স্পোর্টস ডেস্ক :
রাজস্থানের মাথাভারী টপ অর্ডার ব্যাটিংটা জ্বলে উঠতে পারছে না। কিন্তু বুধবার পুরোপুরিই জ্বলে ওঠার লক্ষণ দেখিয়েছিল। ১৬২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় জস বাটলার ও বেন স্টোকসের ওপেনিং জুটিতে প্রথম ৩ ওভারেই আসে ৩৭ রান। ইনিংসের মাঝামাঝি ছুটেছিল প্রচণ্ড দাপটে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অসাধারণ বোলিং দিয়ে ১৩ রানে ম্যাচ জিতে নিলো দিল্লি ক্যাপিটালস। দুবাইতে বুধবারের এই জয় ১২ পয়েন্ট পাওয়া দলটিকে তুললো পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে।
ওপেনার শিখর ধাওয়ান টানা দ্বিতীয় ফিফটি করেছেন। ৩৩ বলে ৫৭ করে আউট হয়েছেন শ্রেয়াস গোপালের লেগ স্পিনে। অধিনায়ক শ্রেয়াস আয়ার ৪৩ বলে কার্তিক ত্যাগীকে ক্যাচ দেওয়ার আগে করেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৩ রান। ম্যাচের প্রথম বলেই বোল্ড পৃথ্বী শ, স্কোরবোর্ড ১০ রান উঠতেই রাহানেকেও ফিরিয়ে দিয়ে জফরা আর্চার দিল্লিকে ফেলেছিলেন বড় বিপদে। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে তৃতীয় উইকেটে ৮৫ রান যোগ করেন ধাওয়ান-আইয়ার। এই জুটিটাই ছিল ১৬১ রানে পৌঁছানোর ভিত্তি। কিন্তু ম্যান অব দ্য ম্যাচ হলেন কিনা আনরিখ নর্কিয়া!
তার ১৪৮ কিলোমিটার গতির প্রথম বলেই ছক্কা মেরেছিলেন বাটলার। প্রথম ওভারেই দেন ১৬ রান। তুষার দেশপান্ডের বলে থার্ডম্যানে দৃষ্টিকটুভাবে রাহুল তেওয়াতিয়ার ক্যাচ ছেড়েছেন শূন্য রানে। চার ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ২ উইকেট। অথচ উল্টোদিকের আর্চার চার ওভারে ১৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। তবু দক্ষিণ আফ্রিকান ফাস্ট বোলার নর্কিয়া ম্যাচের সেরা, কারণ তার অসাধারণ গতিসমৃদ্ধ বোলিং। ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করেছেন নিয়মিতই। সর্বোচ্চ ১৫৬.২ কিমি গতিতে একটা বল করেছেন, ১৩ বছরের আইপিএলে যা সর্বোচ্চ গতির বল। ওটা থেকেও চার মেরে ১৫৫.১ কিমি গতির পরের বলটিতে বোল্ড ৯ বলে ২২ করা বাটলার। দ্বিতীয় স্পেলে এসে প্রায় ১৫০ কিমি গতির বলে বোল্ড করেছেন রবিন উথাপ্পাকে। ২৬ বলে ৩২ করে উথাপ্পা তখন ম্যাচ কেড়ে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছিলেন।
নর্কিয়া গতিময় বোলিংয়ে কাঁপিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তার সঙ্গে কাগিসো রাবাদা কিংবা অভিষিক্ত তরুণ পেসার দেশপান্ডে মিলে যে ডেথ বোলিং করেছেন তা অনন্য। এমন চলতে থাকলে চিরকালের অনর্জনের মরা আলোয় চুপসে থাকা দিল্লি কিছু করে দেখাতেই পারে। এমন চাপের ম্যাচে দেশপান্ডে কিনা শেষ ওভারে দেন ৮ রান! ১৪০ কিমির আশেপাশে গতিতে জায়গামতো ফেলা তার ইয়র্কারগুলো খেলতে হিমশিম খান বড় বড় ব্যাটসম্যানরা।
পাওয়ার প্লেতে দিল্লির রান ছিল ২ উইকেটে ৪৭। রাজস্থানের ১ উইকেটে ৫০। ১০ ওভার শেষে দিল্লি ছিল ৭৯/২, রাজস্থান ৮৫/২। স্পষ্টতই এগিয়ে থাকা রাজস্থান ম্যাচ হেরেছে শেষ পাঁচ ওভারে গিয়ে। শেষ ৫ ওভারে তারা তুলেছে ২৫ রান, যেখানে দরকার ছিল ৩৯ । শেষ ৪ ওভারে ৩৭, ৩ ওভারে ২৯, ২ ওভারে ২৫ আর শেষ ওভারে ২২ রানের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তারা থেমেছে ৮ উইকেটে ১৪৮ রানে।
এই আইপিএলের শুরুর দিকে রাজস্থানের ব্র্যান্ড অ্যামব্যাসাডর শেন ওয়ার্ন তাদেরই শিরোপা জয়ের সবচেয়ে বড় সুযোগ দেখছিলেন। অথচ ৮ ম্যাচে পঞ্চম হারে সেই দলটির এখন প্লে-অফে ওঠাটাই প্রশ্নবিদ্ধ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দিল্লি: ২০ ওভারে ১৬১/৭ ( ধাওয়ান ৫৭, আইয়ার ৫৩, স্টয়নিস ১৮, ক্যারি ১৪, আর্চার ৩/১৯, উনাদকাট ২/৩২) ও রাজস্থান: ২০ ওভারে ১৪৮/৮ (স্টোকস ৪১, উথাপ্পা ৩২, স্যামসন ২৫, বাটলার ২২, নর্কিয়া ২/৩৩, দেশপান্ডে ২/৩৭)।