খেলা

ঐতিহাসিক জয়ে নতুন রেকর্ড

সাননিউজ ডেস্ক: স্পিনারদের দাপটে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়াকে হারালো টাইগাররা। তাও আবার ১৩১ রানের দুর্বল সংগ্রহ নিয়ে। মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) মিরপুরে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে ২৩ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে সাকিব আল হাসানরা।

এতদিন টি-টোয়েন্টিতে সর্বনিম্ন ১৩৩ রান করে ৫১ রানে জয়ের রেকর্ড ছিল বাংলাদেশের। ২০১৬ সালের এশিয়া কাপে এই রেকর্ড ছিল আমিরাতের বিপক্ষে। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। মঙ্গলবার শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেই রেকর্ডও ছাপিয়ে গেল টাইগাররা। বাংলাদেশ গড়লো সর্বনিম্ন ১৩১ করে জয়ের নতুন রেকর্ড।

অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য ছিল মাত্র ১৩২ রানের। সফরকারী দলকে চাপে ফেলতে স্পিন দিয়ে আক্রমণ শুরু করেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রথম বলেই সাফল্য এনে দেন মাহেদি হাসান, বোল্ড করেন অ্যালেক্স কারেকে (০)।

পরের ওভারে নাসুম আহমেদের ঘূর্ণি ডেলিভারি কিছুটা এগিয়ে খেলতে গিয়ে জশ ফিলিপ (৫ বলে ৯) হন স্ট্যাম্পিং। বল পেয়ে চোখের পলকে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন নুরুল হাসান সোহান।

তৃতীয় ওভারে আরও এক উইকেট। এবার সাকিব আল হাসান নিজের প্রথম বলেই বোল্ড করেন ময়েসেজ হেনড্রিকসকে (১)। বাঁহাতি এই স্পিনারের বল সুইপ করতে গিয়ে নিজেই টেনে নিয়ে উইকেট হারান হেনড্রিকস। ১১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে অস্ট্রেলিয়া।

বিপদ বুঝে খেলার ধরন পাল্টে ফেলেন ম্যাথু ওয়েড আর মিচেল মার্শ। ঝুঁকিপূর্ণ শট না খেলে একটু একটু করে এগিয়ে যেতে থাকেন তারা, রানরেটের কথা না ভেবে।

শেষ পর্যন্ত তাদের ৪৫ বলে ৩৮ রানের জুটিটি ভেঙেছেন নাসুম। যদিও খুব ভালো বল ছিল না, পেছনের দিক দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিল। বাজে সেই বলটিতে কি মনে করে ব্যাট লাগিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড (২৩ বলে ১৩)। শর্ট ফাইন লেগে সহজ ক্যাচ নেন মোস্তাফিজুর রহমান।

এরপর নাসুমের আরও এক উইকেট, এবার অ্যাশটন অ্যাগার। সেই উইকেট পেতেও অবশ্য ভাগ্য কাজে দিয়েছে টাইগার বাঁহাতি স্পিনারের। বল পিছিয়ে খেলতে গিয়ে নিজের পায়েই স্ট্যাম্প মারিয়ে দেন অ্যাগার। হিট উইকেট হন ৭ করে।

দলের ব্যাটসম্যানদের এই আসা যাওয়ার মিছিলে একটা প্রান্ত ধরে ছিলেন মিচেল মার্শ। শেষ পর্যন্ত সেই কাঁটাও সরিয়েছেন দারুণ বোলিং করা নাসুম। স্লগ সুইপ করতে গিয়ে শরিফুলের দারুণ এক ক্যাচ হন মার্শ (৪৫ বলে ৪৫)। ৮৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে তখনই।

১৯তম ওভারে এসে অ্যান্ড্রু টাই আর অ্যাডাম জাম্পাকে জোড়া শূন্যতে ফেরান শরিফুল। তার আগের ওভারে মোস্তাফিজ এক্সট্রা কভারে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ বানিয়েছিলেন অ্যাশটন টার্নারকে (৮)। শেষ ওভারে স্টার্ককে বোল্ড করেছেন কাটার মাস্টার ফিজ, তাতেই অস্ট্রেলিয়া এক বল বাকি থাকতে অলআউট ১০৮ রানে।

এর আগে অসি বোলাররা সেভাবে হাত খুলে খেলতে দেননি বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদেরও। নাইম শেখ, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা রান পেলেন বটে। কিন্তু সেটা ঠিক টি-টোয়েন্টি ধাঁচের ব্যাটিংয়ে নয়। শেষদিকে আফিফ হোসেন ধ্রুব কিছুটা চালিয়ে খেলে ৭ উইকেটে ১৩১ পর্যন্ত নিয়ে গেছেন দলকে।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই অসি বোলারদের চাপের মুখে ছিল বাংলাদেশ। আত্মঘাতী হয়ে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য সরকার। রীতিমত হাসফাঁস করছিলেন উইকেটে, শেষ পর্যন্ত নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনেন বাঁহাতি এই ওপেনার।

জশ হ্যাজলেউডের বলটি বানিয়ে মারতে গিয়েছিলেন, কাট করে সেটি নিজের উইকেটেই টেনে আনেন। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের তৃতীয় বলের ঘটনা। সৌম্য ৯ বলে করেন মাত্র ২ রান। সৌম্য ফেরার পর নাইম শেখ মোটামুটি ভালো খেলছিলেন। মিচেল স্টার্ককে ফ্লিক করে বড় এক ছক্কাও হাঁকিয়েছিলেন। কিন্তু পরে আবার রানের গতি আটকে যায় নাইমের।

সেই চাপ থেকেই বোধ হয় অ্যাডাম জাম্পাকে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়েছিলেন সপ্তম ওভারের শেষ বলে। বলটি মিস করে হন পরিষ্কার বোল্ড, ২৯ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় নাইম করেন ৩০ রান।

এরপর দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মিলে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন কিছুটা। যদিও তেড়েফুরে খেলতে পারেননি তারাও। ৩২ বলের জুটিতে তারা যোগ করেন ৩৬ রান।

ডাউন দ্য উইকেটে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন মাহমুদউল্লাহ। হ্যাজলউডের বলে দৌড়ে গিয়ে দারুণ এক ক্যাচ নেন ময়েচেস হেনড্রিকস। মাহমুদউল্লাহর ২০ বলে সমান রানের ইনিংসটিতে ছিল একটি ছক্কার মার।

এরপর নুরুল হাসান সোহানও উইকেটে টিকতে পারেননি। অ্যান্ড্রু টাইয়ের এক ডেলিভারি অনেকটা সামনে এগিয়ে গিয়ে ওয়াইডের কাছাকাছি জায়গা থেকে তুলে মারেন তিনি, ৪ বলে ৩ রান করে হন মিচেল মার্শের ক্যাচ।

৮৬ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এর মধ্যে ১৪.৩ ওভারও পার হয়ে যায়। উইকেটে ভরসা হয়ে ছিলেন সাকিব। তিনিও অবশ্য টি-টোয়েন্টি মেজাজে খেলতে পারেননি। তবে স্লো উইকেটে তার ৩৩ বলে ৩ বাউন্ডারিতে গড়া ৩৬ রানের ইনিংসটিকে একেবারে খারাপ বলা যাবে না। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার বোল্ড হন হ্যাজেলউডের এক স্লোয়ারে।

শামীম হোসেন পাটোয়ারী আন্তর্জাতিক আঙিনায় এবারই প্রথম কঠিন বোলিংয়ের মুখে পড়েন। স্টার্কের টানা দুই বলে দুই করে চার রান নিলেও পরে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে পরাস্ত হন তরুণ এই ব্যাটসম্যান (৩ বলে ৪), ওপরে যায় লেগস্ট্যাম্প।

আফিফ হোসেন শেষ ওভারের শেষ বলে এসে আউট হয়েছেন সেই স্টার্কের বলেই। এবারও বোল্ড, ১৭ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২৩ রান করে ইনিংসের শেষ বলে উইকেট হারান আফিফ।

অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন হ্যাজলেউড। ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রানে ৩টি উইকেট নেন এই পেসার। স্টার্কের শিকার ২টি।

সাননিউজ/এএসএম/এমআর

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

সবজির বাজারে স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কমেছে পেঁয়াজ, সবজি...

বড় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচলেন পূজা 

বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই চিত্রনায়িকা ও মডেল পূজা চেরি ডজনখানেক ছব...

স্বামীকে মৃত দেখিয়ে মামলা, নারী আটক

জেলা প্রতিনিধি : সাভারের আশুলিয়ায় জীবিত স্বামীকে বৈষম্যবিরোধ...

বৈষম‌বিরোধী আন্দোলনে বেঁচে ফেরার আশা করেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন আন্দোল&zwnj...

ইসলামী ব্যাংকের সাথে হাব-এর মতবিনিময়

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর উদ্যোগে হ...

নলছিটিতে ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু

ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠির নলছিটিতে শুরু হয়েছে ভূট্টো স্মৃত...

ডেঙ্গুতে আরও ১০ জনের প্রাণহানি 

নিজস্ব প্রতিবেদক : সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্ট...

আরও ২ দিন বন্ধ সিটি কলেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে আরও ২ দিন সি...

নেতানিয়াহুকে গ্রেফতারে প্রস্তুত ৭ দেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের...

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের পরামর্শ

নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সদস্য তোফায়েল আহ...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা