ক্রীড়া ডেস্ক:
রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ২৩৩ রানে। এরপর দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নেমে শেষ সেশন পর্যন্ত পাকিস্তানের স্কোর ৮৭ ওভার ৫ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৪২ রান। ১০৯ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিনের সকাল শুরু করবে তারা।
প্রথমে লিটন দাস আর রুবেল হোসেনের বদান্যতায় আউট হয়েও বেঁচে গিয়েছিলেন শান মাসুদ, তুলে নিয়েছিলেন ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি। তবে সেঞ্চুরির পর আর এক রানও করতে পারেননি তিনি। বাঁহাতি ওপেনারকে সরাসরি বোল্ড করে সাজঘরে পাঠিয়ে দেন বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম।
কিন্তু আরেক ব্যাটসম্যান বাবর আজমের ক্ষেত্রে আর তা হয়নি। শান মাসুদ ৮৬ রানে জীবন পেয়ে ১০০ রানে আউট হলেও, মাত্র ৩ রানে জীবন পাওয়া বাবর আজম তুলে নিয়েছেন সেঞ্চুরি, খেলে যাচ্ছেন দলের লিড বড় করার লক্ষ্যে।
শনিবার দিনের দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই বাবর যখন ৩ রানে খেলছিলেন, তখন লংঅফে তার ক্যাচ ছেড়ে দিয়েছিলেন এবাদত হোসেন। সেই জীবন পাওয়ার পর আর কোনো ভুল করেননি বাবর। বাংলাদেশের বোলার-ফিল্ডারদের ভুগিয়ে খেলে যাচ্ছেন নিজের মতো করে। টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে এগুচ্ছেন ইনিংস বড় করার পথে।
এর আগে পাকিস্তান ইনিংসের প্রথম ওভারে এবাদত হোসেনের হাতে বল তুলে দেন টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হক। ডানহাতি পেসারের ওই ওভারে মাত্র এক রান নিতে পারে স্বাগতিকরা। ওই এক রানও আসে লেগ বাই থেকে।
দ্বিতীয় ওভারে এসেই সাফল্য পান আবু জায়েদ রাহী। ওভারের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে তিনি ফিরিয়ে দেন দুই টেস্টের ক্যারিয়ারে দুই সেঞ্চুরি করা পাকিস্তানি ওপেনার আবিদ আলিকে।
রাহীর বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিটি শরীরের বাইরে খেলতে গিয়ে শূন্য রানে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন আবিদ। চোখের পলকে সেই বল গ্লাভসবন্দী করে নেন উইকেটরক্ষক লিটন দাস। পাকিস্তানের বোর্ডে তখন মাত্র ২ রান।
তবে এমন শুরুর পরও পাকিস্তানকে চেপে ধরতে পারেননি টাইগার বোলাররা। দ্বিতীয় উইকেটে ৯১ রানের বড় জুটি গড়েন আজহার আলি আর হারিস সোহেল। শেষতক এই জুটিটাও ভাঙেন রাহিই।
ইনিংসের ২৩তম ওভারে টাইগার পেসারের দারুণ এক ডেলিভারিতে ব্যাট চালিয়ে স্লিপে ক্যাচ হন পাকিস্তানি অধিনায়ক আজহার। ৫৯ বলে ৪ বাউন্ডারিতে তিনি করেন ৩৪ রান। ২ উইকেটে ৯৫ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় পাকিস্তান।
স্বাগতিকদের ইনিংসের ৪৫তম ওভারে ৮৬ রানে ব্যাট করছিলেন শান মাসুদ। অফস্টাম্পের বেশ বাইরের এক ডেলিভারিতে অলস ভঙ্গিতে ড্রাইভ করতে যান তিনি। কিন্তু সেটি ঠিকভাবে ব্যাটে লাগাতে পারেননি। তবে ব্যাটের বাইরের কানায় লেগেছিল ঠিকই। সেটি আবার একদমই বুঝতে পারেননি রুবেল কিংবা লিটন। দুজনের কেউই আবেদন করেননি। যার ফলে কট বিহাইন্ড হয়েও বেঁচে যান শান।
এই ঘটনার ৮ ওভার পরে রুবেল হোসেন বলেই ফাইন লেগে চালিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে সেঞ্চুরি তুলে নেন বাঁহাতি এ ওপেনার। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি তার তৃতীয় সেঞ্চুরি। পরের ওভারেই তাইজুলের ভেতরে ঢোকা এক ডেলিভারিতে অলসভাবে ডিফেন্স করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান শান। ভেঙে যায় শান-বাবরের ১১২ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।
শান ফিরলেও চা পানের বিরতি পর্যন্ত নিজের উইকেট বাঁচিয়ে রাখেন বাবর। ব্যক্তিগত মাত্র ৩ রানের সময় লংঅফে ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেটি ফেলে দেন এবাদত। জীবন পেয়ে চা পানের বিরতির আগেই বাবর তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১৪তম হাফসেঞ্চুরি। যেটিকে পরে রূপ দেন পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরিতে। বাবর আর আসাদ শফিকের জুটিতেই বড় লিডের পথে ছুটছে স্বাগতিকরা।