ক্রীড়া প্রতিবেদক: ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই অন্য রকম উন্মাদন। সমর্থক থেকে শুরু করে দেশ দুটির জনগণ যেমন থাকে উৎকণ্ঠায়। ঠিক তেমনি থাকে বিশ্বের অনেক দর্শক-সমর্থক। ২০২১ টি-২০ বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভের নিজেদের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে দেশ দুটি। বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় খেলাটি শুরু হবে। এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে সাতবার ও টি-টোয়েন্টিতে পাঁচবার মুখোমুখি হয়েও কখনো জয় পায়নি পাকিস্তান।
বুদ্ধির ঝিলিক: গ্রুপ পর্ব, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ–২০০৭
বিশ্বকাপেই এ সংস্করণে প্রথম দেখা হয়েছিলো দুই দলের। নির্ধারিত ২০ ওভারে দুই দলকে আলাদা করা যায়নি, খেলা গড়ায় বোল-আউটে। অধিনায়ক হিসেবে কিংবদন্তি হওয়ার পথে ধোনির প্রথম পদক্ষেপ এ ম্যাচেই। উইকেটের মাঝে স্টাম্প পুঁতে রাখা হয়েছিলো, সেখানে বল লাগাতে পারার দক্ষতা দেখাতে হতো বোল–আউটে। পাকিস্তানের হয়ে শহীদ আফ্রিদি, উমর গুল, ইয়াসির আরাফাতের মতো নিয়মিত বোলাররা এসেছিলেন। কিন্তু ধোনি বল তুলে দেন ধীরগতির শেবাগ, হরভজন এবং উথাপ্পাদের হাতে। নিয়মিত গতিতে বল করতে গিয়ে একবারও স্টাম্প ভাঙতে পারেননি আফ্রিদিরা, ওদিকে তিনবারই স্টাম্প ভেঙে দেন উথাপ্পারা।
দ্বিতীয় দেখা
মিসবাহর দীর্ঘশ্বাস: ফাইনাল, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ–২০০৭
ফাইনালেও আবার দেখা দুই দলের। পাকিস্তানকে ১৫৮ রানের লক্ষ্য দেয় ভারত। ১৪১ রানেই ৯ উইকেট হারানো পাকিস্তানকে শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচে রাখেন মিসবাহ। আবারও ধোনির বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞরা স্পিনার দিয়ে শেষ ওভার করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু স্লো মিডিয়াম বোলার যোগীন্দর শর্মার কাছে বল দেন ধোনি। শেষ ৪ বলে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ৬ রান। শর্মার তৃতীয় বলে মিসবাহর স্কুপে বল উঠে যায় আকাশে এবং শর্ট ফাইন লেগে দাঁড়িয়ে ক্যাচ ধরেন শ্রীশান্ত। প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে নেয় ভারত।
তৃতীয় দেখা
কোহলির দ্যুতি: গ্রুপ পর্ব, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ–২০১২
পাঁচ বছর পর আবারও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একই গ্রুপে পড়ে ভারত-পাকিস্তান। বিশ্ব মঞ্চে আবার দেখা হলো দুই দলের। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে আবারও ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে পাকিস্তান, ১২৮ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। বিরাট কোহলির দুর্দান্ত ব্যাটিং তিন ওভার বাকি থাকতেই ৮ উইকেটের জয় এনে দেয় ভারতকে। ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৭৮ রানে অপরাজিত ছিলেন কোহলি। এ ম্যাচে দুই দল মিলিয়েই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯ রান করেছেন বীরেন্দর শেবাগ।
চতুর্থ দেখা
পাকিস্তানের আরেকটি বিপর্যয়: গ্রুপ পর্ব, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ–২০১৪
আরেকটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ, আরেকটি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ এবং আবারও পাকিস্তানের ব্যাটিং বিপর্যয়। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে অমিত মিশ্রর ঘূর্ণিতে দিশেহারা পাকিস্তান ২০ ওভারে মাত্র ১৩০ রান তুলেছিলো। ব্যাট করতে নামা ভারতের ৬৫ রানে ৩ উইকেট পড়ে গিয়েছিলো। কিন্তু ছোট লক্ষ্য পেয়ে বিরাট কোহলি ও সুরেশ রায়না ওয়ানডে ধাঁচে ব্যাট করে দলকে জয় এনে দিয়েছেন।
পঞ্চম দেখা
চেনা পাকিস্তান, চেনা কোহলি: সুপার টেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ–২০১৬
বৃষ্টি ম্যাচের ইনিংস ২ ওভার কমিয়ে দেয়। কিন্তু পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা চেনা চিত্রনাট্য থেকে বের হতে পারেননি। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা উইকেটে এক মুহূর্তের জন্যও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেননি। ১৮ ওভারে মাত্র ১১৮ রান তুলতে পারেন তাঁরা। আবারও ম্যাচে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেন বিরাট কোহলি, ২৩ রানে ভারতের ৩ উইকেট পড়ে গেলেও তাঁর দৃঢ়তায় মাত্র ১৫.৫ ওভারে ম্যাচটি জিতে নেয় ভারত।
সান নিউজ/এফএআর