স্পোর্টস ডেস্ক : জিতলেই বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের ফাইনাল, এমন সমীকরণে মাঠে নেমে জিততে পারেনি দুর্দান্ত ফর্মে থাকা গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। টুর্নামেন্টের প্রথম কোয়ালিফায়ারে তারকা সমৃদ্ধ জেমকন খুলনার বিপক্ষে আজ ৪৭ রানে হেরেছে চট্টগ্রাম।
এই জয়ে সরাসরি ফাইনালে উঠে গেল খুলনা। হারলেও চট্টগ্রামকে বিদায় নিতে হচ্ছে না। কাল দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে বেক্সিমকো ঢাকার মুখোমুখি হবে মোহাম্মদ মিঠুনের দল। ওই ম্যাচে যারা জিতবে তারাই যাবে ফাইনালে।
খুলনা টুর্নামেন্টের সবচেয়ে তারকাবহুল দল। মাহমুদউল্লাহ, সাকিব আল হাসান, ইমরুল কায়েসরা আগে থেকেই ছিলেন। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের তরুণদের চেয়ে বড় ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি সাকিব, মাশরাফি, মাহমুদউল্লাহদের। এই অভিজ্ঞতার কাছেই হারল প্রথম পর্বের আট ম্যাচের সাতটিতেই জেতা গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম।
মাহমুদউল্লাহ আগের ম্যাচগুলোতে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। সাকিব ছিলেন পুরোপুরি নিস্প্রভ। কিন্তু কোয়ালিফায়ারে এসে দুজন ঠিকই জ্বলে উঠলেন একসাথে। খুলনার বড় সংগ্রহে বড় অবদান রেখেছেন দুজন। পরে মাশরাফি বোলিংয়ে অনেকটা একাই কুপকাত করে দিয়েছেন চট্টগ্রামকে।
সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২১০ রানের জবাব দিতে নেমে চট্টগ্রামের ফর্মে থাকা ওপেনার লিটন দাস শুরুটা করেছিলেন বেশ আশাব্যাঞ্জক। কিন্তু অপর প্রান্তে থাকা সৌম্য সরকারকে শূন্য রানে ফিরিয়ে গতিটা ধরে রাখতে দেননি মাশরাফি। কিছুক্ষণ পর ফিরিয়েছেন ১৩ বলে ২৪ রান করা লিটন দাসকেও।
এরপর তরুণ মাহমুদুল হাসান জয়কে নিয়ে দারুণ একটা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন চট্টগ্রামের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন। তৃতীয় উইকেটে ৭৩ রান তোলেন দুজন। কোমড় শক্ত করে যখন একটু আক্রমণাত্মক হতে চেয়েছে চট্টগ্রামকে তখন আবারও ধাক্কা দিয়েছেন মাশরাফি। দলীয় ঠিক ১০০ রানের মাথায় ফেরান ২৭ বলে ৩১ রান করা জয়কে।
এরপর মিঠুনকে আরিফুল হক ও মোসাদ্দেক হোসেনকে সাকিব আল হাসান ফেরালে লড়াইটা সেখানেই একপেশে হয়ে যায়। শেষ দিকে আরও দুই উইকেট নিয়ে নিজের বোলিং ফিগারকে আরও উজ্জল করেছেন মাশরাফি। শেষ পর্যন্ত ২ বল আগে ১৬৩ রানে গুটিয়ে গেছে চট্টগ্রাম। মিঠুন ৩৬ বলে ৩টি করে চার-ছয়ে ৫৩ রান করেছেন। ১০ বলে ১৮ করেছেন শামছুর রহমান।
মাশরাফি চার ওভারে ৩৫ রান খরচায় পাঁচ উইকেট নিয়েছেন। দুটি করে উইকেট পেয়েছেন হাসান মাহমুদ ও আরিফুল হক।
এর আগে খুলনা প্রথমে ব্যাটিং করে ২১০ রানের পাহাড় গড়েছে। ওপেনিংয়ে নেমে শুরু থেকেই দ্রুত রান তুলতে চেয়েছেন অভিজ্ঞ জহুরুল ইসলাম। পরে ব্যাটে ঝড় তোলেন তিন অভিজ্ঞ ইমরুল কায়েস, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও সাকিব আল হাসান।
তরুণ জাকির হোসেনের সঙ্গে জহুরুলের ওপেনিং জুটি ছিল ৭১ রানের। জাকির দশম ওভারের দ্বিতীয় বলে যখন ১৬ রান করে ফিরছিলেন তখন খুলনার রান ৭১। অর্থাৎ পরের ৬৪ বলে ১৩৯ রান তুলেছে খুলনা!
ইমরুল কায়েস তিনে নেমে ১২ বলে ২৫ রান করেন। তারপর মাহমুদউল্লাহ যেভাবে খেলছিলেন মনে হচ্ছিল বড় কোনো রেকর্ড হতে যাচ্ছে! সঞ্জিত সাহার বলে সীমানায় ধরা পড়ার আগে মাত্র ৯ বলে ৩০ রান করেছেন খুলনা অধিনায়ক। চার ২টি, ছক্কা ৩টি। সাকিব ১৫ বল খেলে ২টি করে চার-ছয়ে করেছেন ২৮ রান। আর জহুরুল ইসলাম ৫১ বলে ৫টি চার ৪টি ছয়ে করেছেন ৮০ রান।
২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে এই ২১০ রান তুলেছে খুলনা। চট্টগ্রামের সেরা বোলর মোস্তাফিজুর রহমান ২ উইকেট পেলেও চার ওভারে খরচ করেছেন ৩১ রান।
সান নিউজ/এসএম