ক্রীড়া ডেস্ক:
যেখানে ৫০ ওভারের ক্রিকেটেই খুব বেশি ২০০ বা এর কাছাকাছি রান করতে পারে না বাংলাদেশের মেয়েরা, সেখানে টি-টোয়েন্টিতেই ১৯০ টার্গেট। এত বড় লক্ষ্য দেখেই ভড়কে যাওয়ার কথা টাইগ্রেসদের। তারওপর আবার প্রতিপক্ষ নারীদের ক্রিকেটে বিশ্বসেরা দল অস্ট্রেলিয়া।
বাংলাদেশের বোলারদের নিজেদের মাঠে পেয়ে ১৮৯ রানের পাহাড় গড়ে টিম অস্ট্রেলিয়া। আদতে তখনই জয়ের স্বপ্ন ম্লান হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের। এরপর সালমা খাতুনদের কাজ ছিল মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কতটা প্রতিরোধ গড়া সম্ভব তার প্রমাণ দেয়া। ক্যানবেরায় কঠিন লক্ষ্যের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি সালমার দল। ৮৬ রানে হেরে ব্যাটিংয়েও করেছে অসহায় আত্মসমর্পণ।‘এ’ গ্রুপে শক্তিশালী সব প্রতিপক্ষের বিপক্ষে নুন্যতম দুটি জয়ের লক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিযোগিতায় নেমেছিলো সালমারা। কিন্তু ভারতের পর অস্ট্রেলিয়ার কাছেও হারের পর স্বপ্ন বোধ হয় অধরাই থাকতে যাচ্ছে তাদের। ২০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার করা ১৮৯ রানের পাহাড় তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ ৯ উইকেট হারিয়ে করেছে ১০৩ রান।
চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া সর্বশেষ প্রতিযোগিতার সেরা, এবার নেমেছে নিজেদের মাঠে। বাংলাদেশের বিপক্ষে সবদিক থেকে এগিয়ে ছিল অস্ট্রেলিয়া। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর চমৎকার বোলিংয়ে সেটিই করে দেখালো মেগ ল্যানিংয়ের দল।
টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় শুরুতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। ২৬ রানে তিন ব্যাটার মুর্শিদা খাতুন, সানজিদা ইসলাম ও শামিমা সুলতানাকে হারিয়ে চাপে পড়া বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিল নিগার সুলতানা ও ফারজানা হকের ব্যাটে। তাতে অবশ্য হারের ব্যবধান কমানোর সম্ভাবনাই ছিল। টেস্ট মেজাজে নিগার ৩২ বলে করেন ১৯ রান।
তবে মানুকা ওভালের ম্যাচে ব্যাট হাতে সবচেয়ে সফল ফারজানা। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ৩৫ বলে ৪ বাউন্ডারিতে তিনি খেলেছেন দলীয় সর্বোচ্চ ৩৬ রানের ইনিংস। এছাড়া রুমানা আহমেদ করেন ১৩ রান।
মেগান শাট ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট, যার দুটি একই ওভারে। ২ উইকেট পেয়েছেন জেস জনাসেন।
এর আগে ব্যাটিংয়েও সালমা খাতুনদের রীতিমতো শাসন করেছে অস্ট্রেলিয়া। দুই ওপেনার অ্যালিসা হিলি ও বেথ মুনির ঝড়ে ২০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রান করে স্বাগতিকেরা। আক্ষরিক অর্থেই বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ে খেলেছেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার। উদ্বোধনী জুটিতে হিলি-মুনি যোগ করেন ১৫১ রান। ১৭ ওভারে এসে বাংলাদেশ পায় ম্যাচের একমাত্র উইকেটটি। শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করা হিলি ফেরেন ৮৩ রান করে। ৫৩ বলের ঝড়ো ইনিংসটি তিনি সাজান ১০ চার ও ৩ ছক্কায়।
আরেক ওপেনার মুনিকে তো আউটই করা যায়নি। ৫৮ বলে ৯ বাউন্ডারিতে তিনি অপরাজিত থাকেন ৮১ রানে। ওয়ান ডাউনে নামা অ্যাশলে গার্ডনার ছিলেন আরও ভয়ংকর। মাত্র ৯ বলে ৩ চারের সঙ্গে ১ ছক্কায় অপরাজিত ২২ রান করে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ নিয়ে যান ১৮৯-তে।
অস্ট্রেলিয়ার একমাত্র উইকেটটি পেয়েছেন অধিনায়ক সালমা । সবচেয়ে খরুচে বোলার খাদিজা-তুল-কুবরা, ২ ওভারে দিয়েছেন ২৯ রান। জাহানারা আলমের ৪ ওভারে ব্যয় ৪০ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া নারী দল: ২০ ওভারে ১৮৯/১ (হিলি ৮৩, মুনি ৮১*, গার্ডনার ২২*; সালমা ১/৩৯)।
বাংলাদেশ নারী দল: ২০ ওভারে ১০৩/৯ (ফারজানা ৩৬, নিগার ১৯, শামিমা ১৩, রুমানা ১৩; শাট ৩/২১, জনাসেন ২/১৭)।
ফল: অস্ট্রেলিয়া নারী দল ৮৬ রানে জয়ী।