ক্রীড়া প্রতিবেদক : তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে সোমবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নামবে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ম্যাচটা বাংলাদেশ জিতবে না, এমন বাজি ধরার লোক ক্রিকেট দুনিয়ায় কয়জন? প্রথম দুই ম্যাচের চিত্র বলছে; টাইগারদের আরেকটা সহজ জয়, বিশ্বকাপ সুপার লিগে পাক্কা ৩০ পয়েন্ট, হোয়াইটওয়াশ ক্যারিবিয়নরা, এর বাইরে আর কিছু ভাবার সুযোগ কোথায়?
ভাবনা যা কিছু সেটা তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের সেরা একাদশ নিয়ে। ২০২৩ বিশ্বকাপের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য যে নতুন শুরুর কথা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড থেকে বলা হচ্ছে, প্রথম দুই ম্যাচে তার প্রয়োগ বলতে নাজমুল শান্তকে ৩ নম্বর পজিশনে ব্যাট করানো, সৌম্য সরকারকে সাতে এবং ফাস্টবোলার হাসান মাহমুদকে খেলানো।
শেষেরটা ছাড়া বাকি দুই সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে আছে আলোচনা-সমালোচনা। শেষ ম্যাচে কোন কোন জায়গায় কিংবা কয়টা পরিবর্তন একাদেশ দেখা যেতে পারে, তার একটা ছবি শনিবারেই পাওয়া গেছে যখন গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্যে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নিজেই বড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছিলেন। তারপরও কি সেরা একাদশে তিন বা চারটা বদল আশা করা যায়? হয়তো না!!
আশা করা যাক না যাক, ভাবা যেতে পারে। মুস্তাফিজকে বিশ্রাম দিয়ে শরিফুল ইসলামকে খেলানো কি অযৌক্তিক মনে হয়? মেহেদী মিরাজের জায়গায় মেহেদি হাসান, সুযোগতো তিনি পেতেই পারেন! যদি মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন পুরো ফিট থাকেন, তাকে না খেলানোর কোন কারণ কি ব্যাখ্যা করতে পারবে টিম ম্যানেজমেন্ট? সাইফুদ্দিন কেন খেলছেন না, এই প্রশ্ন এখন ভক্তদের মুখে মুখে। যদি খেলেন, কার বদলি? তাসকিন সবশেষ ওয়ানডে খেলেছিলেন ২০১৭ সালে, রুবেলের জায়গায় তাকে খেলানোর ভাবনা কি খুবই দূর্বল চিন্তা? আপনারা কি মনে করেন? যে কয়টা বদলের কথা পড়লেন, সেগুলো আগামীর পথে একটু হলেও এগিয়ে যাবার পদক্ষেপ নয় কি?
যেহেতু ২০২৩ বিশ্বকাপের জন্য ক্রিকেটারদের বাজিয়ে দেখার কথা বলা হচ্ছে, সেখানে একাদশে যথেষ্ট পরিবর্তন না করা বিসিবির বক্তব্যের সাথে ঠিক মেলে না। কেননা, ফেব্রুয়ারি-মার্চে নিউজিল্যান্ড সফর যেখানে ৩টি করে ওয়ানডে আর টি-২০ খেলবে টাইগাররা।
অতি দূর্বল ওয়েস্টইন্ডিজের সাথে ঘরের মাঠে যদি নতুন ক্রিকেটারদের বাজিয়ে না দেখা হয়, তবে কি নিউজিল্যান্ডে গিয়ে তাদের ডেব্যু করানো হবে? ব্ল্যাক ক্যাপদের দেশে সাকিব আল হাসান যাবেন না বলেই শোনা যাচ্ছে। সেই প্রেক্ষিতে নুতনদের বাজিয়ে দেখার দাবী আরও জোরালো মনে পারে, ভাবা যেতেই পারে; ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ থেকেই অন্তত আরো এক বা দুজনকে সুযোগ করে দেয়াই হয়তো যৌক্তিক হতো।
অনেকগুলো প্রশ্ন আছে যেগুলোর সহজ কোন উত্তর মিলছে না। আবার উত্তরগুলো মেলানোর দায়িত্ব ক্রিকেট বোর্ডের, যারা ঠিক সাহসী হতে পারছে না। স্বাভাবিকভাবে শুধূ এটুকু বলা যায়, খর্ব শক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সাথে, ঘরের মাঠে যদি নতুনদের সুযোগ দেয়ার সাহস টিম ম্যানেজমেন্ট না পায়, তাহলে আর কবে পাবে? কাদের বিপক্ষে? কোন কন্ডিশনে?
সিরিজ জয় নিশ্চিত, সম্ভাব্য ৩০ পয়েন্ট পাবার সম্ভাবনাও শতভাগ, তারপরও শেষ ওয়ানডতে যথেষ্ট সংখ্যক নতুনদের সুযোগ না দেয়ার যে ভাবনা, সেটা কোনভাবেই বড় দলের মানসিকতার পরিচয় বহন করে না বরং, তূলনামূলক রক্ষণাত্মক ক্রিকেট মানসিকতার ছবি তুলে ধরে।
সান নিউজ/এম