভারে মিচেল স্যান্টনারকে নিয়ে ২০ রান তুলে নিউজিল্যান্ডকে ফাইনালে তুলেন মিচেল। প্রথম বলে ২, দ্বিতীয়-তৃতীয় বলে ছক্কা, চতুর্থ বলে ১ রান নেন মিচেল। পঞ্চম বলে ১ রান নিয়ে মিচেলকে স্ট্রাইক দেন স্যান্টনার। আর শেষ বলে বাউন্ডারি দিয়ে নিউজিল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করেন মিচেল।
৪৮ বল খেলে ৪টি করে চার-ছক্কায় অপরাজিত ৭৩ রান করে ম্যাচ সেরা হন মিচেল। এ ম্যাচে ২১তম টি-টোয়েন্টিতে এসে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। ১ রানে অপরাজিত ছিলেন স্যান্টনার। ইংল্যান্ডের ওকস-লিভিংস্টোন ২টি করে উইকেট নেন।
নিউজিল্যান্ড আগামী ১৪ নভেম্বর ফাইনাল খেলবে। বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া। ওই ম্যাচের বিজয়ী দল ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের প্রতিপক্ষ হবে।
সাননিউজ/এমআর