ক্রীড়া প্রতিবেদক:
টাইগার মুশফিকুর রহিমের গর্জনে কাপছে বাংলাদেশ। মিরপুরে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি করে দীর্ঘদিনের সতীর্থ তামিম ইকবালকে পেছনে ফেলেছেন ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’। টেস্টে বাংলাদেশের পক্ষে মুশফিকের এখন সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৪১৩ রান। একটু পিছিয়ে তামিম ৪ হাজার ৪০৫ রানে দাঁড়িয়ে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪ হাজার ২১০ রান নিয়ে নেমেছিলেন মুশফিক। তামিমকে ছুঁতে প্রয়োজন ছিল ১৯৫। সিকান্দার রাজার বলে ড্রাইভ করে দুই রান নিয়ে তামিমের পাশে দাঁড়ালেন। পরের ওভারে এইন্সলি এনডিলোভুর বলে সিঙ্গেল নিয়ে বাঁহাতি ওপেনারকে ছাড়িয়ে যান মুশফিক।
নির্ভরতার প্রতীক হিসেবে 'মি. ডিপেন্ডেবল' তকমাটা অনেক আগেই পেয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। গত ৫-৬ বছর ধরে দেশের সেরা ব্যাটসম্যানও তিনি। তার নামের আগে কেনো সেরা ব্যাটসম্যান অথবা মি. ডিপেন্ডেবল তকমাগুলো ব্যবহার করা হয়- তা প্রতিনিয়তই প্রমাণ করে চলেছেন মুশফিক।
মুশফিকুর রহিম সেঞ্চুরি করেছিলেন কাট শটে চার মেরে। ডাবল সেঞ্চুরিও তাই। দুই বারই বোলার ছিলেন এইন্সলি এন্দলোভু। চার মেরেই বাতাসে ঘুষি। হেলমেট, ব্যাট ছেড়ে দুই হাত আকাশে তুলে সৃষ্টি কর্তাকে ধন্যবাদ দেন। এরপর আকাশে চুমু ছুঁড়ে দিয়েই চওড়া হাসি মুখে টেনে আনেন মুশফিক। ড্রেসিং রুমে মুশফিকের সতীর্থরা তখন মুশফিকের সঙ্গে উদ্যাপনে ব্যস্ত। তাদের উদ্দেশ্য করেই মুশফিক দুই হাত দিয়ে এমন ইঙ্গিত করলেন, যেন বাঘ হয়ে গর্জন ছুড়ছেন তিনি!
তার ছবিটিই বলে দেয় তিনি যেই ইনিংসটি খেলেছেন, তার সঙ্গে বাঘের গর্জনের মিল খুব খুঁজে পাওয়া যায়। ৩১৫ বলে ২৮ চারে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। ২৮টি চারের ৯টি খেলেছেন লেগ সাইডে, বাকি ১৫টি খেলেছেন অফ সাইডে। কাট, সুইপ, রিভার্স সুইপ, ড্রাইভ ও কিছু পুল শটে জিম্বাবুয়ের বোলারদের অতিষ্ঠ করে তোলেন মুশফিক। কোনো সুযোগই দেননি এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বশেষ টেস্টও মুশফিক করেছিলেন অপরাজিত ২১৯ রান। এবার আরেকবার একই ভেন্যু মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করলেন আরেকটি ডাবল সেঞ্চুরি।
এর আগে মধ্যাহ্ন বিরতির পর ১৬০ বলে ১৮টি চারে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মুশফিক। বাঁ হাতি স্পিনার এন্দলোভুর বলে কাট শটে চার মেরে পৌঁছে যান সপ্তম টেস্ট সেঞ্চুরিতে। পুরো ইনিংসের ৪০ ভাগ রান এই শট থেকেই এসেছে। সেঞ্চুরির পরেও মুশফিকের উদযাপন ছিল দেখার মতো। হাতের ব্যাটটি সপাটে ঘুরিয়ে স্বভাববিরুদ্ধ উদযাপন করেন তিনি। এরপর ব্যাট উঁচিয়ে ধরেন মুশফিক।