রাজশাহি প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের একজন সফলতম উইকেটরক্ষক তিনি। এশিয়ার সেরা উইকেটকিপারও বলা হতো তাকে। তার বিশ্বস্ত গ্লাভস দুটি কখনো ফাঁকি দিতে পারেনি বল। তিনি দেশের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট।
ক্রিকেটের মানুষ বর্তমানে ক্রিকেটের সঙ্গেই আছেন তিনি। বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের সহকারী কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম ব্যাংকের কোচের দায়িত্বও সামলেছেন।
কিন্তু বর্তমান করোনা পনিস্থিতিতে তিনি কি করছেন? দেশে চলছে ছুটি সঙ্গে লকডাউন, আর এ অবস্থায় তাই নিজের শহর রাজশাহীতেই রয়েছেন তিনি। সময় কাটছে মাঠের পরিচর্যা করে।
খালেদ মাসুদ পাইলট রাজশাহীর ক্লেমন ক্রিকেট অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান। রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান বিভাগীয় স্টেডিয়ামে এই অ্যাকাডেমির মাঠেই সময় কাটাচ্ছেন তিনি।
প্রতিদিন সকালে চলে যান মাঠে। কখনও মাঠের ঘাস কাটেন নিজেই। কখনও বাউন্ডারি ঠিক করেন। আবার কখনও পাইপ ধরে মাঠে পানি দিতে দেখা যায় তাকে।
২ মে শনিবার দুপুরে পাইলটকে মাঠে পানি দিতে দেখা যায়। তিনি বলেন, খেলাধুলা সব বন্ধ। ঢাকাও যাচ্ছি না। কিন্তু বাসায় বসে থেকে অলস হয়ে যাচ্ছি। তাই মাঠে এসে বিভিন্ন কাজ করে সময় কাটাই।
আসরের নামাজটাও হয় এখানে। বাসায় গিয়ে ইফতার করি। আবার সকালে আসি।
পাইলটের খেলাধুলার সাথে সখ্যতা পারিবারিক ভাবেই। তার বাবা এবং চাচারা সবাই ফুটবল খেলতেন। বাবা শামসুল ইসলাম ঢাকা লিগেই খেলেছেন ২০ বছর। পূর্ব পাকিস্তানের হয়ে সেই সময় জাতীয় দলেও সুযোগ পেয়েছিলেন। তাই ফুটবলই ছিল পাইলটের ভালোবাসা।
কিন্তু ১৯৮৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময় রাজশাহীর জেলখানা মাঠে মিঠু স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে রাজশাহী স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়ে গেলেন ক্লাস সেভেনে পড়া পাইলট।
তারপর প্রথম ম্যাচেই করে ফেললেন ফিফটি। সেই টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ স্কোরারও হয়ে যান তিনি। তারপর ক্রিকেট শুরু। অল্পদিনেই নাম-ডাক ছড়িয়ে পড়লো সবজায়গায়। এর পরপরই ঢাকা থেকে তার ডাক আসে।
শুরুটা ওয়ারির হয়ে হলেও পরবর্তীতে কলাবাগানের হয়ে তিন বছর খেলেন। এরপর আবাহনী-মোহামেডানের হয়েও মাঠ মাতিয়েছেন।
জাতীয় দলের হয়ে প্রথম সুযোগ মেলে অনূর্ধ্ব-১৯ এর হয়ে ১৯৯৩ সালে। পরের বছরেই সফরে আসা ইংল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে সেঞ্চুরি তাকে মূল দলে জায়গা পাইয়ে দেয়।
১৯৯৫ সালের শারজাহ কাপেই ওয়ানডেতে অভিষেক হয়ে যায়। এরপর তো বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি স্মরণীয় কাজেরই অংশ হয়ে গিয়েছিলেন পাইলট।
নিজের ক্যারিয়ারে ৪৪টি টেস্টে একটি সেঞ্চুরি ও তিনটি হাফ সেঞ্চুরিতে ১ হাজার ৪০৯ রান করেন পাইলট। আর ১২৬টি ওয়ানডে ম্যাচে ৭টি হাফ সেঞ্চুরিতে ১ হাজার ৮১৮ রান করেন।
ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর নিলেও কোচিংয়ের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন এ তারকা ক্রিকেটার।
সান নিউজ/সালি