ক্রীড়া ডেস্ক : গত মৌসুমে ইন্টার মিলানের সেরি আ জয়ের নায়ক রোমেলু লকাকুকে ফেরাতে যেন উঠেপড়ে লেগেছিল চেলসি। শেষ পর্যন্ত তাতে সফল তারা। ক্লাবের ইতিহাসে রেকর্ড ট্রান্সফার ফি দিয়েই বেলজিয়ান স্ট্রাইকারকে দলে টানল ইংলিশ ক্লাবটি।
পাঁচ বছরের চুক্তিতে দ্বিতীয় মেয়াদে চেলসিতে ফিরলেন লুকাকু। ক্লাবটির ওয়েবসাইটে বৃহস্পতিবার দেয়া বিজ্ঞপ্তিতে ২৮ বছর বয়সীর ট্রান্সফার ফি নিয়ে কিছু জানানো হয়নি। তবে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অঙ্কটা নয় কোটি ৭৫ লাখ পাউন্ড।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত সপ্তাহে অ্যাস্টন ভিলা থেকে জ্যাক গ্রিলিশকে কিনতে ১০ কোটি পাউন্ড খরচ হয় ম্যানচেস্টার সিটির, ব্রিটিশ ফুটবলে যা রেকর্ড। লুকাকুর ট্রান্সফার ফির তার থেকে একটু কম।
আবারও স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে ফিরতে পেরে দারুণ খুশি লুকাকু। তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমি এখানে এসেছিলাম অল্প বয়সে, যার অনেক কিছু শেখার ছিল। এখন আমি ফিরে এলাম অনেক অভিজ্ঞ ও পরিপক্ক হয়ে। শৈশবে আমি চেলসিকে সমর্থন করতাম আর এখন আমি ফিরলাম দলটির অনেক শিরোপা জয়ে সাহায্য করতে, অসাধারণ অনুভূতি।’
এর আগে ২০১১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত চেলসির খেলোয়াড় ছিলেন লুকাকু। তবে ওই সময়ে অধিকাংশ সময় তিনি ধারে খেলেন অন্য ক্লাবে। ২০১২-১৩ মৌসুমে ওয়েস্ট ব্রমউইচ অ্যালবিওনে কাটানোর পরের মৌসুমে খেলেন এভারটনে।
২০১৪ সালে দুই কোটি ৮০ লাখ পাউন্ডে তাকে পাকাপাকিভাবে কিনে নেয় এভারটন। তিন বছর ওখানে খেলার পর ২০১৭ সালের জুলাইয়ে তাকে সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী সাড়ে কোটি পাউন্ডের বিনিময়ে দলে টানে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে দুই বছর খেলার পর ২০১৯ সালের গ্রীষ্মে তিনি যোগ দেন ইন্টার মিলানে। সাত কোটি ৪০ লাখ পাউন্ডে। আর এবার চেলসিতে ফিরলেন প্রায় ১০ কোটি পাউন্ড ট্রান্সফার ফিতে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সব মিলিয়ে লুকাকুকে পেতে ক্লাবগুলোর মিলিত খরচ ২৯ কোটি পাউন্ড। ফুটবলের ইতিহাসে কোনো এক খেলোয়াড়ের ওপর এটি সবচেয়ে বেশি ব্যয়ের হিসাব। তার সবশেষ দলবদল রেকর্ডের পাতায় আরও কিছু নতুন সংখ্যা যোগ করেছে।
ব্রিটিশ ফুটবলে সবচেয়ে বেশি পাঁচটি ট্রান্সফার ফির মধ্যে দুটিতেই জড়িয়ে লুকাকুর নাম। বেলজিয়ামের রেকর্ড গোলদাতা এখন সেরি আর ক্লাবগুলোর বিক্রি করা সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়ও। যাকে নিয়ে ক্লাবগুলোর এত টানাটানি, তার অর্জনের ভাণ্ডার অবশ্য তেমন আহামরি কিছু নয়।
পেশাদার ফুটবলে প্রথম ক্লাব অ্যান্ডারখেটের হয়ে একবার বেলজিয়ান প্রো লিগ জেতার পর পরবর্তী সাফল্য তিনি পান গত মৌসুমে ইন্টারের হয়ে। ২০২০-২১ সেরি আয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৪ গোল করার পাশাপাশি ১১টি অ্যাসিস্টও করেন লুকাকু।
ইন্টারে যাওয়ার আগে প্রিমিয়ার লিগে আট বছর খেলার অভিজ্ঞতা আছে লুকাকুর। ওই সময়ে ১১৩ গোল করেছিলেন তিনি।
টমাস টুখেলের কোচিংয়ে গত মৌসুমের শেষভাগে আমূল বদলে যাওয়া চেলসি জিতে নেয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। আর বুধবার রাতে ভিয়ারিয়ালকে হারিয়ে তারা ঘরে তুলেছে উয়েফা সুপার কাপ। শিরোপা হাসিতে মৌসুম শুরু করা দলটি এবার আরও শিরোপা জিততে চায়। তাদের সেই লক্ষ্য পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন লুকাকু।
সাননিউজ/এমএইচ