ক্রীড়া ডেস্ক:
বিসিবি একাদশের বিপক্ষে দুদিনের প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম দিন ৭ উইকেটে ২৯১ রান করেছিল জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় দিন বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) আর ব্যাটিংয়েই নামেনি ক্রেগ অরভিনের দল। বিকেএসপিতে এদিন ব্যাট করতে নামেন স্বাগতিকরা। তামিম-আল আমিনের জোড়া সেঞ্চুরিতে ম্যাচটি ড্র হয়েছে।
তানজিদ হাসান তামিম ১২৫ ও অধিনায়ক আল আমিনের ব্যক্তিগত ১০০ রানের সুবাদে ম্যাচটি ড্র হয়। দু’জনেই অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।
যদিও শুরুটা খুব ভালো হয়নি আল আমিনদের। মাত্র ৬৯ রানে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে দিনের শুরুটা দুর্দান্ত করেছিল জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল। তাদের প্রথম দিনের ২৯১ রানের সংগ্রহটাকে বিসিবি একাদশের কাছে পাহাড়সম মনে হচ্ছিল। এমন নিশ্চিত হারের ম্যাচে দলকে টেনে নিয়ে যান আল আমিন ও জুনিয়র তামিম। তাদের দুইজনের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের ফলে ম্যাচের কর্তৃত্ব নেয় বিসিবি একাদশ।
ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে জিম্বাবুয়ের বোলারদের চরম পরীক্ষা নেয় বিসিবি একাদশের অধিনায়ক আল আমিন জুনিয়র এবং অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতা ব্যাটসম্যান তানজিদ হাসান তামিম। দুজনের জুটিতে আসে ২১৯ রান।
ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং করে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তামিম। তার ১২৫ রানের ইনিংসে ১৪টি চারের পাশাপাশি ছিল ৫টি ছক্কার মারও। আর আল আমিনের ১০০ রানের ইনিংসে ছিল ১৬টি চারের মার।
আক্রমণাত্মক ঢঙে ব্যাটিং শুরু করা তামিম হাফ-সেঞ্চুরিতে পৌঁছেছিলেন মাত্র ৪০ বলে, ২ চার ও ৫টি বিশাল ছক্কার মারে। ফিফটির পরেও ধরে রাখেন সাবলীল ব্যাটিং। সেঞ্চুরি করতে খেলেন মাত্র ৮৬ বল, ১০ বাউন্ডারি ও ৫ ছক্কার মারে পৌঁছে যান ব্যক্তিগত শতকে।
অথচ তামিমকে নামানো হয়েছিল সাত নম্বরে। কিন্তু তার সহজাত ব্যাটিং পজিশন ওপেনিং। নিজের চেনা ব্যাটিং পজিশনে না নেমেও স্বাভাবিক ব্যাটিংয়ের খানিক কৃতিত্ব আল আমিন জুনিয়রকেও দিতে পারেন তামিম।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুইদিনের প্রস্তুতি ম্যাচটিতে নেয়া হয়েছে যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের ৬ ক্রিকেটারকে। এদের মধ্যে রান পাননি অধিনায়ক আকবর আলী, বিশ্বকাপে সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদুল হাসান জয় এবং মিডল অর্ডারে আস্থার প্রতীক শাহাদাত হোসেন দীপু। তবে দারুণ শুরু করেছিলেন একই দলের ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন।
যার ফলে মাত্র ৬৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছিল বিসিবি একাদশ। নিজের চেনা ওপেনিং পজিশন ছেড়ে সাত নম্বরে নামলেও শুরু থেকেই মারমুখী ছিলেন তামিম। বিরতি থেকে ফিরে হাঁকান আরও ৪টি ছক্কা, সঙ্গে ১টি চারের মারে মাত্র ৪০ বলে তুলে নেন ব্যক্তিগত ফিফটি।
ইনিংস সূচনা করতে মোহাম্মদ নাইম শেখের সঙ্গে পাঠানো হয়েছিল পারভেজ ইমনকে। বেশিদূর যেতে পারেননি নাইম। ইনিংসের প্রথম বলে ৪ মেরে শুরু করলেও তিনি আউট হয়ে গেছেন সপ্তম ওভারেই। চার্ল মুম্বার বলে আউট হওয়ার আগে ১৭ বলে ১১ রান করেছেন বাঁহাতি নাইম।
অগ্রজ সঙ্গী আউট হয়ে গেলেও নির্ভীক চিত্তে খেলতে থাকেন ইমন। কিন্তু অপরপ্রান্তে দেখতে থাকেন যুব দলে তার সতীর্থদের আসা যাওয়া। তিন নম্বরে আসেন মাহমুদুল জয়, ফিরে যান ৫ বলে ১ রান। পরে চার নম্বরে নামেন শাহাদাত। তিনি বেশ কিছুক্ষণ উইকেটে থাকলেও ২২ বলে ২ রানের বেশি করতে পারেননি।
মাত্র ৩৯ রানে তিন ব্যাটসম্যান ফিরে চতুর্থ উইকেটে বিসিবি একাদশের অধিনায়ক আলআমিন জুনিয়রের সঙ্গে ২৯ রানের ছোট জুটি গড়েন ওপেনার ইমন। তিনি আউট হন ২৪তম ওভারে। অফস্পিনার আইন্সলে দলুভুর বলে ক্যাচ দেন ভিক্টর নিয়ুচির হাতে। খেলেন ৪ চার ও ১ ছয়ের মারে ৩৪ রানের ইনিংস।
এরপর উইকেটে আসেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক আকবর। তার স্থায়িত্বকাল হয় মাত্র পাঁচ বল। এর মধ্যে নিজে ৩ বল খেলে ১ রান করতে সক্ষম হন। যুবা অধিনায়কের বিদায়ের পর আসেন সেই দলের ওপেনার তানজিদ তামিম।
এর আগে, প্রথম দিনে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত সূচনা করেছিল জিম্বাবুয়ে। ১০৫ রানে পরে তাদের প্রথম উইকেট। কিন্তু শাহাদাত ও আল আমিনের বোলিংয়ের তোপের মুখে ১৪৬ রানেই হারায় ৫ উইকেট। কিন্তু অষ্টম জুটি থেকে আসা ৬৫ রানের বিনিময়ে ২৯১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে জিম্বাবুয়ে। বল হাতে ৮ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে শাহাদাত হোসেনের শিকার হয় ৩ উইকেট। অধিনায়ক আল আমিন নেন ২টি উইকেট।