স্পোর্টস ডেস্ক: ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে সোচ্চার বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গন। শবেকদরের পবিত্র রাতে আল-আকসা মসজিদে আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছেন মুসলিম ফুটবলাররা।
লিভারপুলের মিসরীয় ফুটবলার মোহাম্মদ সালাহ ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনসহ বিশ্বনেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন ইসরায়েলি নির্যাতন বন্ধের ব্যাপারে এগিয়ে আসতে। তা ছাড়া রিয়াদ মাহারেজ, সাদিও মানে, চিলিয়ান ক্লাব দেপোর্তিভো ফিলিস্তিনো পাশে দাঁড়িয়েছে ফিলিস্তিনের।
ঝরছে প্রাণ, পুড়ছে ফিলিস্তিন। অস্তিত্বের লড়াইয়ে গৃহহীন হচ্ছে শত শত মানুষ। বোমা, বারুদ আর বুলেটের আঘাতে রক্তাক্ত হচ্ছে মুসলিমদের পবিত্র আল আকসা মসজিদ। প্রাণ বাঁচাতে কেউ কেউ অবস্থান নিচ্ছেন মাটির নিচে।
বর্বরতাকে হার মানানো এমন হামলার নিন্দায় মুসলিম বিশ্ব। বড় আক্ষেপের ব্যাপার আরব বিশ্বের নীরবতা। তবে ক্রীড়াঙ্গন মাতিয়ে বেড়ানো তারকারা শামিল এই প্রতিবাদ মিছিলে।
নিজ দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিবাদ না জানালেও, ফিলিস্তিনি মুসলিমদের ওপর অমানবিক নির্যাতন ছুঁয়ে গেছে মিসরীয় ফুটবলার মোহাম্মদ সালাহকে। হামলার নিন্দা সরব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। আল-আকসা মসজিদের সামনে একটি ছবি পোস্ট করে টুইট করেছেন।
এরপরই ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে লক্ষ্য করে লিখেন, ফিলিস্তিনে বর্বরতা বন্ধে এগিয়ে আসুন। সেই সঙ্গে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানান ইসরায়েলি হামলা বন্ধের ব্যাপারে এগিয়ে আসতে।
হৃদয়ে যাদের ফিলিস্তিন ফুটবল অঙ্গন থেকে সবার আগে প্রতিবাদ তো তারাই করবেন। চিলির পেশাদার ক্লাব দেপোর্তিভো ফিলিস্তিনো। ১৯২০ সালে ফিলিস্তিনি অভিবাসীদের নিয়ে জন্মে ছিল ক্লাবটি। তাইতো মাতৃভূমির এই দুঃসময়ে সরব তারাও। ইসরায়েলি নৃশংসতার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পড়ে মাঠে নেমেছেন ক্লাবের ফুটবলাররা।
মাহে রমজানের অন্যতম পবিত্র রাত্রি শবেকদরে পবিত্র স্থান আল আকসা মসজিদে যখন প্রার্থনারত স্থানীয় ফিলিস্তিনি মুসল্লিরা, তখন নামাজরত বেসামরিক মুসলিমদের ওপর নির্বিচারে হামলা চালায় ইসরায়েলি সৈনিকরা।
মসজিদ প্রাঙ্গণ গত শুক্রবার থেকে রূপ নিয়েছে রণক্ষেত্রে। মূলত, ইসরায়েলের দখল করা এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করাকে কেন্দ্র করে সেখানে উত্তেজনা চলছে। জেরুজালেম লাগোয়া এই এলাকা থেকে ফিলিস্তিনি চারটি পরিবারকে ইসরায়েলি সুপ্রিম কোর্ট উচ্ছেদের আদেশ দিতে যাচ্ছেন—এমন আশঙ্কা থেকে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছিল। আর সেই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে নির্বিচারে হামলা চালায় ইসরায়েলিরা। এখন পর্যন্ত এই সংঘর্ষে আহত আর নিহতের সংখ্যা বাড়ছে হু-হু করে।
প্রতিবাদের মিছিলে নাম লিখিয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটির মুসলিম ফুটবলার রিয়াদ মাহারেজ। হ্যাশট্যাগ ফিলিস্তিন হ্যাশট্যাগ সেইভ শেখ জাররাহ লিখে টুইগারে পোস্ট করেছেন ফিলিস্তিনের পতাকা।
সামনে ঈদ, বিশ্বের উচিত শান্তি আর ভালোবাসার ছড়িয়ে দেয়া। ইনস্টাগ্রামে 'প্রে ফর ফিলিস্তিন' লিখে আওয়াজ তুলেছেন ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা পল পগবা। লিভারপুল তারকা সাদিও মানে লিখেন, 'হৃদয়বিদারক। ফিলিস্তিন মুক্ত হোক।' প্রতিবাদের এই মিছিল চলমান আছে বিশ্বজুড়ে।
কিন্তু মুসলিম ইহুদি লড়াইয়ে যে মানবতার পরাজয় হচ্ছে, লাশ পড়ছে মানব সন্তানের তা কি একটু নাড়া দিচ্ছে বিশ্ব নেতাদের? জেরুজালেম কিংবা ইসরায়েল কি সরে আসবে এমন হত্যাযজ্ঞ থেকে? সেই প্রশ্ন তোলা থাক।
তবে ফিলিস্তিনে লাশের লম্বা মিছিলে লাগাম টানতে হলে বড় ভূমিকা রাখতে হবে মুসলিম বিশ্বকে। সর্বোপরি বিশ্ব নেতাদেরই।
সাননিউজ/এএসএম