ক্রীড়া প্রতিবেদক:
সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ১৬৯ রানে হারিয়ে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়ের নতুন রেকর্ড গড়লো টাইগার বাহিনী। এ জয়ে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার দল।
এদিকে আজকের ম্যাচে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বর্তমান অধিনায়ক মাশরাফী স্পর্শ করলেন এক অসাধারণ মাইলফলক। জিম্বাবুয়ের মুতোম্বোদজিকে আউট করার মাধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে পেশাদার ক্যারিয়ারে ৭০০তম উইকেটের মালিক হন তিনি।
এর আগে লিস্ট এ ক্রিকেটে ৩০৩ ম্যাচে ৪১৯টি উইকেট শিকার করেছেন নড়াইল এক্সপ্রেস। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৫৭ ম্যাচে ১৩৫টি ও টি-টোয়েন্টিতে ১৬৩ ম্যাচে ১৪৬ উইকেট শিকার করেছেন এই পেসার।
শুরুতে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে লিটন দাসের দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে ভর করে ৩২১ রানের বড় সংগ্রহ পায় টাইগাররা। এরপর বোলারদের সমন্বিত আক্রমণে মাত্র ১৫২ রানেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে।
এর আগে মিরপুরে শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২০১৮ সালের ১৯ জানুয়ারি শ্রীলংকাকে ৩২১ রানের টার্গেট দিয়ে ১৬৩ রানের জয় তুলে নিয়েছিল টাইগাররা।
ইনজুরি থেকে ফিরে ৩ উইকেট শিকার করে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিংস্তম্ব ভেঙে দেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। আর ব্যাট হাতে ১২৬ রানের অনবদ্য ইনিংস উপহার দেন লিটন কুমার দাস।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়েকে পাহাড়সম ৩২২ রানের টার্গেট দেয় বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩৯.১ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান তুলে ১৬৯ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে মাঠ ছাড়ে জিম্বাবুয়ে।
জিম্বাবুয়ের ইনিংসের প্রথম ১০ ওভারে ২৮ রান তুলতেই টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে শুরু থেকেই বিপর্যয়ে পড়ে সফরকারিরা। পাচ নম্বরে নামা ব্রেন্ডন টেইলর মাত্র ৮ রান তুলতেই তাইজুলের শিকারে পরিণত হলে ম্যাচ থেকে অনেকটাই ছিটকে যায় জিম্বাবুয়ে। এরপর সদ্য সমাপ্ত অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে ডাক পাওয়া উইসলে মাদেভেরেকের সঙ্গে নিয়ে ৩৫ রানের জুটি গড়েন সিকান্দার রাজা। মিরাজের শিকার হওয়ার আগে ৪৪ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলেন ইয়াং ক্রিকেটার মাদেভেরে।
এরপর মুস্তাফিজের বলে মাহমুদুল্লাহর হাতে ক্যাচ দিয়ে মাত্র ১৮ রানেই সাজঘরে ফিরেন সিকান্দার রাজা। মুতুম্বামি ১৭ রানেই রান আউটের শিকার হলে আর কাউকেই দাঁড়াতে দেয়নি টাইগার বোলাররা।
বল হাতে ৭ ওভারে ২২ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। মেহেদী মিরাজ ও মাশরাফি নেন দুটি করে উইকেট।
এরআগে, ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ধীর গতিতে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের প্রথম আঘাত আসে দলীয় ৬০ রানের মাথায়। ১২.৫ ওভারের মাথায় মতোমব্দজির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তামিম ইকবালকে। আউট হওয়ার আগে ৪৩ বলে ২৪ রান করেন তিনি। পরে নাজমুল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে বড় সংগ্রহের দিকেই এগিয়ে যেতে থাকেন লিটন কুমার দাস। কিন্তু সমালোচিত আউট হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় শান্তকে। লিটন-শান্ত জুটি থেকে আসে ৮০ রান।
শান্তর পর মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে বাংলাদেশ শিবির। কিন্তু লিটনকে খুব বেশি সময় দিতে পারেননি মুশফিক। এরমাঝেই লিটন দাস ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। ১০৫ বলে ব্যক্তিগত ১২৬ রান করলে মাথায় আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন এই উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান।
মিথুন-মাহমুদুল্লাহর ঝড়ো ইনিংস থেকেও আসে ৬৮ রান। এর মাঝেই ক্যারিয়ারের চতুর্থ অর্ধশতক পূর্ণ করেন মোহাম্মদ মিথুন। তবে শেষের দিকে নেমে এই ম্যাচে সাইফউদ্দিন ৩ ছক্কায় মাত্র ১৫ বলে ২৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। মেহেদী হাসান মিরাজ ৪ বলে করেন মাত্র ৭ রান।
জিম্বাবুয়ের হয়ে বল হাতে দুই উইকেট শিকার করেন এমপোফো।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ : ৩২১/৬, ৫০ ওভার
লিটন দাস: ১২৬*
মোহাম্মদ মিথুন :৫০
জিম্বাবুয়ে: ১৫২ অল আউট/ ৩৯.১ ওভার
মাদেভেরে: ৩৫
সাইফউদ্দিন ৩ উইকেট
ফলাফল: বাংলাদেশ ১৬৯ রানে জয়ী
সান নিউজ/সালি