নিজস্ব প্রতিবেদক: টেনিস কোর্টে তার এস, ফোরহ্যান্ডের ভরসায় থাকে পুরো ভারত। দেশটির সর্বকালের অন্যতম সেরা টেনিস খেলোয়াড় তিনি। চল্লিশ পেরিয়েও লিয়েন্ডার পেজ তার ভক্তদের নিরাশ করেন না। টেনিস কোর্টে নিজের মতো করে ‘কবিতা’ বানান তিনি। অবশ্য কবিতা যে তার রক্তে! তার পূর্বপুরুষের নাম যে মাইকেল মধুসূদন দত্ত!
সম্পর্কটা খুঁজতে গেলে একটু ইতিহাসের দিকে ফিরে দেখতে হবে। মাদ্রাজে থাকাকালীন, ১৮৪৮ সালে রেবেকা থমসন নামে এক অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানকে বিয়ে করেন মাইকেল। তিনিই প্রথম ভারতীয়, যিনি একজন অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু সেই সম্পর্ক বেশিদিন টেকেনি। ততদিনে এমিলিয়া হেনরিয়েটার সঙ্গে সম্পর্ক শুরু হয়েছে তাঁর। ১৮৫৬ সালে রেবেকা এবং তার চার সন্তানকে মাদ্রাজে রেখেই মধুসূদন ফিরে আসেন কলকাতায়। আর কোনো সম্পর্ক থাকেনি তাদের সঙ্গে। কলকাতায় ফিরে বিয়ে করেন এমিলিয়া হেনরিয়েটাকে। তার সঙ্গেই আমৃত্যু ঘর করেছেন মধু কবি। এমনকি মৃত্যুর পরও, একসঙ্গে শায়িত রয়েছেন তারা।
মাইকেল মধুসূদন-হেনরিয়েটারই তিন সন্তানের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন অ্যালবার্ট নেপোলিয়ন দত্ত। খুব বেশিদিন মা-বাবার সংস্পর্শ পাননি তিনি। দুর্ঘটনায় যখন অ্যালবার্ট মারা যান, তখন তার দুই ছেলে, তিন মেয়ে। সেই ছেলেদেরই একজন মাইকেল ডটন। তার মেয়ে জেনিফার ডটন। পরবর্তীকালে বিবাহসূত্রে যিনি হয়েছিলেন জেনিফার পেজ। এরই পুত্র লিয়েন্ডার পেজ। অবশ্য জেনিফারের নিজস্ব একটি পরিচয়ও আছে। ভারতের বাস্কেটবলের জাতীয় দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন তিনি। অলিম্পিকেও অংশ নিয়েছিলেন। আর তারই পূর্বপুরুষ, মধুসূদন দত্তের সঙ্গে একদম সরাসরি রক্তের সম্পর্কে আবদ্ধ ভারতীয় টেনিস জগতের মহাতারকা লিয়েন্ডার পেজ।
এই খবর শুনে স্বয়ং লিয়েন্ডারের কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল, জানা যায় না। হয়তো খুব একটা বিচলিতও হননি। কিন্তু বাঙালি এই সম্পর্ক খুঁজে পেয়ে নিশ্চয়ই আপ্লুত হয়েছে খুব। হাজার হোক, মধু কবি যে বাংলার একান্ত আপন!
সান নিউজ/টিএস/আরআই