ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
যদিও প্রতিযোগীতা দুটো সমান নয়। কিন্তু দুজনেই রেকর্ড করেছেন দৌড়ে। একজন দৌড়িয়েছেন অলিম্পিকের কার্পেট বিছানো মসৃণ ট্রাকে। আর একজন কর্দমাক্ত পিচ্ছিল রাস্তায় তাও আবার সঙ্গে দুইটি মহিষ নিয়ে। বলছি প্রথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগতির মানব উসাইন বোল্ট এবং ভারতের ‘কাম্বালা জকি’ শ্রীনিবাস গৌড়ার কথা।
দুটি পোষা মহিষ নিয়ে দৌড়ে ১৩ দশমিক ৬২ সেকেন্ডে ১৪২ মিটারের বেশি অতিক্রম করেছেন শ্রীনিবাস। ২৮ বছর বয়সী ওই যুবক কাম্বালার ৩০ বছরের পুরোনো রেকর্ড ভেঙেছেন। এরপর থেকেই বোল্টের সঙ্গে তুলনা চলছে তার। ১০০ মিটার ৯.৫৮ সেকেন্ডে পাড়ি দিয়ে দ্রুততম দৌড়ের রেকর্ড গড়েছিলেন বোল্ট। অঙ্কের হিসেবে শ্রীনিবাস কাম্বালায় ওই দৌড়ে ১০০ মিটার পারি দিয়েছেন ৯.৫৫ সেকেন্ডে, যা ২০০৯ বার্লিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে বোল্টের বিশ্ব রেকর্ড গড়া দৌড়ের চেয়ে ০.০৩ সেকেন্ড দ্রুততম!
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এ নিয়ে টুইট করেছেন ভারতের সংসদ সদস্য শশী থারুর। টুইটে তিনি বলেন, ‘উসাইন বোল্টের চেয়েও দ্রুতগামী? কর্ণাটকের লোকটি মোষ নিয়ে ১০০ মিটার ৯.৫৫ সেকেন্ডে পাড়ি দিয়েছে। ভারতের অ্যাথলেটিকস অ্যাসোসিয়েশনকে বলছি তাকে নিজেদের অধীনে নিয়ে অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন বানাতে। জানি না এমন আরও কত প্রতিভা লুকিয়ে আছে!’
স্থানীয় কাম্বালা একাডেমিতে এ দৌড়ের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন শ্রীনিবাস। তিনি নিজে অবশ্য বোল্টের সঙ্গে তুলনায় নারাজ। শুধু এটুকু বলেছেন, ‘কাম্বালা ভালোবাসি। আমার এ সাফল্যের পেছনে দুটি মোষেরও কৃতিত্ব রয়েছে। তারা খুব দ্রুত দৌড়েছে। আমি অনুসরণ ও পরিচালনা করেছি।’
ভারতের খ্যাতনামা ব্যবসায়িক গ্রুপ ‘মহেন্দ্র’-এর চেয়ারম্যান আনন্দ মহেন্দ্র শ্রীনিবাসকে নিয়ে টুইট করেন, ‘কিরণ রিজিজু হয় তাকে ১০০ মিটার স্প্রিন্টার বানাবে নতুবা কাম্বালা দৌড়টা আমরা অলিম্পিকে দেখতে চাই। শ্রীনিবাসের জন্য আমরা সোনার পদক চাই!’ আনন্দ মহেন্দ্রর টুইট রি-টুইট করে ভারতের মন্ত্রী কিরণ রিজিজু জানান, ‘কর্ণাটকের শ্রীনিবাসকে গৌড়াকে কোচদের মাধ্যমের ট্রায়ালের ব্যবস্থা করা হবে।’
২০১৩ সাল থেকে কাম্বালায় অংশ নিচ্ছেন শ্রীনিবাস। এ পর্যন্ত ২৮টি পদক জিতেছেন। পশুদের ওপর অত্যাচারের জন্য এ দৌড় একবার বন্ধ করার আবেদন উঠেছিল আদালতে। কিন্তু ২০১৬ সালে এ দৌড়ের ছাড়পত্র দেয় ভারতের আদালত।
শ্রীনিবাস গৌড়া ভারতের কর্ণাটকের বাসিন্দা। তিনি কর্নাটকের প্রত্যন্ত গ্রাম মুদাবিদরির ঠিকাশ্রমিক। বাড়ি নির্মাণের কাজ করেন তিনি।