ক্রীড়া ডেস্ক : আজ ২ জুলাই বিশ্ব ক্রীড়া সাংবাদিক দিবস। বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি উদযাপিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থার (এআইপিএস) অনুমোদিত সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) দিবসটি পালন করেছে।
১৯২৪ সালের আজকের দিনে ফ্রান্সের প্যারিসে ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (এআইপিএস) এর আত্মপ্রকাশ ঘটে। এরই মধ্যে এআইপিএসের ব্যাপ্তি বেড়েছে অনেক। বর্তমানে এর পতাকাতলে সমবেত দেশের সংখ্যা ১৬৭। বাংলাদেশে এআইপিএসের একমাত্র স্বীকৃত সংস্থা হচ্ছে ‘বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতি’।
আধুনিক বিশ্বে ক্রীড়া সাংবাদিকতা এখন নতুন মাত্রা পেয়েছে। ফলে যতই দিন যাচ্ছে ততই বাড়ছে ক্রীড়া সাংবাদিকতার গুরুত্ব, পাশাপাশি বাড়ছে এ পেশার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সামাজিক ও বৈষয়িক মর্যাদা। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমানে বাংলাদেশ) ক্রীড়াঙ্গনের ক্ষেত্র অনেকটা সীমিত থাকায় ক্রীড়া সাংবাদিকতার পরিধিও সীমিত ছিল। তবে বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত কিছু সাফল্যে এ অঞ্চলের মানুষ ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে আলাদা করে ভাবার উপলক্ষ পেয়ে যায়। এরমধ্যে রয়েছে ১৯৫৮ সালে ব্রজেন দাসের ইংলিশ চ্যানেল জয়, নুরুন্নবী চৌধুরির পাকিস্তান জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক হওয়া, ১৯৫৯ সালে আগাখান গোল্ডকাপে ঢাকা মোহামেডানের শিরোপা জয় ইত্যাদি।
ফলে তখনকার প্রকাশিত বিভিন্ন দৈনিক ও সাপ্তাহিকের পাতায় কিছুটা হলেও খেলার খবর প্রকাশ পেত। খেলাধুলার সংবাদের জন্য আলাদা কোন ডেস্ক কিংবা রিপোর্টার ছিল না। অন্য খবরের পাশাপশি আগ্রহীদের দিয়েই এ সংক্রান্ত খবর সংগ্রহ ও প্রকাশের ব্যবস্থা হত। এরই অংশ হিসেবে ১৯৬২ সালে গঠিত হয় ‘পূর্ব পকিস্তান ক্রীড়ালেখক সমিতি’। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে জন্ম নেয় ‘বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতি’।
নতুন দেশে অন্যসব কিছুর মতো ক্রমেই বিকশিত হয় সংবাদ মাধ্যম ও ক্রীড়াঙ্গন। তবে নব্বইয়ের দশকে পাশাপাশি মিডিয়া এবং খেলাধুলা দুই ক্ষেত্রেই ব্যাপক বিপ্লব ঘটে। এখন বেশিরভাগ দৈনিক পত্রিকায় খেলাধুলার সংবাদের জন্য পূর্ণপৃষ্ঠা বরাদ্ধ থাকে। কোথাও কোথাও একাধিক পৃষ্ঠা বরাদ্দ থাকে। টিভি চ্যানেলগুলোর কল্যাণে ক্রীড়া সাংবাদিকতা পেয়েছে নতুন মাত্রা। বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতিও তার দৃষ্টি দেয় দেশের বাইরে।
১৯৯২ সালে সমিতির সে সময়ের যুগ্ম সম্পাদক কাজী আলম বাবুর প্রচেষ্টায় সমিতি এশিয়ান স্পোর্টস প্রেস ইউনিয়ন (আসপু এআইপিএস এশিয়া) এর সদস্য পদ লাভ করে। এরই ধারাবাহিকতায় পরের বছর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে এঅইপিএস এর ৫৬তম কংগ্রেসে অংশ নিয়ে তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হোসেন খান দুলাল সমিতির কার্যক্রম বিস্তৃত করেন বিশ্বদরবারে; সমিতি পায় বহু কাঙ্ক্ষিত এআইপিএস এর সদস্যপদ। ২০১২ সালে সমিতি তার প্রতিষ্ঠার সূবর্ণজয়ন্তী (৫০বছর) উৎসব করেছে বর্ণাঢ্য আয়োজনে। সমিতির মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্রীড়া সাংবাদিকরাও প্রবেশ করছে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে।
এআইপিএস এর কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ১৯৯৫ সাল থেকেই সমিতি প্রতিবছর নানা আয়োজনের মাধ্যমে পালন করে বিশ্ব ক্রীড়া সাংবাদিক দিবস। প্রতি বছরই সন্মাননা জানানো হয় দেশের বরেণ্য ক্রীড়া সাংবাদিক ও লেখকদের। এর ফলে অনেকটা আড়ালে চলে যাওয়া অগ্রজদের আজকের প্রজন্মের সঙ্গে পরিচয়ের সুযোগ ঘটে।
সান নিউজ/এসএম