স্পোর্টস ডেস্ক: জিম্বাবুয়েকে তাদের মাটিতেই ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করলো সফররত বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (২০ জুলাই) তিন ম্যাচের শেষটিতে জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে তামিম ইকবালের দ্রুততম সেঞ্চুরি।
প্রথম ম্যাচে ১৫৫ রান এবং দ্বিতীয় ম্যাচে তিন উইকেটের জয় পেয়ে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করে টাইগাররা। সফরের শুরুতে এক ম্যাচের টেস্টেও জয় পায় বাংলাদেশ।
হারারে ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস হেরে আগে ব্যাট করে ২৯৮ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৯ বল হাতে রেখেই ৩০২ রান করে ৫ উইকেটের জয় পায় বাংলাদেশ।
২৯৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সাবলীল ব্যাটিং করে ৮ ওভারে দলীয় অর্ধশত তুলে নেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। ১৭তম ওভারে বাংলাদেশের দলীয় রান ১০০ স্পর্শ করে। দুই ওপেনার তামিম ও লিটন ৮৮ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন। এ সময়ে তামিম তুলে নেন ফিফটি। লিটন ৩২ রানের বেশি করতে পারেননি। তামিম ৫২তম ওয়ানডে ফিফটি পেয়েছেন ৪৬ বলে। এজন্য ৪টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকান। তামিমের নতুন সঙ্গী হন সাকিব আল হাসান। তামিম ও সাকিবের জুটির রান ৫৩। তাদের জুটির ১৬তম ফিফটি এটি। এই জুটির তিনটি সেঞ্চুরির ইনিংসও রয়েছে। তামিমের সঙ্গে ৬৮ বলে ৫৯ রানের জুটি গড়ে সাকিব ফিরলেন সাজঘরে। জুটিতে তার অবদান ৩০ রান। দ্বিতীয় বিরতির পর জোড়া সাফল্য পায় জিম্বাবুয়ে। তামিম ও মাহমুদউল্লাহ ফিরলেন এক ওভারে। পুরো ইনিংসে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা তামিম মনোযোগ হারিয়ে আলগা শট খেললেন। ৯৭ বলে ১১২ রান করে তামিম ফেরেন সাজঘরে। ৮ চার ও ৩ ছক্কায় তামিম সেঞ্চুরির ইনিংসটি সাজিয়েছিলেন।
তামিম আউট হওয়ার পরের বলেই সাজঘরের পথ ধরেন মাহমুদউল্লাহ। ডানহাতি ব্যাটসম্যান টিরিপানোর ভেতরে ঢোকানো বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। ক্যারিয়ারের ২০০তম ওয়ানডে খেলতে নেমে গোল্ডেন ডাককে সঙ্গী করেন মাহমুদউল্লাহ। মোহাম্মদ মিঠুন ও নুরুল হাসান সোহানের জুটিতে পরপর দুই বলে তামিম ও মাহমুদউল্লাহকে হারানার ধাক্কা ভালোই সামাল দিয়েছে বাংলাদেশ। হয়ে গেছে ইনিংসের চতুর্থ অর্ধশত জুটি।
সাড়ে চার বছর পর ওয়ানডে খেলতে নামা সোহানের দারুণ ব্যাটিংয়েই মূলত এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। এক ইনিংসে চারটি পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি এই নিয়ে চারবার পেল বাংলাদেশ। আগের তিনবার ছিল ২০১৩ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ফতুল্লায়, ২০১৮ সালে শ্রীলংকার বিপক্ষে মিরপুরে ও ২০১৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ডাবলিনে।
শুরু থেকে একটুও স্বস্তিতে খেলতে পারছিলেন না মোহাম্মদ মিঠুন। তবু লড়াই করে টিকে ছিলেন। কিন্তু হুট করেই আত্মঘাতী শট খেলে বসলেন। সমীকরণ যখন খুব সহজ, ৩১ বলে প্রয়োজ ৩১ রান, মাধেভেরের বলে বেরিয়ে এসে উড়িয়ে মারলেন মিঠুন। টাইমিং করতে পারেননি। লং অফে ক্যাচ নেন চাতারা। ৫৭ বলে ৩০ রান করে শেষ হলো মিঠুনের অস্বস্তিময় ইনিংস। সোহানের নতুন সঙ্গী আফিফ হোসেন।
নুরুল হাসান সোহান ও আফিফ হোসেনের জুটি অনায়াসেই লক্ষ্যে পৌঁছে গেল বাংলাদেশ। লুক জঙ্গুয়ের বলে টানা দুই বলে ছক্কা ও চারে জয় ধরা ছিল ১২ বল বাকি রেখেই। ৩৯ বলে ৪৫ রানে অপরাজিত সোহান, ১৭ বলে অপরাজিত ২৬ আফিফ।
৫ উইকেটে জয়ে ওয়ানডে সিরিজ ৩-০তে জিতে নিল বাংলাদেশ। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে প্রত্যাশিত ৩০ পয়েন্টও ধরা দিল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ৪৯.৩ ওভারে ২৯৮ (চাকাভা ৮৪, মারুমানি ৮, টেইলর ২৮, মায়ার্স ৩৪, মাধেভেরে ৩, রাজা ৫৭, বার্ল ৫৯, জঙ্গুয়ে ৪* টিরিপানো ০, চাতারা ১, মুজারাবানি ০; তাসকিন ১০-১-৪৮-১, সাইফ ৮-০-৮৭-২, মুস্তাফিজ ৯.৩-০-৫৭-৩, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৪৫-২, সাকিব ১০-০-৪৬-১, মোসাদ্দেক ২-০-১৩-০)।
বাংলাদেশ: ৪৮ ওভারে ৩০২/৫ (লিটন ৩২, তামিম ১১২, সাকিব ৩০, মিঠুন ০, মাহমুদউল্লাহ ০, সোহান ৪৫*, আফিফ ২৬*; মুজরাবানি ৮-০-৪৩-০, চাতারা ৮-০-৫৬-০, জঙ্গুয়ে ৭-০-৪৪-১, টিরিপানো ৭-০-৬১-২, মাধেভেরে ১০-০-৪৫-২, রাজা ৫-০-২৩-০, বার্ল ৩-০-২৩-০)।
সান নিউজ/এমআর