খেলা

সহজ জয়কে কঠিন করে জিতল মাহমুদউল্লাহরা

ক্রীড়া প্রতিবেদক : ৫০ ওভার তথা ৩০০ বলে দরকার মাত্র ১০৪ রান। আরামসেই জেতার কথা ছিল মাহমুদউল্লাহ একাদশের। মাহমুদউল্লাহর দল জিতেছে বটে, কিন্তু কঠিন ভাবে। ইনিংসের শুরুতে ঘাম ছুটে গেছে মাহমুদউল্লাহদের। শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট'স কাপের দ্বিতীয় ম্যাচে তামিম একাদশকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে মাহমুদউল্লাহ একদশ।

মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরুতে নাভিশ্বাস উঠেছিল ১০৩ রানের জবাব দিতে নামা মাহমুদউল্লাহ একাদশের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে নিজের প্রথম বলেই মাহমুদউল্লাহর দলকে ধাক্কা দেন মোস্তাফিজুর রহমান। তরুণ ওপেনার নাঈম শেখকে এলবির ফাঁদে ফেলেন তিনি। পরের ওভারে তিন বলের ব্যবধানে লিটন দাস ও ইমরুল কায়েসকে ফেরান সাইফউদ্দিন। মাহমুদউল্লাহ একাদশের স্কোরকার্ডে তখনও একটা রানও যোগ হয়নি! অর্থাৎ শূন্য রানে তিন উইকেট নাই।

১০৩ রানের ম্যাচটা তাতেই জমে উঠল দারুণভাবে। এরপর দুই অভিজ্ঞ মমিনুল হক সৌরভ ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ নিজে এসে রানের জন্য হাঁসফাঁস করছিলেন। প্রথম পাঁচ ওভারে মাহমুদউল্লাহদের রান ছিল মাত্র ৬! তবে মুমিনুল, রিয়াদ বিপর্যয়ের মধ্যে গিয়ে রান না পেলেও উইকেট আর পতন হতে দেননি।

উইকেটে সেট হতে পেরেছিলেন দুজনই। অবশ্য মুমিনুল হক এর ফয়দা নিতে পারলেও মাহমুদউল্লাহ পারেননি। দলীয় ৩৯ রানের মাথায় ৩৯ বলে ১০ রান করে ফিরেছেন রিয়াদ। অন্যপ্রাপ্তে মুমিনুল অনেকক্ষণ ব্যাটিং করেছেন। তাইজুল ইসলামের বলে সরসারি বোল্ড হওয়ার আগে ৬২ বলে ৬ চারে ৩৯ রান করেছেন টেস্ট দলের অধিনায়ক। এর মধ্যে তরুণ স্পিনার মেহেদি হাসানের এক ওভারেই চার মারলেন ৩টি।

মুমিনুলের এই প্রথমে ধৈর্য ও পরে আগ্রসনের ওপর দাঁড়িয়েই শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা জিতেছে মাহমুদউল্লাহরা। সেট হয়ে দ্রুত রান তুলতে গিয়ে আউট হওয়া মুমিনুলের পর উইকেটে এসে দারুণ একটা ইনিংস খেলেছেন নুরুল হাসান সোহান। যেন মমিনুলের আগ্রসনটা ধরে রাখতে চাইলেন!

৩৮ বলে ৪১ রানে অপরাজিত ছিলেন সোহান। উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের ইনিংসে চারের মার ছিল ৬টি, ছক্কা ১টি। ২৭ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের জন্য ১০৬ রান তুলে ফেলেছে মাহমুদউল্লাহ একাদশ। তামিম একাদশের হয়ে সাইফউদ্দিন ৪ ওভারে ৮ রান খরচায় এবং তাইজুল ইসলাম ৬ ওভারে ২৭ রান খরচায় ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। দারুণ বোলিং করেছেন এক উইকেট পাওয়া মোস্তাফিজুর রহমানও। ৭ ওভারে মাত্র ১৪ রান খরচ করেছেন বাঁহাতি তারকা, তার মধ্যে মেডেন দুটি।

এর আগে তামিম একাদশের ১০৩ রানের গুটিয়ে যাওয়াতে প্রতিপক্ষের বোলিংয়ের যতোটা অবদান তার চেয়ে বেশি ব্যর্থতা তামিমদের ব্যাটিংয়ের। শুরুতেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছে, পরে আর চাপ কাটিয়ে বড় জুটি বা গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলতে পারেননি কেউই। শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে দলটি। তামিমদের বেশিরভাগ ব্যাটসম্যানই আউট হয়েছেন নিজের ভুলে।

দুই তামিম (তামিম ইকবাল, তানজিদ হাসান তামিম) ওপেন করতে নেমেছিলেন তামিম একাদশের। সিনিয়র তামিমের সঙ্গে জুনিয়র তামিমের ওপেন করার বিষয়টি বেশ রোমাঞ্চ ছড়ালো ক্রিকেটাঙ্গনে। কিন্তু মাঠের ক্রিকেটে এই রোমাঞ্চ টিকেছে মাত্র ৯ বল।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে তামিম ইকবালকে এলবির ফাঁদে ফেলেন রুবেল হোসেন। তারপর বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হয়েছে, ৫০ ওভার থেকে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে ৪৭ ওভার হলো। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ একাদশের বোলারদের আগ্রসন থামেনি।

বৃষ্টির পর অবশ্য তরুণ তানজিদ হাসান তামিমকে নিয়ে বেশ ভালোই এগুচ্ছিলেন এনামুল হক বিজয়। রুবেল হোসেন জুটিটা বড় করতে দেননি। দারুণ খেলতে থাকা তানজিদ হাসানের সঙ্গে তিন বলের ব্যবধানে তুলে নেন মোহাম্মদ মিঠুনকেও। তানজিদ ফেরার আগে ১৮ বলে ৩ চারে ২৭ রান করেছেন। মিঠুন ফিরেছেন কোনো রান না করেই। রুবেলের শুরুর থাক্কার পর বলার মতো কোনো জুটিই গড়তে পারেনি তামিম একাদশ।

যাওয়া-আসার মিছিলে নেমেছিলেন দলের বাকি ব্যাটসম্যানরা। মাঝখানে এনামুল হক বিজয় ও পেস অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন আশা দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু সেট হয়েও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি বিজয়। শেষ দিকে দ্রুত রান তুলতে গিয়ে বিদায় সাইফ। ৩৩ বলে ২ চার ১ ছয়ে ২৫ রান করেছেন বিজয়। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরার আগে সাইফের সংগ্রহ ৩১ বলে ১২। এছাড়া দুই অঙ্কের কোটা পেরুতে পেরেছেন কেবল মেহেদি হাসান (২৩ বলে ১৯)। শেষ পর্যন্ত ২৩.১ ওভারে ১০৩ রানে গুটিয়ে যায় তামিম একাদশ।

মাহমুদউল্লাহ একাদশের হয়ে রুবেল হোসেন ৫ ওভার বোলিং করে মাত্র ১৬ রান খরচায় নিয়েছেন তিন উইকেট। তরুণ পেসার সুমন খান ৩ উইকেট নিয়েছেন ৫ ওভারে ৩১ রান খরচায়। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লব।

এমন লো-স্কোরিং ম্যাচ নিশ্চয় খুশি করতে পারবে না অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে টুর্নামেন্ট আয়োজন করা বিসিবিকে! করোনার কারণে ক্রিকেট বন্ধ ছিল ছয় মাস মতো। গত মাসে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরেছেন বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা। তারপর থেকেই দেখা যাচ্ছে ব্যাটসম্যানদের দুর্দশা। দুই দিনের দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে রান পেয়েছেন হাতে গোনা দু-একজন। তিন দলের ওয়ানডে টুর্নামেন্টেও রান পাচ্ছেন না ব্যাটসম্যানরা।

প্রথম ম্যাচের মতো আজ দ্বিতীয় ম্যাচটাও হলো লো-স্কোরিং। ক্রিকেটারদের ফিল্ডিংও দেখাচ্ছে দৃষ্টিকটু। মিস ফিল্ড হচ্ছে অহরহ, সহজ ক্যাচ ছাড়ার ঘটনা দেখা যাচ্ছে হরহামেশা। অনেকদি ক্রিকেটের বাইরে থাকার কারণেই হয়তো!

সান নিউজ/এম/এস

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ওটিটিতে আসছেন করণ জোহর

বিনোদন ডেস্ক: বলিউডের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র পরিচালক করণ জোহর এ...

ইরানে বিস্ফোরণে নিহত ৩০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানে একটি কয়লাখনিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘট...

সড়কে প্রাণ গেল ২ শিশুর 

জেলা প্রতিনিধি: ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় মি...

শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়’র প্রয়াণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের...

রিকশাসহ চালককে পিষে দিলো ট্রাক

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর বড় মসজিদের সামনে ট্...

ইলিশ উপহার হিসেবে যাচ্ছেনা

নোয়াখালী প্রতিনিধি : ভারতে ইলিশ উপহার হিসেবে যাচ্ছেনা বলে জা...

বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ

জেলা প্রতিনিধি : গাজীপুরের টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা...

দিলীপকুমার রায়’র প্রয়াণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের...

যুক্তরাষ্ট্রের পথে প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিত...

আ’লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা

জেলা প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরে নুর আলম ওরফে নুরু টেইলার (৬০) ন...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা