ক্রীড়া প্রতিবেদক : ম্যাচের শুরুতেই সাজঘরে ফিরে যান তামিম ইকবাল। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার কাজটা দারুণভাবেই করছিলেন সাদমান ইসলাম ও নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু তাদের মধ্যকার এক ভুল বোঝাবুঝিতে বড় হয়নি এ জুটি। যার ফলে দিনের প্রথম সেশনে একক আধিপত্যও পায়নি বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের সমানে থেকেই মধ্যাহ্ন বিরতিতে গিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
টেস্টের বন্দর নগরী চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচের প্রথম দিনের প্রথম সেশন শেষে বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৬৭ রান। সাজঘরে ফিরে গেছেন তামিম ও শান্ত। একপ্রান্ত আগলে রেখে অপরাজিত আছেন সাদমান, তার সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে জুটি বেঁধেছেন অধিনায়ক মুমিনুল।
ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। ব্যাট করতে নেমে কেমার রোচের করা প্রথম ওভারের প্রথম বলেই কভার দৃষ্টিনন্দ এক চার মারেন সাদমান। শেষবার বাংলাদেশের পক্ষে টেস্ট ম্যাচের প্রথম বলে চার মেরেছিলেন তামিম ইকবাল। ২০১০ সালের ঢাকা টেস্টে স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচ শুরু করেছিলেন তিনি।
শুরুর ইতিবাচকতা সেশনের বাকি সময়েও ধরে রাখেন সাদমান। দ্বিতীয় ওভারে শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বোলিংয়ে দারুণ এক ফ্লিকে মিড উইকেট দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকান ২৫ বছর বয়সী এ বাঁ-হাতি। তার দেখাদেখি তামিমও রানের খাতা খোলেন চারের মারে। রোচের করা ইনিংসের তৃতীয় ওভারে কভার দিয়ে বাউন্ডারিটি হাঁকান দেশসেরা এ ওপেনার।
পরের ওভারে গ্যাব্রিয়েলের লেগস্ট্যাম্পের ওপর করা ডেলিভারির ঠিকানাও সীমানার ওপারে পাঠান তামিম। সে ওভারের পঞ্চম বলে সিঙ্গেল নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় সবার ওপরে ওঠেন তামিম ইকবাল।
তিনি পেছনে ফেলেন ৪৪১৩ রান করা মুশফিকুর রহীমকে। যদিও এরপর আর রান করতে পারেননি তামিম। রোচের অফস্ট্যাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে লাইন মিস করে বোল্ড হন তিনি। আউট হওয়ার আগে করেন ১৫ বলে ৯ রান।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারে মাত্র ২৩ রানের মাথায় সিনিয়র ওপেনারকে হারিয়ে চাপেই পড়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু তা বুঝতে দেননি সাদমান ও নাজমুল শান্ত। উইকেটে গিয়ে শান্তও রানের খাতা খোলেন চারের মারে। অফস্ট্যাম্পের বাইরে ফুল লেন্থ ডেলিভারিতে দৃষ্টিনন্দন ড্রাইভে মিডঅফ দিয়ে সীমানাছাড়া করেন শান্ত। শুরুতেই পাওয়া এ চারের আত্মবিশ্বাস নিজের ব্যাটিংয়ে জারি রাখেন তিনি।
দুই প্রান্তে সমান সাবলীলভাবে খেলতে থাকেন সাদমান ও শান্ত। অফস্পিনার রাহকিম কর্নওয়াল আক্রমণে এসে কয়েকটি ভালো ডেলিভারি করেন, কিন্তু সেগুলোতে আউট হওয়ার মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়নি। বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে ১৮তম ওভারে দলীয় পঞ্চাশ পূরণ করে বাংলাদেশ। ক্যারিবীয় বোলাররা যখন উইকেট নিতে ব্যর্থ, তখন নিজেরাই উইকেট বিলিয়ে দেয়ার পথে হাঁটেন সাদমান-শান্ত।
২৪তম ওভারের প্রথম বলে ফাইন লেগে ঠেলে দ্রুততার সঙ্গে এক রান নেন সাদমান। তিনি দ্বিতীয় রানের জন্য দৌড় শুরু করেন কিন্তু ইচ্ছা ছিল না শান্তর, তিনি দাঁড়িয়ে থাকেন ক্রিজেই। কিন্তু সাদমান যখন কাছাকাছি পৌঁছে যান, তখন নিজের উইকেটটি স্যাক্রিফাইস করেন শান্ত। ফলে সম্ভাবনাময় জুটিটি ভাঙে মাত্র ৪৩ রানে। শান্তর ব্যাট থেকে আসে ৩ চারের মারে ৫৮ বলে ২৫ রান।
সেশনের পাঁচ ওভার বাকি থাকতে উইকেটে আসেন অধিনায়ক মুমিনুল। তার বিপক্ষে শর্ট বলের পশরা সাজান গ্যাব্রিয়েল। এর মধ্যে ২৮তম ওভারের তৃতীয় বলে প্রায় আউট হয়েই গেছিলেন মুমিনুল। অল্পের জন্য শর্ট লেগ ফিল্ডারের সামনে পড়ে বল, বেঁচে যান টাইগার অধিনায়ক। পরের ওভারটি নির্বিঘ্নে কাটিয়ে সেশন শেষ করে বাংলাদেশ। সাদমান ৩৩ ও মুমিনুল ২ রান নিয়ে দ্বিতীয় সেশনে খেলতে নামবেন।
সান নিউজ/এসএম