ক্রীড়া প্রতিবেদক : সকালের করোনা নাটকীয়তা শেষে যথাসময়ে মাঠে গড়ায় বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা প্রথম ওয়ানডে। টস জিতে আগে ব্যাট করা বাংলাদেশ আবারও সিনিয়রদের ব্যাটে ভর করে পেল লড়াইয়ের পুঁজি। অধিনায়ক তামিম ইকবালের সাথে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ফিফটিতে টাইগারদের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২৫৭ রান।
মিরপুরের উইকেটে এদিন খুব একটা স্পিন না ধরলেও স্পিনারদেরই উইকেট দিয়েছেন বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানরা। লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকলেও লঙ্কানদের হয়ে সাফল্য পেয়েছেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, ধানুশকা গুনাথিলাকা, লাকশান সান্দাকানরা।
বাংলাদেশের হয়ে ইনিংসের শুরুতে হাল ধরা তামিম করেছেন ৫২ রান। পরে ইনিংস মেরামত করা দুই ব্যাটসম্যান মুশফিক ও মাহমুদউল্লার ব্যাট থেকে আসে যথাক্রমে ৮৪ ও ৫৪ রান।
বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি টেকেনি ৯ বলের বেশি। দুশমান্থ চামিরার করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে লিটন দাস ফিরেছেন আরেক দফা ব্যর্থ হয়ে। অফ স্টাম্পের বাইরে স্লট জোনে কিছুটা লাফিয়ে উঠা বলে প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে ক্যাচ দেন কোনো রান করার আগেই।
পারিবারিক কারণে নিউজিল্যান্ড সফর ও আইপিএল খেলতে ছুটি নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট না খেলা সাকিব আল হাসান ফিরেই দারূন কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তবে সাকিবও তার ভালো শুরুকে টেনে নিতে পারেননি বেশিক্ষণ। ইনিংসের ১৩তম ওভারে গুনাথিলাকার অফ স্পিনে অনেকটা ক্যাচ অনুশীলন করিয়ে ফিরেছেন ৩৪ বলে ১৩ রান করে। ডাউন দ্য উইকেটে এসে উড়িয়ে মারার চেষ্টা করলেও শটে ছিলনা জোর, লং অনে সহজ ক্যাচ লুফে নেন পাথুম নিসাঙ্কা।
সাকিবের বিদায়ে ভাঙে তামিমের সাথে ৩৮ রানের জুটি। সাকিব ফিরলেও দলের হাল ধরা ইনিংস টেনে নেন অধিনায়ক তামিম। তৃতীয় উইকেট জুটিতে মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে যোগ করেন ৫৬ রান।
৬৬ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৫১তম ওয়ানডে ফিফটি। তবে ফিফটির পর বেশিক্ষণ টিকেননি, ধনঞ্জয়া ডি সিলভার করা ২৩ তম ওভারের পঞ্চম বলে ফিরেছেন এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে। ৭০ বলে ৬ চার ১ ছক্কায় তার ব্যাট থেকে আসে ৫২ রান। রিভিউ নিয়েও অবশ্য বাঁচতে পারেননি।
প্রথম ওভারের শেষ বলে চার মেরে ব্যক্তিগত রানের খাতা খোলা তামিম প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তিন ফরম্যাট মিলে ১৪ হাজার রানের ক্লাবে প্রবেশ করেন। আজ মাঠে নামার আগে তার রান ছিল ১৩৯৯৮।
তামিমের পর একই ওভারে ফিরেছেন মোহাম্মদ মিঠুনও। ধনঞ্জয়ার বলে মিঠুনও (০) কোনো রান না করে গোল্ডেন ডাকে ফিরলে হ্যাটট্রিক সম্ভাবনা জাগে।। যদিও নিজের করা পরের ওভারের প্রথম বলে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি লঙ্কান অফ স্পিনার। স্কুপ খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়া মিঠুনও রিভিউ নেয় তবে তা বিফলে যায়। বাংলাদেশ টানা দুইটি রিভিউ হারায়। মিঠুনের বিদায়ে ৪ উইকেটে ৯৯ রানে পরিণত হয় বাংলাদেশ।
সেখান থেকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে ১০৯ রানের জুটি মুশফিকের। জুটি গড়ার পথে মুশফিক ক্যারিয়ারের ৪০তম ওয়ানডে ফিফটিতে পৌঁছান ৩২ তম ওভারে ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে চার মেরে। ৫২ বলে ২ চার ১ ছক্কায় ফিফটি তুলে নেয়া মুশফিক হাঁটছিলেন সেঞ্চুরির দিকেই। কিন্তু ৪৪তম ওভারে গিয়ে চায়নাম্যান লাকশান সান্দাকানকে রিভার্স সুপ খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন। থার্ড ম্যান অঞ্চলে ধরা পড়েন ইসুরু উদানার হাতে, ফিরেছেন সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১৬ রান দূরে থেকে। ৮৭ বলে ৪ চার ১ ছক্কায় ৮৪ রানের ইনিংসটি সাজান মিস্টার ডিপেন্ডেবল।
মুশফিকের পর ফিফটি তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। ক্যারিয়ারের ২৪তম ফিফটিতে পৌঁছেছেন ৬৯ বলে। ইয়র্কার লেংথের বলে বোল্ড হয়ে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার তৃতীয় শিকার হন মাহমুদউল্লাহ। ফিরেছেন ৭৬ বলে ৫৪ রান করে। ৪০ ওভারে ১৯৩ রান তোলা বাংলাদেশ শেষ ১০ ওভারে তুলতে পেরেছে মাত্র ৬৪ রান। শেষ পর্যন্ত আফিফ অপরাজিত ছিলেন ২২ বলে ২৭ রানে। ৯ বলে ১৩ রানে অপরাজিত ছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (১ম ইনিংস শেষে) :
বাংলাদেশ ২৫৭/৬ (৫০), তামিম ৫২, লিটন ০, সাকিব ১৫, মুশফিক ৮৪, মিঠুন ০, মাহমুদউল্লাহ ৫৪, আফিফ ২৭*, সাইফউদ্দিন ১৩*;
চামিরা ৮-০-৩৯-১, ধনঞ্জয়া ১০-০-৪৫-৩, গুনাথিলাকা ২-০-৫-১, সান্দাকান ১০-০-৫৫-১।
সান নিউজ/এম